হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রথমে শুনেই মনে প্রশ্ন জাগবে, দিদিয়ের দেশমকে এমন অপমানজনক একটা ডাকনাম দেওয়ার কারণটা কী? আর যা–ই হোক, একজন ফুটবলারের জন্য নিশ্চয়ই ‘ওয়াটার ক্যারিয়ার’ কোনো ভালো নাম নয়! যিনি নামটা দিয়েছিলেন, সেই এরিক ক্যান্টোনা অবশ্য পরে অনেকবার ব্যাখ্যায় বলেছেন, ওয়াটার ক্যারিয়ার বলতে তিনি আক্ষরিক অর্থে ‘পানি বহনকারী’ বোঝাননি। মাঝমাঠে দেশম এত দারুণ দক্ষতায় প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে নিজের সতীর্থদের দিতেন, ওটা দেখেই এই নাম।
বিশ্বকাপজয়ী অভিজাত সেই তালিকায় নাম উঠে গেল সাবেক ফরাসি মিডফিল্ডারের। এতবার বলা হয়েছে যে এই কীর্তি গড়া দুজনের নাম বোধ হয় আপনার মুখস্থই হয়ে গেছে: মারিও জাগালো ও ফ্রেঞ্জ বেকেনবাওয়ার। অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে জেতার তালিকা করলে থাকবেন শুধু বেকেনবাওয়ার। বুঝতেই পারছেন, কী বিরল এক অর্জন দেশমের!
খেলোয়াড় হিসেবে যেমন ছিলেন, কোচ হিসেবেও অনেকটা তা-ই। ভীষণ একরোখা, কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পান না একটুও। নইলে কি আর পল পগবাকে ২০১৪ বিশ্বকাপে একাদশ থেকে বাদ দিতে পারেন! কাউকে পাত্তা না দিয়েই ২০১৬ ইউরোতে সুযোগ দিয়েছেন স্যামুয়েল উমতিতিকে, ব্যক্তিগত জীবনে কেলেঙ্কারিতে জড়ানো করিম বেনজেমাকে বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ দিতে দ্বিধা করেননি। বিশ্বকাপে শুরু থেকেই যে দুই উইং ব্যাক লুকাস হার্নান্দেজ আর বেঞ্জামিন পাভারকে খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেটাও তো পছন্দ ছিল না অনেকের।
দলীয় সংহতি বাড়ানোর কিছু টোটকাও আছে দেশমের। খেলোয়াড়দের একসঙ্গে খাওয়া বাধ্যতামূলক, খাওয়াদাওয়ার সময় মোবাইল ব্যবহারও নিষিদ্ধ। তবে এসবে মোটেই আপত্তি নেই খেলোয়াড়দের। কোচের ওপর তাঁদের শতভাগ আস্থা বোঝা যাবে অধিনায়ক হুগো লরিসের কথা শুনলেই, ‘সব কৃতিত্ব তাঁরই (দেশম) পাওনা। পরিকল্পনা সব তিনিই করেন। আমাদের কাজ মাঠে তিনি যেভাবে বলেন, সেভাবে খেলা। এই সাফল্য তাঁরই। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তিনি যা করেছেন, সবকিছুতেই সফল হয়েছেন।’দেশম হয়তো আপনার মন জোগাবে না। খেলোয়াড়ি জীবনেও অঢেল সুখ্যাতি কখনো জোটেনি। কিন্তু আড়ালে নিজের কাজটা ঠিকই করে ফেলতে জানেন। আপনি মনে রাখুন আর না-ই রাখুন, ইতিহাস মনে রাখবে তাঁকে!