হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি বোরো মৌসুমের ধান সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গাড়ি নিয়ে জীবননগরে যাচ্ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস। পথে ক্ষেতে এক নারীকে একা ধান কাটতে দেখে তিনি গাড়ি থেকে নামেন। এর পর ওই নারীর সঙ্গে তিনিও ধান কাটা শুরু করেন।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার পেয়ারাতলা নামক স্থানে কৃষকদের চরম এই দুঃসময়ে স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটতে সহযোগিতার হাত বাড়ান তিনি। এতে খুশি কৃষকরাও।
‘কৃষকরা একা নয় আমরা আছি পাশে’-এই স্লোগান নিয়ে শ্রমিক সংকট দূর করতে প্রান্তিক ও অসহায় কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস।
ধানের মূল্য না থাকাসহ চলতি বোরো মৌসুমে সারা দেশের মতো জীবননগরেও দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। শ্রমিক সংকটের পাশাপাশি মজুরিও বেশি এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দুঃচিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
এমন সংকটময় সময়ে প্রান্তিক কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস।
জানা যায়, সকালে জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খন্দকার ফরহাদ আহমদ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ ইয়াহ্ ইয়া খাঁনকে সঙ্গে নিয়ে চলতি বোরো মৌসুমের ধান সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করার জন্য জীবননগরে যাচ্ছিলেন।
যাবার পথে পেয়ারাতলা নামক স্থানে সড়কের ধারেই একটি ক্ষেতে জেবুনেছা নামে এক নারীর ধান কাটতে দেখে তিনি গাড়ি থেকে নেমে ওই ক্ষেতে ধান কাটতে যান।
খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী হাফিজুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম ঈশা, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকি, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সারমিন আক্তার, ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ঘটনাস্থলে এসে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে পাঁকা ধান স্বেচ্ছায় কেটে দেন।
ওই ধানক্ষেতের মালিক জেবুন্নেছা জানান, তার ১৫ কাঠা জমির ধান পেঁকে যাওয়ার পরও টাকার অভাবে তিনি কামলা নিয়ে ধান কাটতে পারছিলেন না। ফলে আজ তিনি ও তার ছেলে শাহ আলম মিলে ক্ষেতের ধান কাটতে শুরু করেন।
এর পরই জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা তার জমির অবশিষ্ট ধান কেটে দেন।
জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস বলেন, আমরাও কৃষকের সন্তান, কৃষকদের এই দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে নিজেদেরও সৌভাগ্যবান মনে করছি। কৃষকরা সাময়িক শ্রমিক সংকটে পড়েছে হয়তো সেটা কেটে যাবে।
এ ছাড়া ধান সংগ্রহ অভিযান শুরুর মধ্য দিয়ে কৃষকের উৎপাদিত ধানের দাম বাড়ার পাশাপাশি তারা ন্যায্যমূল্য পাবে বলে আশা করছি।