হাওর বার্তা ডেস্কঃ সড়কে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত বেপরোয়া গতির বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় জাবালে নূর পরিবহনের ঘাতক দুই বাসচালক ও দুই হেলপারের প্রত্যেককে সাত দিন করে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকা অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম (এসিএমএম) কায়সারুল ইসলাম আসমিদের জামিন আবেদন নাকচ করে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এই দুই চালক হলেন সোহাগ আলী (৩৫) ও জুবায়ের (৩৬) এবং হেলপার এনায়েত হোসেন (৩৮) ও রিপন (৩২)। আজ শুনানির সময় তাদেরকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
গত ৩১ জুলাই চার আসামিকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম প্রত্যেককে ১০ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। আজ সোমবার শুনানির জন্য দিন ধার্য করে ওইদিন তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২৯ জুলাই দিনে দুপুরে রাজধানীর বিমান বন্দর সড়কে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষমান থাকা অবস্থায় জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান দুই শিক্ষার্থী। এরা হলেন শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।
ঘটনার দিন একই পরিবহনের কয়েকটি বাসের সঙ্গে বেপরোয়া গতিতে প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন চালক ও হেলাপার। হোটেল রেডিসনের বিপরীতে জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের পাশে বাসে ওঠার অপেক্ষায় থাকা শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪-১৫ জন শিক্ষার্থীর ওপর গাড়িটি তুলে দেওয়া হয়।
বাস দুটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা মেট্টো-১১-৯২৯৭ ও ও ঢাকা মেট্টো গ-১১-৭৫৮০)। অবস্থা বেগতিক দেখে চালক ও হেলপাররা পালিয়ে যান। পরে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত হন একাদশ দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্রী তৃপ্ত, ইমরান চৌধুরী, প্রথমবর্ষের ছাত্র সোহেল রানা, মেহেদী হাসান জিসান, রাহাত, সজিব, জয়ন্তি, একই বর্ষের ছাত্রী রুবাইয়াসহ আরও কয়েকজন বর্তমানে গুরুতর অবস্থায় সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওই ঘটনায় নিহত দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে মামলা করেন। ক্যান্টনমেন্ট থানায় এ মামলা নম্বর ৩৩(৭)১৮।
মামলায় ঘাতক আরেক বাস চালক মাসুম বিল্লাহকে গত পহেলা আগস্ট ও বাস মালিক শাহাদাত হোসেনকে ২ আগস্ট একই মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার দিন থেকে এখন পর্যন্ত ওই কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রধান আসামি, গাড়ির মালিক ও দুর্ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, বিচার এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে অন্দোলন করছে। এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।