ঢাকা ০৯:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আনন্দসাগরে সাঁতার কাটছে ফরাসি খেলোয়াড়রা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৩৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই ২০১৮
  • ৩০২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফাইনালের ম্যান অব দ্য ম্যাচ আন্তোয়ান গ্রিয়েজমান বেরিয়ে গেলেন হাততালিতে। লুঝনিকির সংবাদ সম্মেলনকক্ষে এরপর ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশমও ঢুকলেন করতালি-বৃষ্টিতে ভিজে। কিন্তু ভিজতে যে আরো বাকি আছে তাঁর! দল বেঁধে ফরাসি খেলোয়াড়রা ঢুকে শ্যাম্পেনের মতো পানি ছিটিয়ে যান দেশমকে। নাচ-গানে, হই-হুল্লোড়ে আনন্দের তুফান বইছে তখন।

বেঞ্জামিন মেন্ডি তো খালি গায়ে টেবিলের ওপর দাঁড়িয়ে শুরু করেন নাচ! দেশম ততক্ষণে ভিজে একশা। শিষ্যরা বেরিয়ে যেতে কোনোক্রমে মাথা-মুখ মুছে তৈরি হচ্ছেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জন্য। তখনই পল পগবার নেতৃত্বে দ্বিতীয় দলের প্রবেশ সংবাদ সম্মেলনকক্ষে। আবারও পানির ছিটানো বিন্দুতে শ্যাম্পেনের আনন্দ। আবারও নাচ-গান, হই-হুল্লোড়। বাঁধনহারা আনন্দে ফ্রান্সের পাগলপারা হয়ে যাওয়া। দেশম তো আর শুধু শুধু বলেননি, ‘আমরা এখন আনন্দের সাগরে সাঁতার কাটছি।’

২০ বছর পর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফ্রান্স; আনন্দ-সাগরে তারা তো সাঁতার কাটবেই।

ট্রফি উঁচিয়ে ধরার পর ঘণ্টাও পেরোয়নি। উদ্যাপন অসমাপ্ত রেখে সংবাদ সম্মেলনে আসতে হয় ফাইনালের ম্যাচসেরা গ্রিয়েজমানকে। বিশ্বকাপ জয়টা তাই তখনো ঠিক আত্মস্থ করতে পারছিলেন না, ‘কেমন লাগছে, এখনো ঠিক বুঝতে পারছি না। বিশ্বকাপ অনেক বড় ব্যাপার। সবাই মিলে আমরা ইতিহাস তৈরি করেছি। আজ রাতে তা উপভোগ করব। কাল ফ্রান্সে গিয়েও তাই। সব ফরাসির সঙ্গে মিলে পার্টি করব।’ তাঁর করা ফ্রি-কিক ফ্রান্সের প্রথম গোলের উৎস। দ্বিতীয়টি এই ফরোয়ার্ডের করা পেনাল্টি থেকে। ভিএআরের সেই সিদ্ধান্ত আনন্দময় চমক দিয়েছে গ্রিয়েজমানকে, ‘সত্যি বলতে কী, রেফারি যখন ভিএআর নেন, আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কেন। পরে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিলে মাথা ঠাণ্ডা রাখি। যে পদ্ধতিতে পেনাল্টি নিই, সেভাবে সফল হই আবার। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে পেরে আমরা সবাই সত্যি খুব খুশি। এখন আমি বিশ্বকাপ ট্রফি সঙ্গে নিয়ে ঘুমাব।’

এমন খুশির উপলক্ষ বছর দুয়েক আগেও এসেছিল। কিন্তু নিজ দেশে ইউরোর ফাইনালে পর্তুগালকে হারাতে পারেনি ফ্রান্স। ২০১৬-র সেই পরাজয় দলকে বড় শিক্ষা দিয়েছে বলে গ্রিয়েজমানের দাবি, ‘হ্যাঁ, দুই বছর আগের পরাজয় আমাদের অনেক শিখিয়েছে। দলে পরিবর্তন এসেছে। অনেক তরুণ খেলোয়াড় এসেছে, যা সাহায্য করেছে খুব। সবার মিলিত চেষ্টাতেই আমরা এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।’ কোচ দেশমের কাছেও দুই বছর আগের পরাজয়ের গুরুত্ব অনেক। সে পরাজয়েই বিশ্বকাপ জয়ের বীজ রোপণ করা হয় বলে তাঁর দাবি, ‘ইউরো ফাইনালের হারটি ছিল খুব কঠিন। আবার সেখান থেকে অনেক কিছু শিখেছিও। আমার তো এমনও মনে হয়, ২০১৬ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়ন হলে এবার হয়তো বিশ্বকাপ জিততে পারতাম না। এবার অনেক বেশি নির্ভার থেকে খেলতে চেয়েছি। রাশিয়া থেকে তাই দারুণ স্মৃতি নিয়ে ফিরছি ফ্রান্সে।’

