ঢাকা ০১:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদাকে বলার সাহস পাচ্ছেন না নেতারা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:১০:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অক্টোবর ২০১৫
  • ৩২৪ বার

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে কমিটি পুনর্গঠন করতে পারেনি বিএনপি। তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা বাড়তি সময়ের দাবি করছেন। বিষয়টি দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন নেতারা। কেন্দ্র থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না তারা। বিষয়টি নিয়ে বেগম জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করারও সাহস পাচ্ছেন না দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

জানা গেছে, বিএনপির ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার সব কমিটিই মেয়াদোত্তীর্ণ। গত ৯ আগস্ট দলের পক্ষ থেকে যুগ্ম মহাসচিব মো. শাজাহান সব জেলায় ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন কমিটি করার জন্য চিঠি দেন। কিন্তু দল ঢেলে সাজানোর নতুন উদ্যোগের টার্গেট পূরণ করতে পারেনি বিএনপি।

এ ব্যর্থতার কিছু কারণও রয়েছে। কারণগুলোর মধ্যে ঈদুল আজহা, পবিত্র হজ, এলাকাভিত্তিক কাউন্সিল করতে সরকার ও আওয়ামী লীগের বাধা, নেতৃত্বের কোন্দল, কাউন্সিলের জন্য স্থান বরাদ্দ না পাওয়া এবং হামলা-মামলার শিকার হয়ে এলাকায় থাকতে না পারা। এসবকে দুষছেন দলের নেতাকর্মীরা।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দল পুনর্গঠনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশনা নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করে তুললেও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা তা সামাল দিতে পারছেন না। প্রায় সব জেলা-উপজেলায় নেতৃত্বের কোন্দল আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে। এ কারণে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া থমকে গেছে।

জানা গেছে, দলের ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার কোনোটিই কেন্দ্রের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি। একইভাবে ওয়ার্ড-থানা-পৌর কিংবা ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটিতেও আশানুরূপ অগ্রগতি হয়নি। অনেক সাংগঠনিক ইউনিটের জেলা ও মহানগরের নেতারা তৃণমূলে পুনর্গঠন সংক্রান্ত চিঠির প্রতি সাড়াও দিচ্ছেন না। কোনো কোনো জেলায় নেতাদের কোন্দলে সম্মেলন ও কমিটি গঠনের উদ্যোগ এখনো আলোর মুখ দেখেনি।

দলীয় সূত্র জানায়, নেতাদের কোন্দলে যেসব জেলা কমিটি গঠনে ব্যর্থ হবে, কেন্দ্র সে সব জেলায় হস্তক্ষেপ করবে। একইসঙ্গে ওই সব জেলা কমিটি ভেঙে দেয়া হবে।

নেতাদের কোন্দলের কারণে ময়মনসিংহ উত্তর ও দক্ষিণ জেলা, টাঙ্গাইল, বরিশাল মহানগর ও জেলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পঞ্চগড়, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, চট্টগ্রাম মহানগর, খুলনা জেলা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, রাজশাহীসহ অনেক জেলায় কমিটি গঠনে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই।

তবে চিঠি পাঠানোর পর প্রায় সব ইউনিট কাজ শুরু করেছে বলে গণমাধ্যমকে জানান বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মো. শাহজাহান। কাজও অনেক এগিয়েছে। তবে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া নির্ধারিত সময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি। যারা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন তাদের সময় বাড়িয়ে দেয়া হবে।

বিএনপির সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিল হয় ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর। এরপর আর কেন্দ্রীয় কমিটি হয়নি। সব জেলা কমিটি গঠনের পর জাতীয় কাউন্সিল করবে বিএনপি।

এদিকে চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাওয়ার দুদিন আগে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বেগম জিয়া। ওইদিনের বৈঠকে খালেদা জিয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নতুন কমিটি করার তাগিদ দিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দেন।

সূত্র জানায়, যারা সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছে তাদের দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে তাগিদ দেয়া হয়েছে। চেয়ারপারসনের নির্দেশনা ছাড়া সময় বাড়ানোর কথা কেউ বলতে পারছেন না। সময় বাড়াতে চেয়ারপারসনের সঙ্গে যোগাযোগের সাহস পাচ্ছেন না নেতারা।

অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান বলেছেন, অনেকেই সময় চেয়েছে। নেতাকর্মীদের কেউ জেলে আছে আবার অনেকে হজে গিয়েছেন। তাই তারা সময় চেয়েছেন। এত বড় দল, নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব তো থাকবেই। এগুলো নিরসন হয়ে যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

