ঢাকা ০১:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আষাঢ়ে অনাবৃষ্টি পেয়ে আমন রোপণে ব্যস্ত চাষিরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪৪:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জুলাই ২০১৮
  • ৩২২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আষাঢ়ে অনাবৃষ্টির কারণে আমনের আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন চাষিরা। তবে গত এক সপ্তাহ থেকে বৃষ্টির দেখা মেলেছে। বৃষ্টি হওয়ায় আমনের জমিতে চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর চাষিরা। তবে এক সঙ্গে জমি চাষাবাদের কারণে বেড়েছে শ্রমিকের মজুরিও।

আষাঢ়-শ্রাবণ মাস জমিতে আমনের চারা রোপণের উপযুক্ত সময় হলেও বৃষ্টির অভাবে মাঠের পর মাঠ জমি অনাবাদি পড়েছিল। আবার গভীর ও অগভীর নলকূপ থেকে পানি দিয়ে বাড়তি খরচ করে জমি তৈরি করেছিলেন অনেক কৃষক। তবে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর শ্রাবণের আকাশে ঘটেছে মেঘের ঘনঘটা। গত এক সপ্তাহ থেকে প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে শ্রাবণের বারিধারা। জমিতে বৃষ্টির পানি ধরা পড়েছে। আর এ সুযোগে বৃষ্টির পানিতে আমনের জমিতে চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। আবার বৃষ্টির পানি বেশি হওয়ায় একটু নিচু প্রকৃতির জমি তলিয়ে গেছে। প্রয়োজনের তুলনায় জমিতে পানি বেশি হওয়ায় পানি নিষ্কাশনের জন্য অপেক্ষা করছেন কৃষকরা। তবে এক সঙ্গে জমি চাষাবাদের কারণে বেড়েছে শ্রমিকের মজুরিও। আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে জমিতে চারা রোপণের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে চাষিরা। Naogaon-Paddy-Pic

বদলগাছী উপজেলার জিধিরপুর গ্রামের কৃষক তোফায়েল আহমেদ বলেন, এতোদিন বৃষ্টির অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ করে এক সপ্তাহ থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এজন্য ১৮ বিঘা জমি বৃষ্টির পানিতে হালচাষ করে প্রস্তুত করছি। ওই জমিতে আমনের আবাদ করবো। এক সঙ্গে সবাই জমিতে চারা রোপণ শুরু করায় শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে বিঘা প্রতি ৬০০-৬৫০ টাকা হলেও এখন ৮০০ টাকা মজুরি দিতে হচ্ছে।

কাদিবাড়ী গ্রামের কৃষক বিপ্লব কৃষ্ণ সাহা বলেন, খরার কারণে জমি প্রস্তুত করা সম্ভব হচ্ছিল না। গত এক সপ্তাহ আগে গভীর নলকুপ থেকে পানি নিয়ে জমিতে হালচাষ শুরু করলে বৃষ্টি শুরু হয়। জমি একটু নিচু হওয়ায় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বেশি হওয়ায় চারা রোপন করা সম্ভব হচ্ছে না। পানি কমলেই চারা রোপণ শুরু হবে।

Naogaon-Paddy-Pic

শ্রমিক শুকচান বলেন, তার দলে নারীসহ আটজন শ্রমিক আছে। হঠাৎ বৃষ্টিতে কাজের চাপ বেড়েছে। সঙ্গে মজুরিও। প্রতি বিঘা জমিতে ৮০০ টাকা চুক্তিতে চারা রোপণ করা হচ্ছে।

সদর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের কৃষক সুমন বলেন, বৃষ্টির অপেক্ষাই থেকে শ্যালো মেশিন পানি দিয়ে জমি প্রস্তুত করা হয়। এরপরই বৃষ্টি শুরু। শুধু শুধু বাড়তি খরচ গুনতে হলো। আমনের আবাদে প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৫-৬ হাজার টাকা খরচ হয়। তবে অনাবৃষ্টি হলে খরচ আরও বেশি হয়।

Naogaon-Paddy-Pic

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বরেন, চলতি আমন মৌসুমে ১ লাখ ৬১ হাজার ১৭৬ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৮৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের চারা রোপণ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আষাঢ়ে অনাবৃষ্টি পেয়ে আমন রোপণে ব্যস্ত চাষিরা

