হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফর্সা এবং উজ্জ্বল ত্বকের অধিকারী হয়ে উঠতে কে না চায় ! তাই তো সবাই নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যান। কেউ সফল হন, বেশিরভাগই হন না। তবু কেউই চেষ্টা ছাড়েন না। এক্ষেত্রে বেশিরভাগই ত্বকের পুষ্টির কথা না ভেবে অন্ধের মতো শুধু বিউটি প্রডাক্ট ব্যবহার করে থাকেন। ফলে সুন্দর ত্বক পাওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। উল্টে স্কিনের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়। কিন্তু কসমেটিক্সের পরিবর্তে যদি ত্বকের পরিচর্যায় প্রাকৃতিক উপদান কাজে লাগানো যায়। এরমধ্যে ফলের রস অন্যতম।
আসলে শরীরের পাশাপাশি ত্বকের পুষ্টি বজায় রাখতে ফলের রস বা জুসের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে যদি চান, তাহলে বিউটি প্রডাক্টের পরিবর্তে আজ থেকেই জুস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন ফল পাবেন একেবারে হাতে-নাতে। এক্ষেত্রে যে যে উপকারগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি হল…
২. গাজর এবং কমলা লেবু: গরমকালে স্কিনকে বাঁচাতে অতিবেগুনি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে বাঁচানো একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে গাজর এবং কমলা লেবু। আসলে গাজরে উপস্থিত বিটা-ক্যারোটিন এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনি যদি তাপ প্রবাহের হাত থেকে ত্বককে বাঁচাতে চান, তাহলে প্রতিদিন গাজর এবং কমলা লেবু দিয়ে বানানো জুস পান করুন। কীভাবে বানাবেন এই পানীয়টি? এক্ষেত্রে প্রয়োজন পরবে ৫ টা গাজর, ৫ টা কমলা লেবু, ১ ইঞ্চি আদা এবং ১ টা লেবুর। প্রসঙ্গত, এই সবকটি উপাদানেই প্রচুর মাত্রায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ, যা ত্বক এবং শরীরকে ভাল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. কমলা লেবুর রস: এই ফলটিতে উপস্থিত সিট্রিক অ্যাসিড শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ত্বকের অন্দরে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে ত্বক ফর্সা হয়ে উঠতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে নানাবিধ ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও যায় কমে। তাই তো বলি বন্ধু, চটজলদি যদি ফর্সা ত্বকের অধিকারী হয়ে উঠতে চান, তহালে নিয়মিত কমলা লেবুর রস খেতে ভুলবেন না যেন!
৪. বাঁধাকপির জুস: এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন এ, সি এবং কে, সেই সঙ্গে রয়েছে ভিটামিন বি৫, বি১, ই এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এই সবকটি উপাদানই ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে ১ টা শসা, ১ টা লেবু, ২ কাপ বাঁধাকপি, ২ কাপ পালং শাক এবং হাফ কাপ আপেল ব্লেন্ডারে দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে একটা পানীয় বানিয়ে ফেলুন। প্রসঙ্গত, এই জুসটি খেলে শরীর থেকে সব ক্ষতিকর উপদান বেরিয়ে যায়। ফলে নানাবিধ রোগের প্রকোপ যেমন কমে, তেমনি ত্বকের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায়।
৫. অ্যালো ভেরার রস: ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এই প্রকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। কারণ অ্যালো ভেরা জেলে রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেল, অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং প্রোটিন। এই সবকটি উপাদানই ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে কীভাবে ব্যবহার করতে হবে অ্যালো ভেরা জেলকে? ১ টা শসা এবং ১ টা আপেলকে প্রথমে কেটে টুকরো করে নিন। তারপর সেগুলির সঙ্গে ২ চামচ লেবুর রস এবং ৪ চামচ অ্যালো ভেরা জেল মেশান। সবকটি উপকরণ ব্লেন্ডারে দিয়ে জুস বানিয়ে ফেলুন। কিছু সময় ফ্রিজে রেখে পানীয়টি খেয়ে ফেলুন। প্রসঙ্গত, এই পানীয়টি ত্বকে উপস্থিত একাধিক টক্সিনকে বের করে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো এই জুসটি খেলে ত্বক সুন্দর এবং নরম হতে শুরু করে।
৬. বিটরুটের জুস: নিয়মিত বিটের জুস খেলে ত্বকের বয়স কমতে থাকে। ফলে সৌন্দর্য এমনিতেই বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, ত্বকে উপস্থিত নানা ক্ষতিকর উপাদানকে বের করে দিয়ে স্কিনের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে বিটরুটে উপস্থিত লাইকোপেন ত্বককে টানটান করে। ফলে বলিরেখা উধাও হয়ে গিয়ে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে ২ টো বিটরুট, ১ টা আপেল এবং ১ টা শসা ব্লেন্ডারে দিয়ে জুস বানিয়ে ফেলুন। এই রসটি পান করলে বাস্তবিকই ত্বক সুন্দর হতে শুরু করে।
৭. আনারসের রস: এই ফলটিতে রয়েছে ব্রমেলিন নামে একটি উপাদান, যা ব্রণর প্রকোপ কমানোর পাশপাশি নানাবিধ ত্বকের রোগের প্রকোপ কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এই উপাদানটি ত্বকের মধ্যে লুকিয়ে থাকা নানা ক্ষতিকর উপাদানকে বার করে দেয়। ফলে কোনও ধরনের ত্বকের রোগই আক্রমণ করার সুযোগ পায় না। এক্ষেত্রে ব্লেন্ডারে কয়েক টুকরো আনারাস দিয়ে তাতে ১ টা আপেল এবং হাফ কাপ জাম মিশিয়ে জুস বানিয়ে ফেলুন। এই পানীয়টি প্রতিদিন যদি খেতে পারেন তাহলে ত্বকের সৌন্দর্য নিয়ে আপনাকে কোনও দিন ভাবতে হবে না। প্রসঙ্গত, এই জুসটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ, যা ত্বকের প্রদাহ তো কমাই, সেই সঙ্গে ব্রণর প্রকোপ কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।