ঢাকা ০১:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘুরে আসুন পাখির অভয়াশ্রম থেকে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৩৩:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুলাই ২০১৮
  • ৪০৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্ষায় বিলের সৌন্দর্য বাড়ে। বর্ষার পানিতে বিল যেনো পেখম মেলে। বৈচিত্র্যে ভরা বাংলাদেশে হাওর বিলের সংখ্যা অগুণিত। এসব বিলে নৌকা ভ্রমণে পাখির ওড়াউড়ি দেখলে অদ্ভুত আনন্দ হয়। এমনই একটি বিলের নাম বাইক্কা বিল। বাইক্কা বিল ঢাকা থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে। এটি মৌলভীবাজার জেলার প্রখ্যাত চা-সমৃদ্ধ শহর শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরের পূর্বদিকের প্রায় ১০০ হেক্টর আয়তনের একটি জলাভূমি জুড়ে অবস্থিত।

২০০৩ সালের ১ জুলাই বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয় এই বিলটিকে মৎস্য সম্পদের একটি অভয়াশ্রম হিসেবে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়।

আইড়, কই, মেনি, ফলি, পাবদাসহ আরো অনেক প্রজাতির মাছ এখানে বংশবৃদ্ধি করে পুরো হাওরে ছড়িয়ে পড়ে।

এই বিল মাছের জন্যেই শুধু নয়, পাখি এবং অন্যান্য অনেক প্রাণীর জন্যও একটি চমৎকার নিরাপদ আবাসস্থল। এটি একটি নয়নাভিরাম জলাভূমি যেখানে হাজারো শাপলা আর পদ্ম ফুল ফোটে। এ

বিলের উল্লেখযোগ্য পাখি-পানকৌড়ি, কানিবক, ধলাবক, গোবক, ধুপনিবক, রাঙ্গাবক, দলপিপি, নেউপিপি, পানমুরগি, বেগুনি কালেম, কালোমাথা কাস্তেচরা, শঙ্খচিল, পালাসি, কুড়া, ঈগল। শীতের অতিথি হয়ে এই বিলে আসে অনেক জাতের সৈকত পাখি। এদের মধ্যে আছে গেওয়ালা বাটান, মেটেমাথা চিটি, কালাপঙ্খ ঠেঙ্গী, ধলা বালিহাঁস, পাতি সরালি, রাজসরালি, মরচেরং, ভূতিহাঁস, গিরিয়াহাঁস, ল্যাঙ্গাহাঁস, গুটি ঈগল, সাপ-ব্যাঙ এবং আরও নানা প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ। এছাড়া বাইক্কা বিলে পাওয়া যায় সুস্বাদু মাখনা, শালুকসহ নানা স্বাদের, নানা বর্ণের জলজ ফল।

পাখির স্থায়ী অভয়াশ্রম হওয়ার কারণে পুরো বছরই পাখির কলকাকলিতে মুখরিত থাকে বাইক্কা বিল।

ছাড়া এই বিলের বুনো বাসিন্দা আর শীতে আগত পরিযায়ী পাখিদের ভালোভাবে দেখার জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। বিলের ওয়াচ টাওয়ারের উপর বসে সূর্য ডোবা দেখা যায়। কী সুন্দর করে সূর্যটা আস্তে আস্তে টুপ করে পানির মধ্যে পড়ে যায়। বাইক্কা বিল একদম প্রকৃতির ভেতর ঢুকিয়ে দেয়। একবার ঢুকে গেলে আর বের হতে ইচ্ছে করবে না। প্রকৃতিপ্রেমি এবং পাখির ছবি তুলতে যারা ভালোবাসেন, তাদের বাইক্কা বিল আসতেই হবে।

যেভাবে যাবেন
বাইক্কা বিলে যেতে হলে শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজার সড়ক ধরে কালাপুর বাজার থেকে একটু সামনে এগোলেই বরুনা-হাজীপুর পাকা রাস্তা। এ রাস্তায় প্রবেশ করে যেতে হবে হাজীপুর বাজারে। বাজারটি ‘ঘাটের বাজার’ নামে পরিচিত। সেখান থেকে মোটরসাইকেলে বা পায়ে হেঁটে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার দূরে গেলে বাইক্কা বিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ঘুরে আসুন পাখির অভয়াশ্রম থেকে