এই জয়ে ব্যক্তিগত এক মাইলফলকও স্পর্শ করলেন দেশম। মারিও জাগালো ও ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের পর তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে খেলোয়াড় ও অধিনায়কের ভূমিকায় জেতেন বিশ্বকাপ। এটি তাঁকে গর্বিত করছে অবশ্যই, ‘জাগালো ও বেকেনবাওয়ার দুজনই ছিলেন গ্রেট ফুটবলার। টেকনিকালি তাঁরা ভালো; দেখার জন্যও খেলা সুন্দর। আমার খেলা তেমন ছিল না; তবু তো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এখন কোচ হিসেবে জেতার পর খুব স্পেশাল এক ক্লাবের সদস্য হলাম। এটি অবশ্যই আমাকে গর্বিত করছে। নিজের সম্পর্কে বলতে আমি খুব একটা পছন্দ করি না। তবে এটি আমার স্মৃতিতে থাকবে চিরকাল।’

আর ফ্রান্সের এই বিশ্বকাপ জয়কে মহাকাল কিভাবে মনে রাখবে? নতুন কোনো খেলার ধরন, ফরমেশনের বিপ্লব—তেমন কিছুই তো ছিল না তাদের খেলায়! এই ইঙ্গিত করা প্রশ্নে খানিক যেন বিরক্তই দেশম, ‘ফ্রান্স এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তার মানে এই বিশ্বকাপে অন্যরা যা করেছে, আমরা এর চেয়ে বেশি কিছু করেছি। আমাদের দলটি তারুণ্যনির্ভর। কিন্তু ছেলেদের মানসিক দৃঢ়তা অনেক। আজও যেমন আমরা প্রথমার্ধে খুব ভালো খেলিনি। কিন্তু ঠিকই দুই গোল দিয়েছি। আর বিশ্বকাপ ফাইনালে সব মিলিয়ে দিয়েছি চার গোল। আগামী চার বছরের জন্য আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। এটিই সবাই মনে রাখবে সবচেয়ে বেশি।’ শিরোপা জয়ের পথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঁক হিসেবে তিনি মনে রাখছেন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে শেষ ষোলোর জয়টি, ‘বিশ্বকাপের দুটো পর্যায় একেবারে আলাদা। প্রথম রাউন্ড এক রকম; নক আউট পর্ব আরেক রকম। দ্বিতীয় পর্বের শুরুতে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচ ছিল আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওদের হারানোর পর দলের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যায়। বিশ্বকাপ জয়ের বিশ্বাস নিয়ে আমার রাশিয়া এসেছি। তবে আর্জেন্টিনাকে নক আউট পর্বের শুরুতে হারানোর পর আমাদের বিশ্বাস আরো বেড়ে যায়।’

সে বিশ্বাসের প্রতিফলন ফ্রান্সের পরবর্তী খেলাগুলোয়। তারুণ্যে টগবগে দলটি ঠিকই হয়ে যায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। এই দলের অনেকের তো ভবিষ্যতে আবার বিশ্বকাপ জয়ের সম্ভাবনাও দেখেন দেশম, ‘এমবাপ্পে ১৯ বছর বয়সে বিশ্বকাপ জিতল। আমি আশা করছি, ও যেন আবার তা জিততে পারে। অঁরি-ত্রেজেগেরাও ২০ বছরের আগেই বিশ্বকাপ জিতেছিল ১৯৯৮ সালে। কিন্তু ওরা আরেকবার ওই ট্রফি জিততে পারেনি। আমি আশা করছি, কিলিয়ান এবং তারুণনির্ভর এই ফরাসি প্রজন্ম আবার বিশ্বকাপ জিততে পারবে।’

তা জিতুক বা না জিতুক, এই ফ্রান্স দল ইতিহাসের পাতায় পেয়ে গেছে অমরত্ব। সেটিই আরেকবার মনে করিয়ে দেন কোচ দেশম, ‘ফ্রান্সের এই ২৩ জন ফুটবলার অমর হয়ে গেল। কারণ ওরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। আমাদের ছেলেরা অন্য প্রতিযোগিতার শিরোপাও জিতবে হয়তো। সেগুলোকে আমি খাটো করছি না। কিন্তু বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চেয়ে বড় কিছু ফুটবলে হতে পারে না।’

দিদিয়ের দেশমের শেষ বাক্যের সঙ্গে দ্বিমত করার মতো ‘মূর্খ’ ফুটবলবিশ্বে নেই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

