ঢাকা ১১:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকায় শিয়াদের সমাবেশে বোমা হামলায় নিহত ১, আহত ৭৫

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৮:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৫
  • ৩৮৬ বার

আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি চলাচালে শুক্রবার রাত ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে হোসেনী দালান চত্বরে পরপর তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অন্তত একজন নিহত এবং ৭৫ জন আহত হয়েছেন। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চকবাজার থানার ওসি আজিজ আহমেদ জানান, “তাজিয়া মিছিলের জন্য শিয়া মতাবলম্বীরা হোসেনী দালানে সমবেত হলে বিস্ফোরণগুলো ঘটে।” ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান বলেন, “ককটেল জাতীয় হাতে তৈরি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এগুলো বাইরে থেকে ছুড়ে মারা হয়েছে।” হামলায় অন্তত: ৭৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালসহ আশপাশের ক্লিনিকে নেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০/১২ বছরের একটি ছেলের মৃত্যু হয় বলে মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোজাম্মেল হক জানান। তিনি নিহতের পরিচয় জানাতে পারেননি। তবে ঢাকা মেডিকেলে দায়িত্বরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এক সদস্য নিহতের নাম সানজু বলে জানিয়েছেন। ঢাকা মেডিকেলে আহত ৪৪ জনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে পরিদর্শক মোজাম্মেল জানান। এদিকে মিটফোর্ড হাসপাতালে আহত ৩১ জনকে নেওয়া হয় বলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাসুদুর রহমান জানান। তিনি বলেন, “আহতদের মধ্যে কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়। তবে তিন জনের বেশ জখম হয়েছে।” আহতদের অনেকে মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন বলে চকবাজার থানার ওসি জানিয়েছেন। হামলায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে চকবাজার থানার এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসেনের (রা.) শহীদ দিবস আরবি মহররম মাসের ১০ তারিখকে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে পালন করেন শিয়া মতাবলম্বীরা। সপ্তম শতকে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন ইমাম হোসেন। হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে পুলিশ। দিবসটি উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো শনিবার ভোররাতে তাজিয়া মিছিলের জন্য হোসেনী দালানে সমবেত হন শিয়া মতাবলম্বীরা। এ সময় সেখানে ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ ছিলেন বলে ফিরোজ হোসেন নামে তাদের এক নেতা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “মিছিল শুরুর আগে নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা হোসেনী দালানের চারপাশ পরিদর্শন করেন। এর পরপর বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।” বিস্ফোরণের পরে হোসেনী দালান চত্বর থেকে দুটি বোমা উদ্ধার করা হয় বলে র‌্যাবের এক কর্মকর্তা জানান। তিনি বলেন, “নিষ্ক্রিয় করতে রাত সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয় এবং অন্যটি পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে।” হোসেনী দালান ছাড়াও রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মগবাজার ও পল্টন থেকেও তাজিয়া মিছিল বের করেন শিয়া মতাবলম্বীরা। ওই হামলার পর মোহাম্মদপুরে শিয়াদের নিরাপত্তায় বাড়তি পুলিশ-র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে বলে মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ কমিটির সভাপতি রাশেদ হায়দার জানিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকায় শিয়াদের সমাবেশে বোমা হামলায় নিহত ১, আহত ৭৫

আপডেট টাইম : ১১:০৮:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৫

আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি চলাচালে শুক্রবার রাত ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে হোসেনী দালান চত্বরে পরপর তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অন্তত একজন নিহত এবং ৭৫ জন আহত হয়েছেন। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চকবাজার থানার ওসি আজিজ আহমেদ জানান, “তাজিয়া মিছিলের জন্য শিয়া মতাবলম্বীরা হোসেনী দালানে সমবেত হলে বিস্ফোরণগুলো ঘটে।” ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান বলেন, “ককটেল জাতীয় হাতে তৈরি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এগুলো বাইরে থেকে ছুড়ে মারা হয়েছে।” হামলায় অন্তত: ৭৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালসহ আশপাশের ক্লিনিকে নেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০/১২ বছরের একটি ছেলের মৃত্যু হয় বলে মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোজাম্মেল হক জানান। তিনি নিহতের পরিচয় জানাতে পারেননি। তবে ঢাকা মেডিকেলে দায়িত্বরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এক সদস্য নিহতের নাম সানজু বলে জানিয়েছেন। ঢাকা মেডিকেলে আহত ৪৪ জনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে পরিদর্শক মোজাম্মেল জানান। এদিকে মিটফোর্ড হাসপাতালে আহত ৩১ জনকে নেওয়া হয় বলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাসুদুর রহমান জানান। তিনি বলেন, “আহতদের মধ্যে কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়। তবে তিন জনের বেশ জখম হয়েছে।” আহতদের অনেকে মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন বলে চকবাজার থানার ওসি জানিয়েছেন। হামলায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে চকবাজার থানার এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসেনের (রা.) শহীদ দিবস আরবি মহররম মাসের ১০ তারিখকে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে পালন করেন শিয়া মতাবলম্বীরা। সপ্তম শতকে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন ইমাম হোসেন। হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে পুলিশ। দিবসটি উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো শনিবার ভোররাতে তাজিয়া মিছিলের জন্য হোসেনী দালানে সমবেত হন শিয়া মতাবলম্বীরা। এ সময় সেখানে ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ ছিলেন বলে ফিরোজ হোসেন নামে তাদের এক নেতা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “মিছিল শুরুর আগে নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা হোসেনী দালানের চারপাশ পরিদর্শন করেন। এর পরপর বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।” বিস্ফোরণের পরে হোসেনী দালান চত্বর থেকে দুটি বোমা উদ্ধার করা হয় বলে র‌্যাবের এক কর্মকর্তা জানান। তিনি বলেন, “নিষ্ক্রিয় করতে রাত সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয় এবং অন্যটি পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে।” হোসেনী দালান ছাড়াও রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মগবাজার ও পল্টন থেকেও তাজিয়া মিছিল বের করেন শিয়া মতাবলম্বীরা। ওই হামলার পর মোহাম্মদপুরে শিয়াদের নিরাপত্তায় বাড়তি পুলিশ-র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে বলে মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ কমিটির সভাপতি রাশেদ হায়দার জানিয়েছেন।