আপডেট টাইম : ০৪:৩৩:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুলাই ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্ষায় বিলের সৌন্দর্য বাড়ে। বর্ষার পানিতে বিল যেনো পেখম মেলে। বৈচিত্র্যে ভরা বাংলাদেশে হাওর বিলের সংখ্যা অগুণিত। এসব বিলে নৌকা ভ্রমণে পাখির ওড়াউড়ি দেখলে অদ্ভুত আনন্দ হয়। এমনই একটি বিলের নাম বাইক্কা বিল। বাইক্কা বিল ঢাকা থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে। এটি মৌলভীবাজার জেলার প্রখ্যাত চা-সমৃদ্ধ শহর শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরের পূর্বদিকের প্রায় ১০০ হেক্টর আয়তনের একটি জলাভূমি জুড়ে অবস্থিত।

২০০৩ সালের ১ জুলাই বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয় এই বিলটিকে মৎস্য সম্পদের একটি অভয়াশ্রম হিসেবে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়।

আইড়, কই, মেনি, ফলি, পাবদাসহ আরো অনেক প্রজাতির মাছ এখানে বংশবৃদ্ধি করে পুরো হাওরে ছড়িয়ে পড়ে।

এই বিল মাছের জন্যেই শুধু নয়, পাখি এবং অন্যান্য অনেক প্রাণীর জন্যও একটি চমৎকার নিরাপদ আবাসস্থল। এটি একটি নয়নাভিরাম জলাভূমি যেখানে হাজারো শাপলা আর পদ্ম ফুল ফোটে। এ

বিলের উল্লেখযোগ্য পাখি-পানকৌড়ি, কানিবক, ধলাবক, গোবক, ধুপনিবক, রাঙ্গাবক, দলপিপি, নেউপিপি, পানমুরগি, বেগুনি কালেম, কালোমাথা কাস্তেচরা, শঙ্খচিল, পালাসি, কুড়া, ঈগল। শীতের অতিথি হয়ে এই বিলে আসে অনেক জাতের সৈকত পাখি। এদের মধ্যে আছে গেওয়ালা বাটান, মেটেমাথা চিটি, কালাপঙ্খ ঠেঙ্গী, ধলা বালিহাঁস, পাতি সরালি, রাজসরালি, মরচেরং, ভূতিহাঁস, গিরিয়াহাঁস, ল্যাঙ্গাহাঁস, গুটি ঈগল, সাপ-ব্যাঙ এবং আরও নানা প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ। এছাড়া বাইক্কা বিলে পাওয়া যায় সুস্বাদু মাখনা, শালুকসহ নানা স্বাদের, নানা বর্ণের জলজ ফল।

পাখির স্থায়ী অভয়াশ্রম হওয়ার কারণে পুরো বছরই পাখির কলকাকলিতে মুখরিত থাকে বাইক্কা বিল।

ছাড়া এই বিলের বুনো বাসিন্দা আর শীতে আগত পরিযায়ী পাখিদের ভালোভাবে দেখার জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। বিলের ওয়াচ টাওয়ারের উপর বসে সূর্য ডোবা দেখা যায়। কী সুন্দর করে সূর্যটা আস্তে আস্তে টুপ করে পানির মধ্যে পড়ে যায়। বাইক্কা বিল একদম প্রকৃতির ভেতর ঢুকিয়ে দেয়। একবার ঢুকে গেলে আর বের হতে ইচ্ছে করবে না। প্রকৃতিপ্রেমি এবং পাখির ছবি তুলতে যারা ভালোবাসেন, তাদের বাইক্কা বিল আসতেই হবে।

যেভাবে যাবেন
বাইক্কা বিলে যেতে হলে শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজার সড়ক ধরে কালাপুর বাজার থেকে একটু সামনে এগোলেই বরুনা-হাজীপুর পাকা রাস্তা। এ রাস্তায় প্রবেশ করে যেতে হবে হাজীপুর বাজারে। বাজারটি ‘ঘাটের বাজার’ নামে পরিচিত। সেখান থেকে মোটরসাইকেলে বা পায়ে হেঁটে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার দূরে গেলে বাইক্কা বিল।