ভুতুড়ে পুকুর

রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, অজানা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি, দেশে দেশে কত না নগর রাজধানী- সত্যিই তাই। কত রহস্যে ঘেরা এ পৃথিবী তা ভেবে শেষ করা যায় না।
প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের যেমন শেষ নেই তেমনি শেষ নেই রহস্যময় স্থানের। এই আধুনিক বিজ্ঞানও অনেক সময় এসব অলৌকিক বা অবিশ্বাস্য বিষয়ের ব্যাখ্যা দিতে পারে না।
এ ছাড়া এসব স্থান নিয়ে থাকে প্রচলিত ধারণা, কুসংস্কার এবং বিপুল জনশ্রুতি। এমনি এক রহস্যময় পুকুর আছে জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপের ইরবর শহরে। এ শহরটি ইরবরমধধি নামে একটি নদীর তীরে অবস্থিত। এ নদীর তীরেই খুব অদ্ভুতুড়ে এই পুকুর, যার পানির রঙ অস্বাভাবিক রকমের নীল। অথচ খুব বেশি দিন আগেও এ পুকুরের কথা মানুষ জানত না!
অবাক ব্যাপার হলো, এ নীল পানির পুকুরের উৎপত্তি কিন্তু প্রাকৃতিকভাবে নয়, আবার মানুষও এটার নীল রঙের পানি তৈরি করেনি। এ শহরের কাছেই মাউন্ট তোকাচি নামে একটি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে কাদামাটির বন্যা তৈরি হতো। এ কাদামাটির বন্যা থেকে শহরকে রক্ষা করার প্রচেষ্টা হিসেবে একটি বাঁধ নির্মাণের সময় এ পুকুরটিও খনন করা হয়েছিল।
১৯৮৮ সালে মাউন্ট তোকাচিতে প্রথম অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে, যার ফলে শহরকে রক্ষা করার জন্য এ বাঁধ ও পুকুরটি নির্মাণ করা হয়। তবে পুকুরের পানির রঙ সব সময় কিন্তু একই রকম থাকে না, একেক মওসুমে একেক রকম হয়। এ ছাড়া দর্শক কোন অ্যাঙ্গেল বা কোণে তাকাচ্ছে সেটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিভিন্ন দিক থেকে রঙ পরিবর্তিত হয়।
বিশেষ করে নির্দিষ্ট মাত্রার আলো ও কোণের ভেদাভেদে এ পুকুরের নীল পানিকে সবুজ রঙের দেখা যায়। কিন্তু কেন এ রকম হয় তার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এখন পর্যন্ত নেই। তবে ওখানকার স্থানীয়দের মতে, এই পুকুরের পানিতে অতি উচ্চ মাত্রার অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড আছে।
এ ছাড়া এ পানিতে হয়তো প্রাকৃতিকভাবে এ রকম কোনো খনিজ পদার্থ থাকতে পারে, যা স্বল্প তরঙ্গ দৈর্ঘ্যরে কারণে নীল আলোর প্রতিফলন ঘটতে পারে। কারণ পানির নিজের কোনো বর্ণ নেই!
তবে ঘটনা যা-ই হোক এই পুকুর নিয়ে রহস্যের শেষ নেই।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর