ঢাকা ০৫:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এনজিওরা চায় না রোহিঙ্গা নাগরিক নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩০:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০১৯
  • ২২৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাক এটা এনজিওগুলো চায় না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া সারা বিশ্ব চাইলেও মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে আগ্রহী নয় বলে জানান তিনি। রবিবার বিকালে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ত্রিদেশীয় সফর সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে কথা হচ্ছে, কিন্তু কোনো সমাধান হচ্ছে না। রোহিঙ্গা সমাধানে নতুন কোনো চিন্তা আছে কি না সরকারের। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চীন, ভারত সবার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার যেতে হবে। কিন্তু এখন দেখছি যারা ভলান্টিয়ার সার্ভিস দিতে আসছে তারা কোনোদিনই চায় না রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাক। আমরা যখন চুক্তি করলাম তাদের ফিরে যাওয়ার বিষয়ে। হঠাৎ এখানে আন্দোলন করলো তারা যাবে না। এটা কেন? এই সংস্থাগুলোই চায় এরা থেকে যাক। এদের ধারণা বিশাল অংকের টাকা পয়সা আসছে, অনেকে চাকরি বাকরি করছে। আর মিয়ানমারও সমস্যা। তারা নিতে চায় না। তবে আমরা অবশ্যই এ নিয়ে কাজ করছি।’

রোহিঙ্গারা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে  এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমি নির্দেশ দিয়েছি। এখানকার পরিস্থিতি পুলিশ, বিজিবি দেখে। আমি সেখানে ব্যারিকেট দিয়ে দেয়ার জন্য বলেছি। আর ভাসানচরে নেয়ার বিষয়ে কাজ চলছে।’

জাপান সফরে রোহিঙ্গা নিয়ে কথা হয়েছে। সামনে চীনে সফর করবেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জাপানের মতো চীনেও সফল হব। আগামী জুলাই মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট দাওয়াত দিয়েছেন। সামার সামিটেরও দাওয়াত পেয়েছি। দেখি কবে যাওয়া হবে সেটা ঠিক করা হবে। দাওয়াত এত বেশি তাহলে দেশে থাকবো কখন। আর কত যাবো বুড়া হয়ে গেছি না!’

‘রোহিঙ্গার ব্যাপারে সবাই চায় তারা মিয়ানমারে ফিরে যাক। কিন্তু মিয়ানমার তাদের নিতে চায় না। যোগাযোগও আছে তাদের সঙ্গে। কিন্তু এরা আগ্রহী নয়। সবাই মিলে দেখা যাক কী করা সম্ভব হয়। কিন্তু এত লোক রাখা মুশকিল।’

মুসলিম বিশ্বের রক্তপাতে লাভবান অস্ত্র ব্যবসায়ীরা’

‍মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে যুদ্ধ, দ্বন্দ্ব নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘কে ভালো মুসলমান কে ভালো মুসলমান না সেটা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করা বন্ধ করতে হবে। কে ভালো, মন্দ সেটার বিচার আল্লাহ তায়ালা শেষ বিচারে করবেন। কিন্তু কেন তার ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হচ্ছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে রক্তপাত হচ্ছে। কিন্তু লাভবান হচ্ছে অস্ত্র যারা তৈরি করছে, বিক্রি করছে তারাই। ওআইসিকে এটা বন্ধ করতে হবে। আমি সেখানে এই কথা বলেছি। এটা আমি বলে যাবো। জানি এতে সমস্যাও হতে পারে। তারপরও যা সত্য তাই বলবো। আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করি না। আমার বাবাও করেননি।’

বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশেও এমন হয়েছিল। মানুষ মারা যাওয়ার পর বলে এই তো বেহেশতের দিকে এক পা দিয়েছি। এখন তো অনেক ম্যাসেজ আসে। কেউ কি বেহেশত থেকে কোনো ম্যাসেজ দিয়েছে যে, আমরা বেহেশতে সুখ শান্তিতে আছি? এক সময় শুনতাম কওমি মাদ্রাসার ছাত্ররা সন্ত্রাসী কাজ করে। এখন কী দেখি। বাপ মা সব দিয়ে দিয়েছে, উচ্চ শিক্ষিতরাও এ কাজ করছে।’

ধর্মীয় বক্তারা নারীদের বিরুদ্ধে কথা বলেন-এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা দেয়া হয়েছে। সেই ধর্মের লোকেরা কীভাবে নারীদের নিয়ে এসব কথা বলেন। আমি মনে করি নারীরা যত বেশি শিক্ষিত হবে, প্রতিটি জায়গায় নিজেরা অবস্থান তৈরি করতে পারবে সেটাই জবাব। এর থেকে আর বেশি কী!’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

