বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু- ১’ এর নির্মাণ ও উৎক্ষেপণের কাজ চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে শুরু হতে যাচ্ছে।
এ কাজের জন্য আর্থিক ও কারিগরি যাচাই-বাছাইয়ের পর সরকার ইতিমধ্যেই ফরাসি কোম্পানি ‘থ্যালেস এ্যালেনিয়া’কে নির্বাচিত করেছে।
এ ব্যাপারে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, “আমাদের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ উৎক্ষেপন করা হবে।”
তারানা হালিম আরও বলেন, ‘নির্মাণ ও অন্যান্য আনুসঙ্গিক কাজ আগামি ১৬ ডিসেম্বর শুরু হতে যাচ্ছে। যোগাযোগ ও সম্প্রচারের ক্ষেত্রে স্যাটেলাইট প্রস্তুত, উৎক্ষেপন ও পরিচালনার থ্যালস খুবই নির্ভরযোগ্য।’
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সুপারিশ অনুসারে, স্যাটেলাইটটি পরিচালনার জন্য থ্যালেস এ্যালেনিয়াকে মনোনীত করেছে। এমডিএ কর্পোরেশন ২২ কোটি মার্কিণ ডলার সর্বনিম্ম দরপত্র দেয়, কিন্ত থ্যালেস এ্যালেনিয়া অপেক্ষাকৃত ভাল বিচেনায় এটিকে মনোনীত করা হয়। এ কোম্পানিটির প্রস্তাবিত দরপত্রে আর্থিক অঙ্ক ছিল ২৪ দশমিক ৮০ কোটি মার্কিন ডলার।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, রকেটের মাধ্যমে স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপন করা হয়। আর এটি হলে বাংলাদেশ হবে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপনকারি ৫৪তম দেশ।
বাংলাদেশের স্যাটেলাইটটি এ বছরই রাশিয়ার স্যাটেলাইট কোম্পানি ‘ইন্টারস্পুটনিক’- এর কাছ থেকে ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে কেনা হয়। এটির অবস্থান হবে ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। এর ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে, যার মাধ্যমে সার্কভুক্ত দেশসমূহ, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন ছাড়াও তুর্কমেনিস্তান, কিরঘিজিস্তান এবং তাজিকিস্তানের মতো দেশগুলোও স্যাটেলাইট সেবা নিতে পারবে। প্রতিটি ট্রান্সপন্ডার ৩৬ মেগাহার্টজ-এর সমান।
উল্লেখ্য, একনেক ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ২ হাজার ৯৬৭ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্প’ অনুমোদন করে। এই প্রকল্পের আওতায় গাজীপুরের জয়দেবপুরে এবং রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় দুইটি আর্থ-স্টেশন স্থাপন করা হবে।
টেলিভিশন চ্যানেল, টেলিফোন এবং বেতার যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ ব্যয় করে। নিজস্ব স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ উৎক্ষেপণ করা হলে সম্প্রচার বাবদ প্রতিবছর ১১০ থেকে ১২০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
বাসস