হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলায় আখের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্ষা মৌসুমেও চলছে আখ চাষ। অন্যান্য ফসলের চেয়ে আখ চাষ লাভবান হওয়ায় দিন দিন কৃষকরা আখ চাষের দিকে ঝুঁকছে। বিগত কয়েক বছর যাবত আখের দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর আখ চাষের ব্যাপকতা দেখা গেছে। উপজেলার আবিরপাড়া, দক্ষিণ তাজপুর, রশুনিয়া, হিরনের খিলগাঁও, ইছাপুরা, মধ্যপাড়া, শেখরনগর, রাজানগর, মালখানগরে আখ চাষে আগের তুলনায় অনেক চাষি এগিয়ে এসেছে আখ চাষে। এ বছর সময় মতো বৃষ্টি ভালো হওয়ায় আখ রসালো ও মোটা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আখ চাষিরা।
উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তাজপুর গ্রামের কৃষক মো. মিলন বলেন, তিন বছর যাবত আখ চাষ করি। গত বছর ফলন ভালো হওয়াতে এইবার তেরো গন্ডা জমিতে আখ চাষ করেছি এবং আখ চাষে প্রতি গন্ডায় খরচ হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। প্রতিবারই কিছুটা লাভ হয়। তবে গতবারের চেয়ে এবার আখের চাষ বেশি হলেও পাইকার কম। গতবছর একশত আখ বিক্রি করেছি সাত শত টাকা থেকে আট শত টাকা করে। কিন্তু এবার ছয়শত বা সাতশত করে বিক্রি করতে হচ্ছে। আলুর উত্তোলনের পরেই আখের চাষ করেছি তবে এইবার অতিরিক্ত বৃষ্টির সুবাদে ফলন কম হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিগত ৪ থেকে ৫ বছর ধরে কেরাণীগঞ্জ জাজিরা থেকে আসা পাইকার মো. করিম ভান্ডারি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আখ পাইকারিদরে ক্রয় করে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করেন। তিনি জানান ১ শত আখ আমরা এখান থেকে ৬ থেকে ৭ টাকায় কিনে ঢাকায় বিক্রি করি ১১ থেকে ১২ টাকা। সপ্তাহে দুইবার প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার আখ ক্রয় করে নিয়ে যাই। তিনি আরো জানান যে সিরাজদিখান থেকে আখ ক্রয় করে ঢাকায় নিয়ে সমস্ত খরচ বাদ দিয়েও তিনি একশত আখে প্রায় দুইশত টাকা লাভ করেন। জানা যায়, সিরাজদিখানে তিন ধরনের আখ বেশি হয়। কাজলা পাশত সাতাইশ ও অমিতাভ।
পাচশ সাতাশ আখটি পাবলিকে কামড়িয়ে খায় এবং চিনি হয়।আর অমিতাভ নামের আখের রস মেশিনে রস বানিয়ে বিক্রি হয়। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার সিরাজদিখানে আখ চাষির সংখ্যা বেড়েছে। আগে পোকার কারণে লোকসান হলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে আখ চাষ করে সাফল্য পাচ্ছেন এখানকার কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় বলেন, আগে কৃষকেরা ভুল পদ্ধতিতে আখ চাষ করতেন, তাই পোকার আক্রমণে তারা লোকসানের মুখে পড়েছিলেন। বর্তমানে আমাদের পরামর্শে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে চাষাবাদ করে লাভের মুখ দেখছেন তারা।