চ্যানেল আই-সেরাকণ্ঠ প্রতিযোগিতায় অসাধারণ কণ্ঠ আর গায়কিগুণে সংগীত জগতে যাত্রা শুরু রাজশাহীর মেয়ে মৌমিতা তাশরিন নদীর। এরপর থেকে নিয়মিত সংগীত চর্চা করে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু রাজশাহী থাকার কারণে সেরাকণ্ঠের পর পেশাগতভাবে সংগীত শুরু করতে পারেননি। তবে গত দুবছর ধরে ঢাকায় স্থায়ী হয়ে সংগীতে নিয়মিত হয়েছেন এ গ্ল্যামারাস শিল্পী। অল্প সময়ের মধ্যেই গায়িকা হিসেবে বেশ আলোচনায়ও চলে এসেছেন তিনি। তার প্রথম একক অ্যালবামের গানগুলো প্রশংসিত হয়েছে ব্যাপকভাবে। বর্তমানে গান নিয়ে ব্যস্ত এ শিল্পী নিজের ব্যস্ততা, পরিকল্পনা ও গানের নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন আজকের ‘আলাপন’-এ। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ফয়সাল রাব্বিকীন
কি অবস্থা? কেমন চলছে দিনকাল?
ভাল আছি সবার দোয়ায়। পড়াশোনা ও গান করেই সময় চলে যায়। আর আমারও গানের মাঝে থাকতেই ভাল লাগে।
ব্যস্ততা কি নিয়ে?
কোরবানি ঈদে বেশ কিছু প্রজেক্টে কাজ করেছি। এর মধ্যে ‘প্রেমকাব্য’ অ্যালবামে প্রথমবারের মতো শফিক তুহিন ভাইয়ের সঙ্গে একটি দ্বৈত গান গেয়েছি। গানটির নাম ‘রবি ঠাকুরের গান’। অনেক ভাল সাড়া পাচ্ছি এর। এছাড়া স্টেজ শো করছি নিয়মিত। বেশ কিছু টিভি লাইভ রয়েছে সামনে। প্লেব্যাকও করা হচ্ছে। আর নতুন গান রেকর্ডিংও চলছে।
নিজ নামে প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে চলতি বছরের প্রথম দিকে। সাড়া কেমন?
প্রথম অ্যালবামের সাড়া পেয়েছি অনেক। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো আমার অ্যালবামটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সংগীতের অনেক গুণী মানুষ এসে আমাকে আশীর্বাদ করেছেন। এটা আমার জন্য বড় পাওয়া। তাদের প্রায় সবাই আমার গানগুলোর প্রশংসা করেছেন। আমার এ অ্যালবামে বেশ কজন গুণী সংগীত পরিচালক কাজ করেছেন। তাদের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ। যে দুটো গান ভিডিও করেছি, সেগুলোর সাড়াও অনেক ভাল পাচ্ছি।
দ্বিতীয় অ্যালবামের পরিকল্পনা রয়েছে?
প্রথম অ্যালবামকে আমি আরও সময় দিতে চাই। এখান থেকে সামনে হয়তো আরও ভিডিও প্রকাশ করবো। তাই আপাতত আধুনিক গানের অ্যালবাম নিয়ে পরিকল্পনা নেই। তবে অন্য একটি অ্যালবামের কাজ করছি।
কিসের অ্যালবাম?
আমি ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্রসংগীত করি। এখনও সময় সুযোগ পেলেই রবীন্দ্রসংগীত করার চেষ্টা করি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। আমার ভালবাসার জায়গা জুড়ে রয়েছে রবীন্দ্রসংগীত। তাই রবি ঠাকুরের গান নিয়ে একটি অ্যালবাম করছি। এরই মধ্যে পাঁচটি গানের রেকর্ডিং করেছি। এর সংগীতায়োজন করেছেন পাভেল। এ পাঁচ গান নিয়েই একটি অ্যালবাম প্রকাশ করবো।
প্লেব্যাকের কি খবর?
আমি বেছে বেছে প্লেব্যাক করার চেষ্টা করছি। গত কয়েক মাসে বেশ কিছু প্লেব্যাক করেছি। সর্বশেষ টিটু ভাইয়ের সুর-সংগীতে মুহিন ভাইয়ের সঙ্গে একটি প্লেব্যাক করলাম। তবে ছবির নামটা মনে করতে পারছি না।
গানের ক্ষেত্রে পারিবারিক সাপোর্ট কেমন?
শতভাগ সাপোর্ট পাচ্ছি আমার পরিবারের। সবাই আমার গান নিয়ে অনেক সিরিয়াস। তাদের সহযোগিতা ছাড়া আসলে এ পর্যন্ত আসা সম্ভব ছিল না।
এ সময়ের একজন শিল্পী হিসেবে অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন মনে হচ্ছে?
এখন কেউ অ্যালবাম কিনে গান শোনে না। সবাই এখন ইন্টারনেটে গান শুনছে। এটাকে আমার স্বাভাবিক বিষয় মনে হয়। কারণ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই মানুষ অনলাইনে গান শোনে। আমরাও এই ধারায় অভ্যস্ত হচ্ছি। এটা ইতিবাচক দিক। আর আমার কাছে মাধ্যমটা বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হলো বাংলা গান শোনা। বাংলা গানকে ছড়িয়ে দেয়াটা সবচেয়ে বড় ব্যাপার। সেটা যে কোন মাধ্যমেই হতে পারে। আর একজন সংগীতশিল্পী হিসেবে আমার স্বপ্ন বাংলা গানকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া।