ঢাকা ০৬:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডুবে যাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:১০:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • ৩৮৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রোপা আমনের মৌসুম শুরুতেই পানির জন্য ছিল হাহাকার। চাই পানি, চাই বৃষ্টি। বেশ অপেক্ষার পর শ্যালো মেশিন দিয়েই পানি নিয়ে বাড়তি পয়সা খরচ করে শুরু করেছিল রোপা আমনের চাষ কিন্তু হায় হানা দিতে শুরু করল পানি। আর তলিয়ে যেতে শুরু করেছে ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। সেই সঙ্গে ডুবতে শুরু করেছে কৃষকের স্বপ্ন। তাদের চোখে এখন অন্ধকার।

শুধু চোখে-মুখে তাদের দুশ্চিন্তার ছাপ। ভাবতে ভাবতেই আর চিন্তায় চিন্তায় চোখের পানি কখন যে চোখেই শুকিয়ে যাচ্ছে তাও যেন বুঝতেও পারছে না তারা। এদিকে কুড়িগ্রামের প্রধান-প্রধান নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তলিয়ে যাচ্ছে চিলমারী উপজেলার নিন্মাঞ্চল। বাড়তে শুরু করেছে দূর্ভোগ। বিশেষ করে চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিন্মাঞ্চল, দ্বীপচর ও নদনদী তীরবর্তী এলাকার মনুষজন। ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি এবং তা অব্যাহত থাকায় তা বিপদ সীমা ছুঁই ছুঁই করছে।

পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বেশ কিছু পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে বীজতলা, রোপা আমন, সবজিসহ কিছু ফসল। এছাড়াও ভাঙ্গনে গৃহহীন হয়েছে শতাধিক পরিবার। চিলমারীর রমনা পাত্রখাতা, মাছাবান্দা, অষ্টমীরচর, নয়ারহাট সহ কয়েকটি এলাকার নিম্নাঞ্চলের বীজতলা ও রোপা আমন, সবজি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ধীরে ধীরে নিন্মাঞ্চল থেকে উঁচু স্থানের জমি গুলো ডুবে যাওয়া শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে লোকালয়েও ঢুকতে শুরু করেছে বন্যার পানি।

নিচে পানি আর উপরে রোদের প্রচন্ড তাপে বিভিন্ন স্থানের আমন ক্ষেত পচতেও শুরু করেছে। পাত্রখাতার কৃষক আঃ রাজ্জাক, আঃ আজিজ, মাছাবান্দার খয়বার, জাহিদুলসহ অনেকে জানান রোপা আমনের মৌসুমের শুরুতে ছিল না কোন পানি। ছিল চারদিকে পানির জন্য হাহাকার, তাই বাধ্য হয়ে শ্যালো মিশিন দিয়ে পানি দিয়ে চাষ শুরু করেছিলাম কিন্তু হঠাতই নদীর পানি অসাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা আশঙ্কা দেখা দেয়ায় রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত ইতি মধ্যে ডুবে যাওয়ায় আমরা চিন্তিত। ভাবতেও পারছি না এখন কি হইবে।

কৃষকরা বলেন, বাবারে একে তো অতিরিক্ত খরচ করে জমি চাষ করেছিলাম তার উপর বন্যার পানি সব নষ্ট করে দিল; এখন কি করমো আগামী দিন গুলোই বা কিভাবে চলবো। এদিকে কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, এবারে রোপা আমানের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ হাজার ৯৮৫ হেষ্টর তা শতভাগও অর্জিত হয়েছে এর মধ্যে ১ হাজার ২৫৭ হেক্টর জমির আমন ক্ষেত পুরো পানিতে ডুবে গেছে। তবে কৃষকরা তা মানতে নারাজ তারা বলেন, অর্জিত জমির বেশির ভাগ ক্ষেত এখন পানির নিচে। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ খালেদুর রহমান কৃষকের সাময়িক সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, যে দু’চারদিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে আশা করি তেমন ক্ষতি হবে না তবে; পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত ক্ষতির পরিমান বলাও যাচ্ছে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ডুবে যাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

