হাওর বার্তা ডেস্কঃ সম্প্রতি একদল আমেরিকান বিজ্ঞানীদের করা পরীক্ষায় দেখা গেছে শীত হোক কী বর্ষা, শরীর সুস্থ রাখতে পেয়ারার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, শরীরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যাতে কম করে ৯০ বছর পর্যন্ত ঠিক মতো কাজ করতে পারে, সেদিকেও নজর রাখে এই প্রকৃতিক উপাদানটি। তাই তো বলি মশাই কম খরচে যদি শরীরকে চাঙ্গা রাখতে হয়, তাহলে রোজের ডায়েটে পেয়ারাকে অন্তর্ভুক্ত করতেই হবে!
প্রসঙ্গত, পেয়ারার উপস্থিত ভিটামিন সি, লাইকোপেন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি অংশকে সুস্থ এবং সুন্দর রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম, শরীর যাতে খাবারে উপস্থিত নানাবিধ পুষ্টিকর উপাদান ঠিক মতো গ্রহণ করতে পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখে।
এখানেই শেষ নয়, শরীরকে চাঙ্গা রাখতে আরও নানাভাবে সাহায্য করে থাকে এই ফলটি। যেমন ধরুন…
১. সংক্রমণের আশঙ্কা কমে:
একেবারেই ঠিক শুনেছেন বন্ধু! আসলে এই ফলটিতে উপস্থিত অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট, শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ক্ষতিকর জীবাণুদের মারতে শুরু করে। ফলে কোনও ধরনের সংক্রমণের আশঙ্কা কমে যায়। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত সমস্ত ধরনের বিষাক্ত উপাদানও বেরিয়ে যায়। ফলে নিমেষে শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে আয়ুও বাড়ে চোখে পরার মতো।
২. ত্বককে ফর্সা করে তোলে:
অল্প পরিমানে পেয়ারার খোসা নিয়ে তার সঙ্গে ডিমের কুসুম মিশিয়ে একটা মিশ্রন বানিয়ে ফেলুন। তারপর সেটি ভাল করে মুখে লাগিয়ে কম করে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। সময় হয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন মুখটা। এইভাবে সপ্তাহে ২-৩ ত্বকের পরিচর্যা করলে দেখবেন ত্বক ফর্সা এবং উজ্জ্বল হয়ে উঠতে সময় লাগবে না।
৩. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন একটা করে পেয়ারা খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে পটাশিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। রাশি অনুযায়ী কেমন ধরনের গনেশ মূর্তির পুজো করলে বেশি সুফল মেলে সে সম্পর্কে জানা আছে কি? খরচ কমিয়ে চটজলদি বড়লোক হয়ে উঠতে টাকার ব্যাগের রং কি হওয়া উচিত জানা আছে? কোন রাশির জন্য কোন জেমস্টোন উপকারি জানা আছে কি?
৪.দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে:
প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন এ থাকার কারণে নিয়মিত পেয়ারা খেলে দৃষ্টিশক্তির মারাত্মক উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে ছানি, ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এবং গ্লকোমার মতো রোগও দূরে থাকে।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে:
আপনাদের কি জানা আছে পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে এতটা মজবুত করে তোলে যে ছোট-বড় কোনও ধরনের রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। এখানেই শেষ নয়, নানা ধরনের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতেও ভিটামিন সি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই কারণেই তো একেবারে ছোট বেলা থেকে বাচ্চাদের পেয়ারা খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
৬. ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়:
পেয়ারায় উপস্থিত ভিটামিন বি৩ এবং বি৬ মস্তিষ্কে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রেনের কগনেটিভ ফাংশন, অর্থাৎ স্মৃতিশক্তি, বুদ্ধি এবং মনোযোগের উন্নতি ঘটে।
৭. ক্যান্সারের মতো রোগ দূরে থাকে:
ক্রমবর্ধমান এই মারণ রোগকে থামাতে পারে একমাত্র প্রকৃতি। কারণ প্রকৃতির অন্দরেই রয়েছে সেই শক্তি, যা আমাদের ক্যান্সার রোগ থেকে দূরে রাখতে পারে। যেমন পোরার কথাই ধরুন না। এতে উপস্থিত লাইকোপেন, কুয়েরসেটিন, ভিটামিন সি এবং পলিফেনল শরীরের অন্দরে জমতে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বার করে দেয়। ফলে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যায়। প্রসঙ্গত, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ব্রেস্ট এবং প্রস্টেট ক্যান্সার রোধে পেয়ারার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।
৮. কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রকোপ কমে:
শরীরে ফাইবারের মাত্রা বাড়তে থাকলে পেটের রোগ যেমন কমে, তেমনি কনস্টিপেশনের মতো সমস্যাও দূরে পালায়। আর ফলেদের দুনিয়ায় পেয়ারায় মধ্যেই রয়েছে সবথেকে বেশি মাত্রায় ফাইবার। তাই প্রতিদিন সকালে প্রকৃতির ডাকে সারা দেওয়ার সময় যদি বেজায় কষ্ট পোয়াতে হয়, তাহলে আজ থেকেই পেয়ারাকে রোজের সঙ্গী বানান। দেখবেন কষ্ট একেবারে কমে যাবে।
৯. রক্তে সুগারের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:
পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এই ফলটি যেহেতু গ্লাইকেমিক ইনডেক্সে একেবারে নিচের দিকে আসে, তাই পেয়েরা খেলে ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে না। তাই ডায়াবেটিক রোগীরা নিশ্চিন্তে এই ফলটি খেতে পারেন।