এনজিওরা চায় না রোহিঙ্গা নাগরিক নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাক

আপডেট টাইম : ০৬:৩০:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাক এটা এনজিওগুলো চায় না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া সারা বিশ্ব চাইলেও মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে আগ্রহী নয় বলে জানান তিনি। রবিবার বিকালে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ত্রিদেশীয় সফর সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে কথা হচ্ছে, কিন্তু কোনো সমাধান হচ্ছে না। রোহিঙ্গা সমাধানে নতুন কোনো চিন্তা আছে কি না সরকারের। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চীন, ভারত সবার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার যেতে হবে। কিন্তু এখন দেখছি যারা ভলান্টিয়ার সার্ভিস দিতে আসছে তারা কোনোদিনই চায় না রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাক। আমরা যখন চুক্তি করলাম তাদের ফিরে যাওয়ার বিষয়ে। হঠাৎ এখানে আন্দোলন করলো তারা যাবে না। এটা কেন? এই সংস্থাগুলোই চায় এরা থেকে যাক। এদের ধারণা বিশাল অংকের টাকা পয়সা আসছে, অনেকে চাকরি বাকরি করছে। আর মিয়ানমারও সমস্যা। তারা নিতে চায় না। তবে আমরা অবশ্যই এ নিয়ে কাজ করছি।’

রোহিঙ্গারা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে  এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমি নির্দেশ দিয়েছি। এখানকার পরিস্থিতি পুলিশ, বিজিবি দেখে। আমি সেখানে ব্যারিকেট দিয়ে দেয়ার জন্য বলেছি। আর ভাসানচরে নেয়ার বিষয়ে কাজ চলছে।’

জাপান সফরে রোহিঙ্গা নিয়ে কথা হয়েছে। সামনে চীনে সফর করবেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জাপানের মতো চীনেও সফল হব। আগামী জুলাই মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট দাওয়াত দিয়েছেন। সামার সামিটেরও দাওয়াত পেয়েছি। দেখি কবে যাওয়া হবে সেটা ঠিক করা হবে। দাওয়াত এত বেশি তাহলে দেশে থাকবো কখন। আর কত যাবো বুড়া হয়ে গেছি না!’

‘রোহিঙ্গার ব্যাপারে সবাই চায় তারা মিয়ানমারে ফিরে যাক। কিন্তু মিয়ানমার তাদের নিতে চায় না। যোগাযোগও আছে তাদের সঙ্গে। কিন্তু এরা আগ্রহী নয়। সবাই মিলে দেখা যাক কী করা সম্ভব হয়। কিন্তু এত লোক রাখা মুশকিল।’

মুসলিম বিশ্বের রক্তপাতে লাভবান অস্ত্র ব্যবসায়ীরা’

‍মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে যুদ্ধ, দ্বন্দ্ব নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘কে ভালো মুসলমান কে ভালো মুসলমান না সেটা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করা বন্ধ করতে হবে। কে ভালো, মন্দ সেটার বিচার আল্লাহ তায়ালা শেষ বিচারে করবেন। কিন্তু কেন তার ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হচ্ছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে রক্তপাত হচ্ছে। কিন্তু লাভবান হচ্ছে অস্ত্র যারা তৈরি করছে, বিক্রি করছে তারাই। ওআইসিকে এটা বন্ধ করতে হবে। আমি সেখানে এই কথা বলেছি। এটা আমি বলে যাবো। জানি এতে সমস্যাও হতে পারে। তারপরও যা সত্য তাই বলবো। আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করি না। আমার বাবাও করেননি।’

বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশেও এমন হয়েছিল। মানুষ মারা যাওয়ার পর বলে এই তো বেহেশতের দিকে এক পা দিয়েছি। এখন তো অনেক ম্যাসেজ আসে। কেউ কি বেহেশত থেকে কোনো ম্যাসেজ দিয়েছে যে, আমরা বেহেশতে সুখ শান্তিতে আছি? এক সময় শুনতাম কওমি মাদ্রাসার ছাত্ররা সন্ত্রাসী কাজ করে। এখন কী দেখি। বাপ মা সব দিয়ে দিয়েছে, উচ্চ শিক্ষিতরাও এ কাজ করছে।’

ধর্মীয় বক্তারা নারীদের বিরুদ্ধে কথা বলেন-এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা দেয়া হয়েছে। সেই ধর্মের লোকেরা কীভাবে নারীদের নিয়ে এসব কথা বলেন। আমি মনে করি নারীরা যত বেশি শিক্ষিত হবে, প্রতিটি জায়গায় নিজেরা অবস্থান তৈরি করতে পারবে সেটাই জবাব। এর থেকে আর বেশি কী!’