ঢাকা ০১:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানি সংকটে বিপাকে পাট চাষিরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৪১:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুলাই ২০১৮
  • ৩৩৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আষাঢ়-শ্রাবণ মাস বর্ষা মৌসুম হলেও এ বছর তেমন বৃষ্টি হচ্ছে না নড়াইলে। এ কারণে পুকুর-খাল-বিলে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট পচানো নিয়ে বিপাকে পড়েছে চাষিরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একদিকে পাট কেটে রোপা আমন চাষ করতে ব্যস্ত সময় পার করছে চাষিরা। অপরদিকে পাট চাষ করে এতদিনের ফসল শেষ সময়ে পানির অভাবে নষ্ট হতে বসেছে। অনেকে জমির পাট কেটে সেখানে ধান রোপন করলেও পানি না থাকায় পাট সড়কের পাশে স্তুপ করে রেখে দেয়া হয়েছে। এতে করে পাট পচাতে না পেরে ক্ষতির আশঙ্কা করছে চাষিরা।

সদর উপজেলার শেখহাটি গ্রামের ইজাজ হোসেন বলেন, ‘আমি এক একর জমিতে পাটের চাষ করেছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে পাট কেটে এখন বিপাকে পড়েছি। পানির অভাবে পাট পচানোর জায়গা নেই। তাই সড়কের পাশে ফেলে রেখেছি।’

লোহাগড়া উপজেলার শরশুনা গ্রামের আহাদ মিয়া বলেন, ‘এত টাকা-পয়সা খরচ করে পাটের আবদ করে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছি। পানির অভাবে পাট পচাতে পারছি না। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে।’

কালিয়া উপজেলার বাবরা গ্রামের সমির বৈরাগী বলেন, ‘অন্যান্য বছরগুলোতে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে প্রচুর বৃষ্টি হলেও এ বছর বৃষ্টি নেই। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছি না। প্রচণ্ড রোদে কাটা পাট শুকিয়ে যাচ্ছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ৩ উপজেলায় ১৮ হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এর মধ্যে লোহাগড়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। এ উপজেলায় ১১ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৫ বেল পাট। এছাড়া নড়াইল সদর উপজেলায় ৪ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে ৫৩ হাজার ১৫৬ বেল পাট এবং কালিয়া উপজেলায় ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে ২৯ হাজার ৮১২ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় সাংবাদিককে বলেন, পাট এ অঞ্চলের নিচু এলাকায় বেশি চাষ হয়ে থাকে। পানির সমস্যা থাকলে চাষিদের আধুনিক রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচাতে হবে। পাট অধিদপ্তর এ বিষয় নিয়ে কাজ করছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পানি সংকটে বিপাকে পাট চাষিরা

আপডেট টাইম : ০৪:৪১:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুলাই ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আষাঢ়-শ্রাবণ মাস বর্ষা মৌসুম হলেও এ বছর তেমন বৃষ্টি হচ্ছে না নড়াইলে। এ কারণে পুকুর-খাল-বিলে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট পচানো নিয়ে বিপাকে পড়েছে চাষিরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একদিকে পাট কেটে রোপা আমন চাষ করতে ব্যস্ত সময় পার করছে চাষিরা। অপরদিকে পাট চাষ করে এতদিনের ফসল শেষ সময়ে পানির অভাবে নষ্ট হতে বসেছে। অনেকে জমির পাট কেটে সেখানে ধান রোপন করলেও পানি না থাকায় পাট সড়কের পাশে স্তুপ করে রেখে দেয়া হয়েছে। এতে করে পাট পচাতে না পেরে ক্ষতির আশঙ্কা করছে চাষিরা।

সদর উপজেলার শেখহাটি গ্রামের ইজাজ হোসেন বলেন, ‘আমি এক একর জমিতে পাটের চাষ করেছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে পাট কেটে এখন বিপাকে পড়েছি। পানির অভাবে পাট পচানোর জায়গা নেই। তাই সড়কের পাশে ফেলে রেখেছি।’

লোহাগড়া উপজেলার শরশুনা গ্রামের আহাদ মিয়া বলেন, ‘এত টাকা-পয়সা খরচ করে পাটের আবদ করে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছি। পানির অভাবে পাট পচাতে পারছি না। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে।’

কালিয়া উপজেলার বাবরা গ্রামের সমির বৈরাগী বলেন, ‘অন্যান্য বছরগুলোতে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে প্রচুর বৃষ্টি হলেও এ বছর বৃষ্টি নেই। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছি না। প্রচণ্ড রোদে কাটা পাট শুকিয়ে যাচ্ছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ৩ উপজেলায় ১৮ হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এর মধ্যে লোহাগড়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। এ উপজেলায় ১১ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৫ বেল পাট। এছাড়া নড়াইল সদর উপজেলায় ৪ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে ৫৩ হাজার ১৫৬ বেল পাট এবং কালিয়া উপজেলায় ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে ২৯ হাজার ৮১২ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় সাংবাদিককে বলেন, পাট এ অঞ্চলের নিচু এলাকায় বেশি চাষ হয়ে থাকে। পানির সমস্যা থাকলে চাষিদের আধুনিক রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচাতে হবে। পাট অধিদপ্তর এ বিষয় নিয়ে কাজ করছে।