ঢাকা ১০:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খরায় পুড়ছে ক্ষেত, আমনেও ভরসা সেচ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:০৫:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অগাস্ট ২০১৮
  • ৫৬৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুড়িগ্রামে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকের হাজার হাজার হেক্টর আমন ক্ষেত পানি শূন্যতায় পড়েছে। কৃষকের অধিকাংশ আমনের ক্ষেত খাঁ খাঁ করছে। বৃষ্টি না হওয়ায় জমিগুলো ফেটে চৌচির হচ্ছে। কোনো জায়গায় খরায় পুড়ে যাচ্ছে আমন ধান গাছ। এ অবস্থায় কৃষক বাড়তি পয়সা খরচ করে শ্যালোমেশিন ও বিদ্যুৎচালিত সেচের উপর ভরসা করেই ফসল বাঁচানোর অবিরাম চেষ্টা  চালাচ্ছেন। তবুও এখানকার কৃষকরা আকাশের দিকে বৃষ্টির অপেক্ষায় তাকিয়ে আছেন।

কৃষকরা বলেন, বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল এই আমন ক্ষেতে বৃষ্টির পানি অপরিহার্য। বৃষ্টি না হলে ফসলে পোকার আক্রমণ ও রোগ-বালাই দেখা দিয়ে উৎপাদনে ভাটা পড়বে।

জ্যোতিন্দ্রনারায়ন গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানী (৫০) জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় খরায় তার ২ বিঘা জমির আমন ক্ষেত পুড়ে যাচ্ছে। অবস্থায় তিনি আমনের উৎপাদন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

বজরের খামার সুকানদিঘী এলাকার কৃষক আলী হোসেন (৬৫) বলেন, তিনি ৪ বিঘা জমিতে সেচ দিয়ে আমন চাষ করেছেন। আমন চারা রোপণের পর থেকে তাকে বোরো চাষের মতো করে আমন ধান ক্ষেতে সেচ দিতে হচ্ছে। কিন্তু এরপরও তিনি ফসল উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন।

কৃষক আলী হোসেনের মতে সেচের মাধ্যমে আমন ক্ষেতে ধানের গোড়ায় পানি দেয়া হলেও ধান গাছের কাণ্ডে অর্থাৎ ধান গাছের উপরে বৃষ্টির পানি না পড়লে ধান গাছের কাণ্ডে বিভিন্ন রোগবালাই ও পোকার আক্রমণে ফসলের উৎপাদন বিপর্যস্ত হবে।

উল্লেখ্য, কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ীর সূত্রমতে কুড়িগ্রামের নয়টি উপজেলা- রৌমারী, রাজীবপুর, চিলমারী, উলিপুর, রাজারহাট, কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় এবার ১ লাখ ১৫ হাজার ২৭৩ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।

এর মধ্যে আগস্ট মাস পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার ১ লাখ ২ হাজার ৯৯৮ হেক্টর জমিতে আমন চাষ অর্জিত হয়েছে। বৃষ্টির পানির অভাবে লক্ষ্যমাত্রার এসব জমির অধিকাংশই শ্যালোমেশিন বা বৈদ্যুতিক সেচ মেশিনের মাধ্যমে চাষ করা হয়।

চারা রোপণ পরবর্তী সময় পর্যন্ত কুড়িগ্রামে আমন ক্ষেতের জন্য কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এখানে বিরাজ করছে খরা। আর এই খরায় হাজার হাজার মানুষ চাষি বোরো চাষের মতো আমন ক্ষেতে সেচ মেশিনের মাধ্যমে পানি দিয়েও আমন ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে সময় পার করছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

খরায় পুড়ছে ক্ষেত, আমনেও ভরসা সেচ

আপডেট টাইম : ০৪:০৫:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অগাস্ট ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুড়িগ্রামে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকের হাজার হাজার হেক্টর আমন ক্ষেত পানি শূন্যতায় পড়েছে। কৃষকের অধিকাংশ আমনের ক্ষেত খাঁ খাঁ করছে। বৃষ্টি না হওয়ায় জমিগুলো ফেটে চৌচির হচ্ছে। কোনো জায়গায় খরায় পুড়ে যাচ্ছে আমন ধান গাছ। এ অবস্থায় কৃষক বাড়তি পয়সা খরচ করে শ্যালোমেশিন ও বিদ্যুৎচালিত সেচের উপর ভরসা করেই ফসল বাঁচানোর অবিরাম চেষ্টা  চালাচ্ছেন। তবুও এখানকার কৃষকরা আকাশের দিকে বৃষ্টির অপেক্ষায় তাকিয়ে আছেন।

কৃষকরা বলেন, বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল এই আমন ক্ষেতে বৃষ্টির পানি অপরিহার্য। বৃষ্টি না হলে ফসলে পোকার আক্রমণ ও রোগ-বালাই দেখা দিয়ে উৎপাদনে ভাটা পড়বে।

জ্যোতিন্দ্রনারায়ন গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানী (৫০) জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় খরায় তার ২ বিঘা জমির আমন ক্ষেত পুড়ে যাচ্ছে। অবস্থায় তিনি আমনের উৎপাদন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

বজরের খামার সুকানদিঘী এলাকার কৃষক আলী হোসেন (৬৫) বলেন, তিনি ৪ বিঘা জমিতে সেচ দিয়ে আমন চাষ করেছেন। আমন চারা রোপণের পর থেকে তাকে বোরো চাষের মতো করে আমন ধান ক্ষেতে সেচ দিতে হচ্ছে। কিন্তু এরপরও তিনি ফসল উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন।

কৃষক আলী হোসেনের মতে সেচের মাধ্যমে আমন ক্ষেতে ধানের গোড়ায় পানি দেয়া হলেও ধান গাছের কাণ্ডে অর্থাৎ ধান গাছের উপরে বৃষ্টির পানি না পড়লে ধান গাছের কাণ্ডে বিভিন্ন রোগবালাই ও পোকার আক্রমণে ফসলের উৎপাদন বিপর্যস্ত হবে।

উল্লেখ্য, কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ীর সূত্রমতে কুড়িগ্রামের নয়টি উপজেলা- রৌমারী, রাজীবপুর, চিলমারী, উলিপুর, রাজারহাট, কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় এবার ১ লাখ ১৫ হাজার ২৭৩ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।

এর মধ্যে আগস্ট মাস পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার ১ লাখ ২ হাজার ৯৯৮ হেক্টর জমিতে আমন চাষ অর্জিত হয়েছে। বৃষ্টির পানির অভাবে লক্ষ্যমাত্রার এসব জমির অধিকাংশই শ্যালোমেশিন বা বৈদ্যুতিক সেচ মেশিনের মাধ্যমে চাষ করা হয়।

চারা রোপণ পরবর্তী সময় পর্যন্ত কুড়িগ্রামে আমন ক্ষেতের জন্য কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এখানে বিরাজ করছে খরা। আর এই খরায় হাজার হাজার মানুষ চাষি বোরো চাষের মতো আমন ক্ষেতে সেচ মেশিনের মাধ্যমে পানি দিয়েও আমন ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে সময় পার করছেন।