আনন্দসাগরে সাঁতার কাটছে ফরাসি খেলোয়াড়রা

আপডেট টাইম : ১০:৩৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফাইনালের ম্যান অব দ্য ম্যাচ আন্তোয়ান গ্রিয়েজমান বেরিয়ে গেলেন হাততালিতে। লুঝনিকির সংবাদ সম্মেলনকক্ষে এরপর ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশমও ঢুকলেন করতালি-বৃষ্টিতে ভিজে। কিন্তু ভিজতে যে আরো বাকি আছে তাঁর! দল বেঁধে ফরাসি খেলোয়াড়রা ঢুকে শ্যাম্পেনের মতো পানি ছিটিয়ে যান দেশমকে। নাচ-গানে, হই-হুল্লোড়ে আনন্দের তুফান বইছে তখন।

বেঞ্জামিন মেন্ডি তো খালি গায়ে টেবিলের ওপর দাঁড়িয়ে শুরু করেন নাচ! দেশম ততক্ষণে ভিজে একশা। শিষ্যরা বেরিয়ে যেতে কোনোক্রমে মাথা-মুখ মুছে তৈরি হচ্ছেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জন্য। তখনই পল পগবার নেতৃত্বে দ্বিতীয় দলের প্রবেশ সংবাদ সম্মেলনকক্ষে। আবারও পানির ছিটানো বিন্দুতে শ্যাম্পেনের আনন্দ। আবারও নাচ-গান, হই-হুল্লোড়। বাঁধনহারা আনন্দে ফ্রান্সের পাগলপারা হয়ে যাওয়া। দেশম তো আর শুধু শুধু বলেননি, ‘আমরা এখন আনন্দের সাগরে সাঁতার কাটছি।’

২০ বছর পর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফ্রান্স; আনন্দ-সাগরে তারা তো সাঁতার কাটবেই।

ট্রফি উঁচিয়ে ধরার পর ঘণ্টাও পেরোয়নি। উদ্যাপন অসমাপ্ত রেখে সংবাদ সম্মেলনে আসতে হয় ফাইনালের ম্যাচসেরা গ্রিয়েজমানকে। বিশ্বকাপ জয়টা তাই তখনো ঠিক আত্মস্থ করতে পারছিলেন না, ‘কেমন লাগছে, এখনো ঠিক বুঝতে পারছি না। বিশ্বকাপ অনেক বড় ব্যাপার। সবাই মিলে আমরা ইতিহাস তৈরি করেছি। আজ রাতে তা উপভোগ করব। কাল ফ্রান্সে গিয়েও তাই। সব ফরাসির সঙ্গে মিলে পার্টি করব।’ তাঁর করা ফ্রি-কিক ফ্রান্সের প্রথম গোলের উৎস। দ্বিতীয়টি এই ফরোয়ার্ডের করা পেনাল্টি থেকে। ভিএআরের সেই সিদ্ধান্ত আনন্দময় চমক দিয়েছে গ্রিয়েজমানকে, ‘সত্যি বলতে কী, রেফারি যখন ভিএআর নেন, আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কেন। পরে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিলে মাথা ঠাণ্ডা রাখি। যে পদ্ধতিতে পেনাল্টি নিই, সেভাবে সফল হই আবার। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে পেরে আমরা সবাই সত্যি খুব খুশি। এখন আমি বিশ্বকাপ ট্রফি সঙ্গে নিয়ে ঘুমাব।’

এমন খুশির উপলক্ষ বছর দুয়েক আগেও এসেছিল। কিন্তু নিজ দেশে ইউরোর ফাইনালে পর্তুগালকে হারাতে পারেনি ফ্রান্স। ২০১৬-র সেই পরাজয় দলকে বড় শিক্ষা দিয়েছে বলে গ্রিয়েজমানের দাবি, ‘হ্যাঁ, দুই বছর আগের পরাজয় আমাদের অনেক শিখিয়েছে। দলে পরিবর্তন এসেছে। অনেক তরুণ খেলোয়াড় এসেছে, যা সাহায্য করেছে খুব। সবার মিলিত চেষ্টাতেই আমরা এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।’ কোচ দেশমের কাছেও দুই বছর আগের পরাজয়ের গুরুত্ব অনেক। সে পরাজয়েই বিশ্বকাপ জয়ের বীজ রোপণ করা হয় বলে তাঁর দাবি, ‘ইউরো ফাইনালের হারটি ছিল খুব কঠিন। আবার সেখান থেকে অনেক কিছু শিখেছিও। আমার তো এমনও মনে হয়, ২০১৬ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়ন হলে এবার হয়তো বিশ্বকাপ জিততে পারতাম না। এবার অনেক বেশি নির্ভার থেকে খেলতে চেয়েছি। রাশিয়া থেকে তাই দারুণ স্মৃতি নিয়ে ফিরছি ফ্রান্সে।’