খালেদাকে বলার সাহস পাচ্ছেন না নেতারা

আপডেট টাইম : ০৭:১০:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অক্টোবর ২০১৫

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে কমিটি পুনর্গঠন করতে পারেনি বিএনপি। তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা বাড়তি সময়ের দাবি করছেন। বিষয়টি দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন নেতারা। কেন্দ্র থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না তারা। বিষয়টি নিয়ে বেগম জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করারও সাহস পাচ্ছেন না দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

জানা গেছে, বিএনপির ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার সব কমিটিই মেয়াদোত্তীর্ণ। গত ৯ আগস্ট দলের পক্ষ থেকে যুগ্ম মহাসচিব মো. শাজাহান সব জেলায় ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন কমিটি করার জন্য চিঠি দেন। কিন্তু দল ঢেলে সাজানোর নতুন উদ্যোগের টার্গেট পূরণ করতে পারেনি বিএনপি।

এ ব্যর্থতার কিছু কারণও রয়েছে। কারণগুলোর মধ্যে ঈদুল আজহা, পবিত্র হজ, এলাকাভিত্তিক কাউন্সিল করতে সরকার ও আওয়ামী লীগের বাধা, নেতৃত্বের কোন্দল, কাউন্সিলের জন্য স্থান বরাদ্দ না পাওয়া এবং হামলা-মামলার শিকার হয়ে এলাকায় থাকতে না পারা। এসবকে দুষছেন দলের নেতাকর্মীরা।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দল পুনর্গঠনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশনা নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করে তুললেও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা তা সামাল দিতে পারছেন না। প্রায় সব জেলা-উপজেলায় নেতৃত্বের কোন্দল আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে। এ কারণে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া থমকে গেছে।

জানা গেছে, দলের ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার কোনোটিই কেন্দ্রের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি। একইভাবে ওয়ার্ড-থানা-পৌর কিংবা ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটিতেও আশানুরূপ অগ্রগতি হয়নি। অনেক সাংগঠনিক ইউনিটের জেলা ও মহানগরের নেতারা তৃণমূলে পুনর্গঠন সংক্রান্ত চিঠির প্রতি সাড়াও দিচ্ছেন না। কোনো কোনো জেলায় নেতাদের কোন্দলে সম্মেলন ও কমিটি গঠনের উদ্যোগ এখনো আলোর মুখ দেখেনি।

দলীয় সূত্র জানায়, নেতাদের কোন্দলে যেসব জেলা কমিটি গঠনে ব্যর্থ হবে, কেন্দ্র সে সব জেলায় হস্তক্ষেপ করবে। একইসঙ্গে ওই সব জেলা কমিটি ভেঙে দেয়া হবে।

নেতাদের কোন্দলের কারণে ময়মনসিংহ উত্তর ও দক্ষিণ জেলা, টাঙ্গাইল, বরিশাল মহানগর ও জেলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পঞ্চগড়, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, চট্টগ্রাম মহানগর, খুলনা জেলা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, রাজশাহীসহ অনেক জেলায় কমিটি গঠনে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই।

তবে চিঠি পাঠানোর পর প্রায় সব ইউনিট কাজ শুরু করেছে বলে গণমাধ্যমকে জানান বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মো. শাহজাহান। কাজও অনেক এগিয়েছে। তবে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া নির্ধারিত সময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি। যারা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন তাদের সময় বাড়িয়ে দেয়া হবে।

বিএনপির সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিল হয় ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর। এরপর আর কেন্দ্রীয় কমিটি হয়নি। সব জেলা কমিটি গঠনের পর জাতীয় কাউন্সিল করবে বিএনপি।

এদিকে চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাওয়ার দুদিন আগে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বেগম জিয়া। ওইদিনের বৈঠকে খালেদা জিয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নতুন কমিটি করার তাগিদ দিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দেন।

সূত্র জানায়, যারা সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছে তাদের দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে তাগিদ দেয়া হয়েছে। চেয়ারপারসনের নির্দেশনা ছাড়া সময় বাড়ানোর কথা কেউ বলতে পারছেন না। সময় বাড়াতে চেয়ারপারসনের সঙ্গে যোগাযোগের সাহস পাচ্ছেন না নেতারা।

অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান বলেছেন, অনেকেই সময় চেয়েছে। নেতাকর্মীদের কেউ জেলে আছে আবার অনেকে হজে গিয়েছেন। তাই তারা সময় চেয়েছেন। এত বড় দল, নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব তো থাকবেই। এগুলো নিরসন হয়ে যাবে।