হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভূট্টার দুটি নতুন জাত উদ্ভাবন করল শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। সাউ হাইব্রিড ভূট্টা ১ ও সাউ হাইব্রিড ভূট্টা ২ নামে ভূট্টার এ দুটি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। নীল সাগর বীজ কোম্পানীর গবেষণা বিভাগের সহযোগীতায় উদ্ভাবিত নতুন জাতের এ হাইব্রিড ভূট্টা জাত দুটি সারা দেশেই চাষ করা যাবে। কৃষক পর্যায়ে চাষ বাড়ানো গেলে লাভবান হবে কৃষক। নিশ্চিত হবে পোল্ট্রি ফিডের মানসম্মত উৎস। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ব বিভাগের অধ্যাপক গবেষক ড. মো. আব্দুল্লাহেল বাকী জাত দুটি উদ্ভাবন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে নিবন্ধন করেছেন। ২ আগস্ট জাত দুটির নিবন্ধন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড।
অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহেল বাকী এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি প্রায় পাঁচ বছর গবেষণা করে এ সফালতা পেয়েছেন। অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহেল বাকী জানান, নীল সাগর বীজ কোম্পানীর গবেষণা বিভাগের সহযোগীতায় উদ্ভাবিত জাত দুটি রবি ও খরিপ ১ মৌসুমে চাষ করা যাবে।
তিনি বলেন, দেশীয় জাতের চেয়ে উদ্ভাবিত জাত দুটি খাটো। তাই ঝড়ে বা প্রবল বাতাসে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা নেই। জাত দুটির গোড়া থেকে মোচার উচ্চতা ৬০ থেকে ৮৫ সেমি। ফলে অন্যান্য জাতের চেয়ে উদ্ভাবিত জাত দুটি মাটি থকে বেশি পরিমাণে পানি ও পুষ্টি সংগ্রহ করে মোচায় সরবরাহ করতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবন নগর এবং পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জে জাত দুটির ট্রায়াল দেয়া হয়েছে বলে জানান এই গবেষক। জাত দুটির রবি মৌসুমে গড় ফলন বিঘা প্রতি ৪৫ থেকে ৫০ মণ। এবং খরিপ ১ এ গড় ফলন বিঘা প্রতি ২৫ থেকে ৩৩ মণ বলেও জানিয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহেল বাকী।
তিনি আরো বলেন, জাত দুটির ট্যাসেল (একটি অবরণ বিশেষ, যার ভেতর ভূট্টা হয়) খাড়া ও ছড়ানো। ফলে বৃষ্টির পানি ট্যাসেলে জমে থাকে না। জাত দুটির বীজের গঠন চোকা। তাই এর র্যাকিসে (ভূট্টার ভেতরে সাদা অংশ, যার উপরে ভূট্টা সারি সারি ভাবে বিন্যস্ত থাকে) বেশি সংখ্যক বীজ জন্মায়। ফলে লাভবান হবে চাষী।
উদ্ভাবিত জাত দুটি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে এই গবেষক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাঙ্গনের মাধ্যমে জাত দুটি কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া হবে। জাত দুটি নিয়ে এখন স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি’র শিক্ষার্থীরা গবেষণা করবে। তাদের গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল পর্যালোচনা করে কৃষক পর্যায়ে বীজ সরবরাহ করা হবে।
অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহেল বাকী বলেন, পোল্ট্রি ফিডের জন্য বাংলাদেশ এখনও প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে ভূট্টা আমদানি করে। কৃষক পর্যায়ে উদ্ভাবিত জাত দুটির চাষ বাড়ানো গেলে লাভবান হবে কৃষক। নিশ্চিত হবে পোল্ট্রি ফিডের মানসম্মত উৎস।