এই জয়ে ব্যক্তিগত এক মাইলফলকও স্পর্শ করলেন দেশম। মারিও জাগালো ও ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের পর তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে খেলোয়াড় ও অধিনায়কের ভূমিকায় জেতেন বিশ্বকাপ। এটি তাঁকে গর্বিত করছে অবশ্যই, ‘জাগালো ও বেকেনবাওয়ার দুজনই ছিলেন গ্রেট ফুটবলার। টেকনিকালি তাঁরা ভালো; দেখার জন্যও খেলা সুন্দর। আমার খেলা তেমন ছিল না; তবু তো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এখন কোচ হিসেবে জেতার পর খুব স্পেশাল এক ক্লাবের সদস্য হলাম। এটি অবশ্যই আমাকে গর্বিত করছে। নিজের সম্পর্কে বলতে আমি খুব একটা পছন্দ করি না। তবে এটি আমার স্মৃতিতে থাকবে চিরকাল।’

আর ফ্রান্সের এই বিশ্বকাপ জয়কে মহাকাল কিভাবে মনে রাখবে? নতুন কোনো খেলার ধরন, ফরমেশনের বিপ্লব—তেমন কিছুই তো ছিল না তাদের খেলায়! এই ইঙ্গিত করা প্রশ্নে খানিক যেন বিরক্তই দেশম, ‘ফ্রান্স এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তার মানে এই বিশ্বকাপে অন্যরা যা করেছে, আমরা এর চেয়ে বেশি কিছু করেছি। আমাদের দলটি তারুণ্যনির্ভর। কিন্তু ছেলেদের মানসিক দৃঢ়তা অনেক। আজও যেমন আমরা প্রথমার্ধে খুব ভালো খেলিনি। কিন্তু ঠিকই দুই গোল দিয়েছি। আর বিশ্বকাপ ফাইনালে সব মিলিয়ে দিয়েছি চার গোল। আগামী চার বছরের জন্য আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। এটিই সবাই মনে রাখবে সবচেয়ে বেশি।’ শিরোপা জয়ের পথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঁক হিসেবে তিনি মনে রাখছেন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে শেষ ষোলোর জয়টি, ‘বিশ্বকাপের দুটো পর্যায় একেবারে আলাদা। প্রথম রাউন্ড এক রকম; নক আউট পর্ব আরেক রকম। দ্বিতীয় পর্বের শুরুতে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচ ছিল আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওদের হারানোর পর দলের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যায়। বিশ্বকাপ জয়ের বিশ্বাস নিয়ে আমার রাশিয়া এসেছি। তবে আর্জেন্টিনাকে নক আউট পর্বের শুরুতে হারানোর পর আমাদের বিশ্বাস আরো বেড়ে যায়।’

সে বিশ্বাসের প্রতিফলন ফ্রান্সের পরবর্তী খেলাগুলোয়। তারুণ্যে টগবগে দলটি ঠিকই হয়ে যায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। এই দলের অনেকের তো ভবিষ্যতে আবার বিশ্বকাপ জয়ের সম্ভাবনাও দেখেন দেশম, ‘এমবাপ্পে ১৯ বছর বয়সে বিশ্বকাপ জিতল। আমি আশা করছি, ও যেন আবার তা জিততে পারে। অঁরি-ত্রেজেগেরাও ২০ বছরের আগেই বিশ্বকাপ জিতেছিল ১৯৯৮ সালে। কিন্তু ওরা আরেকবার ওই ট্রফি জিততে পারেনি। আমি আশা করছি, কিলিয়ান এবং তারুণনির্ভর এই ফরাসি প্রজন্ম আবার বিশ্বকাপ জিততে পারবে।’

তা জিতুক বা না জিতুক, এই ফ্রান্স দল ইতিহাসের পাতায় পেয়ে গেছে অমরত্ব। সেটিই আরেকবার মনে করিয়ে দেন কোচ দেশম, ‘ফ্রান্সের এই ২৩ জন ফুটবলার অমর হয়ে গেল। কারণ ওরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। আমাদের ছেলেরা অন্য প্রতিযোগিতার শিরোপাও জিতবে হয়তো। সেগুলোকে আমি খাটো করছি না। কিন্তু বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চেয়ে বড় কিছু ফুটবলে হতে পারে না।’

দিদিয়ের দেশমের শেষ বাক্যের সঙ্গে দ্বিমত করার মতো ‘মূর্খ’ ফুটবলবিশ্বে নেই।