হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আগামী ৩০ তারিখ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে এবং ২ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবে। তবে তিনি মুক্ত হবেন ন্যায় বিচারের দ্বারা, কারো দয়াতে না। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী চালক দলের উদ্যোগে ‘নির্বাচন ব্যর্থ ও প্রশ্নবিদ্ধ হলে গণতন্ত্রের কি হবে?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার প্রতি কোন দয়া চাই না, মুক্তিও চাই না, তার প্রতি সুবিচার চাই। সুবিচার হলেই তিনি মুক্তি পাবেন।’ সরকারের উন্নয়নের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের আমলনামায় কি আছে উন্নয়ন জোয়ার। আর এই উন্নয়ন হলো ইয়াবা উন্নয়ন। বিনা বিচারে হত্যা-গুম-খুনের উন্নয়ন।’ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘জনগণ বোকা না।
সরকারের চোখে ছানি পরেছে, কিন্তু জনগণের চোখ খোলা আছে। উন্নয়ন অবশ্যই হয়েছে কোনো সন্দেহ নাই, আপনার (প্রধানমন্ত্রী) ২০০৮ সালে সম্পদ ছিল ৩ কোটি ১৯ লাখ, আজকে সেটা ৭ কোটি ২২ লাখ, এটা আপনার ঘোষিত হলফনামার কথা। আপনি বলেছেন প্রবৃদ্ধি ১০ পারসেন্ট হবে, বাংলাদেশে আড়াই শত ধনী ব্যক্তি আছে এটাকে আপনি কয়েক হাজারে নিয়ে যাবেন। এই প্রবৃদ্ধিতে কার উন্নয়ন দেখেন? প্রতিটি পরিবারে খোঁজ নিয়ে দেখেন অনেকের বয়স্ক পিতা মাথা বিনা চিকিৎসা ভুগছে। তাকে দেখার লোক নাই।’
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যতোই উন্নয়ন দেখিয়ে নির্বাচনকে কব্জা করার চেষ্টা করেন না কেন আপনাদের সকল পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যাবে।’ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘জনগণ ভোর পাঁচটা থেকে ভোট কেন্দ্রে যাবে। আর আপনাদের দায়িত্ব জনগণকে ভোট কেন্দ্রে পৌঁছানো। কোনো ক্রমেই বলবেন না-নির্বাচনে থাকবো না বা থাকছি না। এই অবাঞ্ছিত প্রশ্ন ভুলে যান।’
তিনি বলেন, ‘আজকে দেশে এতো উন্নয়ন হয়েছে, হাসিনার সম্পদ দিগুণ হয়েছে, খালেদার পারসোনাল আয় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এই তথ্য হাসিনা সরকারের নির্বাচন কমিশনের তথ্য থেকে।’
বিএনপিপন্থি এই বুদ্ধিজীবী বলেন, ‘জয় আমাদের সুনিশ্চিত, এই সরকারের মৃত্যু ঘণ্টা বেজে গেছে, মৃত্যুর নৌকা ডুবে যাচ্ছে ৩০ তারিখে। এক্ষেত্রে আপনাদের একটি মাত্র কাজ ভোট কেন্দ্রে আর ভয় নয়। সব ভয় শেষ হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকারের যারা অপকর্ম করেছেন, আপনাদের বলতে চাই, আপনাদেরকে খালেদা জিয়ার মতো ভুগানো হবে না। আপনাদের জামিন দিয়ে দেয়া হবে।’
সামরিক বাহিনীর উদ্দেশে এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘আপনারা একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠান, আপনারা কোনো দলের ক্যাডার না। পুলিশ ও আমলা দলীত হয়েছে, আপনারা না। আপনারা দেশের নিরাপত্তা দেন, তাই আপনাদের ও অনেক দায়িত্ব রয়েছে।’
সংগঠনের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন কবির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক চীফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।