ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণে সুলাওয়েসি পাহাড়ি অঞ্চল। সেখানে কোন শিশু মারা গেলে তাদেরকে সমাহিত করা হয় জীবন্ত গাছের গুঁড়ির ভেতরে। একটি গাছের গুঁড়ির ভেতরে এভাবে অনেক শিশুকে সমাহিত করা হয়েছে। তাদের ধারণা, গাছের গুঁড়িতে গর্ত করে সেখানে লাশ সমাহিত করা হলে সেই মৃতদেহ প্রকৃতির সঙ্গে মিশে সৃষ্টিকর্তার কাছে চলে যায়। যুগ যুগ ধরে সেখানে এ রীতি পালন করা হচ্ছে। কোন সদ্যজাত শিশু মারা গেলে তাকে প্রথমে পরিষ্কার কাপড়ে জড়িয়ে নেয়া হয়। এরপর জীবন্ত গাছের গুঁড়িতে বড়সড় একটি গর্ত করা হয়। সেই গর্তে ওই মৃতদেহ রেখে দেয় স্থানীয়রা। এরপর গর্তের মুখ বন্ধ করে দেয় বিভিন্ন জিনিস দিয়ে। তবে এক্ষেত্রে তাল গাছের আঁশযুক্ত অংশ দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। রাজধানী থেকে ১৮৬ মাইল উত্তরে পাহাড়ি জনপদ তানা তোরাজা। দুর্গম সেই জনপদের খবর বাইরের দুনিয়া খুব কমই পায়। তবে আধুনিক যোগাযোগের দুনিয়ায় সে খবরও বেরিয়ে আসছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল। এতে বলা হয়েছে, দণ্ডায়মান এক একটি বিশাল গাছ। তার কাণ্ডে বিশাল বিশাল গর্ত। আসলে এগুলো গর্ত নয়, শিশুদের সমাধিক্ষেত্র। এক একটি গাছের কাণ্ডে এভাবে কয়েক ডজন পর্যন্ত শিশুকে সমাহিত করা হয়েছে। সম্প্রতি একটি শিশু মারা গেছে সেখানে। সবেমাত্র তার দাঁত উঠা শুরু হয়েছিল। তাকেও ওই একই রীতিতে সমাহিত করা হয়েছে। যে পরিবারের সদস্য মারা যায় তাদের পূর্বপুরুষের দেহ সমাধি খুঁড়ে উদ্ধার করে। তাদের পোশাক পরিবর্তন করিয়ে দেয়, তাদেরকে স্মরণ করার উদ্দেশে। এরপর মৃত ব্যক্তির অবশিষ্ট অংশ নিয়ে গ্রাম ঘোরায়। এ রীতিকে বলা হয় ‘মানেনে’। মৃত ব্যক্তির প্রতি তাদের সম্মান প্রকাশ করার জন্য প্রতি তিন বছর পর পর এ রীতি পালন করতে হয়। স্থানীয়রা মনে করেন, মৃত ব্যক্তি এখনও ওই পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করেন, যদিও তিনি বা তারা কয়েক শত বছর আগেও মারা গিয়ে থাকেন। সেখানে সমাহিত করার আরও কিছু রীতি আছে। যেমন, মৃত স্বজনকে সমাহিত করে পাহাড়ের গায়ে খোদাই করে সৃষ্ট গুহায়। আর না হয় কফিন ঝুলিয়ে দেয়া হয় পাহাড়ের কোন প্রান্ত থেকে।
সংবাদ শিরোনাম