আপডেট টাইম : ১২:৪৪:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জুলাই ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আষাঢ়ে অনাবৃষ্টির কারণে আমনের আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন চাষিরা। তবে গত এক সপ্তাহ থেকে বৃষ্টির দেখা মেলেছে। বৃষ্টি হওয়ায় আমনের জমিতে চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর চাষিরা। তবে এক সঙ্গে জমি চাষাবাদের কারণে বেড়েছে শ্রমিকের মজুরিও।

আষাঢ়-শ্রাবণ মাস জমিতে আমনের চারা রোপণের উপযুক্ত সময় হলেও বৃষ্টির অভাবে মাঠের পর মাঠ জমি অনাবাদি পড়েছিল। আবার গভীর ও অগভীর নলকূপ থেকে পানি দিয়ে বাড়তি খরচ করে জমি তৈরি করেছিলেন অনেক কৃষক। তবে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর শ্রাবণের আকাশে ঘটেছে মেঘের ঘনঘটা। গত এক সপ্তাহ থেকে প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে শ্রাবণের বারিধারা। জমিতে বৃষ্টির পানি ধরা পড়েছে। আর এ সুযোগে বৃষ্টির পানিতে আমনের জমিতে চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। আবার বৃষ্টির পানি বেশি হওয়ায় একটু নিচু প্রকৃতির জমি তলিয়ে গেছে। প্রয়োজনের তুলনায় জমিতে পানি বেশি হওয়ায় পানি নিষ্কাশনের জন্য অপেক্ষা করছেন কৃষকরা। তবে এক সঙ্গে জমি চাষাবাদের কারণে বেড়েছে শ্রমিকের মজুরিও। আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে জমিতে চারা রোপণের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে চাষিরা। Naogaon-Paddy-Pic

বদলগাছী উপজেলার জিধিরপুর গ্রামের কৃষক তোফায়েল আহমেদ বলেন, এতোদিন বৃষ্টির অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ করে এক সপ্তাহ থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এজন্য ১৮ বিঘা জমি বৃষ্টির পানিতে হালচাষ করে প্রস্তুত করছি। ওই জমিতে আমনের আবাদ করবো। এক সঙ্গে সবাই জমিতে চারা রোপণ শুরু করায় শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে বিঘা প্রতি ৬০০-৬৫০ টাকা হলেও এখন ৮০০ টাকা মজুরি দিতে হচ্ছে।

কাদিবাড়ী গ্রামের কৃষক বিপ্লব কৃষ্ণ সাহা বলেন, খরার কারণে জমি প্রস্তুত করা সম্ভব হচ্ছিল না। গত এক সপ্তাহ আগে গভীর নলকুপ থেকে পানি নিয়ে জমিতে হালচাষ শুরু করলে বৃষ্টি শুরু হয়। জমি একটু নিচু হওয়ায় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বেশি হওয়ায় চারা রোপন করা সম্ভব হচ্ছে না। পানি কমলেই চারা রোপণ শুরু হবে।

Naogaon-Paddy-Pic

শ্রমিক শুকচান বলেন, তার দলে নারীসহ আটজন শ্রমিক আছে। হঠাৎ বৃষ্টিতে কাজের চাপ বেড়েছে। সঙ্গে মজুরিও। প্রতি বিঘা জমিতে ৮০০ টাকা চুক্তিতে চারা রোপণ করা হচ্ছে।

সদর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের কৃষক সুমন বলেন, বৃষ্টির অপেক্ষাই থেকে শ্যালো মেশিন পানি দিয়ে জমি প্রস্তুত করা হয়। এরপরই বৃষ্টি শুরু। শুধু শুধু বাড়তি খরচ গুনতে হলো। আমনের আবাদে প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৫-৬ হাজার টাকা খরচ হয়। তবে অনাবৃষ্টি হলে খরচ আরও বেশি হয়।

Naogaon-Paddy-Pic

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বরেন, চলতি আমন মৌসুমে ১ লাখ ৬১ হাজার ১৭৬ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৮৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের চারা রোপণ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।