আপডেট টাইম : ০৪:১০:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রোপা আমনের মৌসুম শুরুতেই পানির জন্য ছিল হাহাকার। চাই পানি, চাই বৃষ্টি। বেশ অপেক্ষার পর শ্যালো মেশিন দিয়েই পানি নিয়ে বাড়তি পয়সা খরচ করে শুরু করেছিল রোপা আমনের চাষ কিন্তু হায় হানা দিতে শুরু করল পানি। আর তলিয়ে যেতে শুরু করেছে ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। সেই সঙ্গে ডুবতে শুরু করেছে কৃষকের স্বপ্ন। তাদের চোখে এখন অন্ধকার।

শুধু চোখে-মুখে তাদের দুশ্চিন্তার ছাপ। ভাবতে ভাবতেই আর চিন্তায় চিন্তায় চোখের পানি কখন যে চোখেই শুকিয়ে যাচ্ছে তাও যেন বুঝতেও পারছে না তারা। এদিকে কুড়িগ্রামের প্রধান-প্রধান নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তলিয়ে যাচ্ছে চিলমারী উপজেলার নিন্মাঞ্চল। বাড়তে শুরু করেছে দূর্ভোগ। বিশেষ করে চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিন্মাঞ্চল, দ্বীপচর ও নদনদী তীরবর্তী এলাকার মনুষজন। ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি এবং তা অব্যাহত থাকায় তা বিপদ সীমা ছুঁই ছুঁই করছে।

পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বেশ কিছু পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে বীজতলা, রোপা আমন, সবজিসহ কিছু ফসল। এছাড়াও ভাঙ্গনে গৃহহীন হয়েছে শতাধিক পরিবার। চিলমারীর রমনা পাত্রখাতা, মাছাবান্দা, অষ্টমীরচর, নয়ারহাট সহ কয়েকটি এলাকার নিম্নাঞ্চলের বীজতলা ও রোপা আমন, সবজি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ধীরে ধীরে নিন্মাঞ্চল থেকে উঁচু স্থানের জমি গুলো ডুবে যাওয়া শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে লোকালয়েও ঢুকতে শুরু করেছে বন্যার পানি।

নিচে পানি আর উপরে রোদের প্রচন্ড তাপে বিভিন্ন স্থানের আমন ক্ষেত পচতেও শুরু করেছে। পাত্রখাতার কৃষক আঃ রাজ্জাক, আঃ আজিজ, মাছাবান্দার খয়বার, জাহিদুলসহ অনেকে জানান রোপা আমনের মৌসুমের শুরুতে ছিল না কোন পানি। ছিল চারদিকে পানির জন্য হাহাকার, তাই বাধ্য হয়ে শ্যালো মিশিন দিয়ে পানি দিয়ে চাষ শুরু করেছিলাম কিন্তু হঠাতই নদীর পানি অসাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা আশঙ্কা দেখা দেয়ায় রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত ইতি মধ্যে ডুবে যাওয়ায় আমরা চিন্তিত। ভাবতেও পারছি না এখন কি হইবে।

কৃষকরা বলেন, বাবারে একে তো অতিরিক্ত খরচ করে জমি চাষ করেছিলাম তার উপর বন্যার পানি সব নষ্ট করে দিল; এখন কি করমো আগামী দিন গুলোই বা কিভাবে চলবো। এদিকে কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, এবারে রোপা আমানের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ হাজার ৯৮৫ হেষ্টর তা শতভাগও অর্জিত হয়েছে এর মধ্যে ১ হাজার ২৫৭ হেক্টর জমির আমন ক্ষেত পুরো পানিতে ডুবে গেছে। তবে কৃষকরা তা মানতে নারাজ তারা বলেন, অর্জিত জমির বেশির ভাগ ক্ষেত এখন পানির নিচে। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ খালেদুর রহমান কৃষকের সাময়িক সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, যে দু’চারদিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে আশা করি তেমন ক্ষতি হবে না তবে; পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত ক্ষতির পরিমান বলাও যাচ্ছে না।