হাওর বার্তা ডেস্কঃ ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে কাল মাঠে নামছে বাংলাদেশ ক্রিকটে দল। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেটে শুরু হচ্ছে স্টিভেন রোডস যুগের। তার অধীনে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতে নামছে সাকিবরা। নতুন কোচের অধীনে নতুন স্বপ্ন নিয়ে টেস্ট ম্যাচ দিয়ে নতুনভাবে পথচলা শুরু হচ্ছে টাইগারদের।
স্টিভেন রোডসের অধীনে সফরে দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এরমধ্যে প্রথমটি এ্যান্টিগায় শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
গত নভেম্বরে চন্দিকা হাথুরুসিংহের পদত্যাগের পর কোচ ছাড়া একটি টেস্ট সিরিজ, একটি ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ ও তিনটি টি-২০ সিরিজে অংশ নেয় বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার কাছে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-০ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে একটি ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে রানার্স-আপ হয় টাইগাররা। টি-২০ ফরম্যাটে শ্রীলঙ্কার কাছে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০, শ্রীলঙ্কার মাটিতে নিদাহাস ট্রফিতে রানার্স-আপ ও ভারতের দেরাদুনে আফগানিস্তানের কাছে তিন ম্যাচে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে পূর্ণাঙ্গ সিরিজের আগেই কোচ নিয়োগের ইঙ্গিত দিয়ে রাখে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যেমন কথা তেমন কাজ বিসিবির।
জুনের প্রথম সপ্তাহে ২০২০ সালের আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত রোডসকে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয় বিসিবি। এরপর গেল ২০ জুন প্রথমবারের মত আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন রোডস।
সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর নিয়েই বেশি কথা বলেন রোডস। আসন্ন টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে বাংলাদেশ দল ভালো খেলবে বলে জানান তিনি। এজন্য সিরিজের শুরুটা ভালো চাইছেন রোডস, ‘আমি মনে করি, এই টেস্ট সিরিজ খুব কঠিন হবে না। আমরা টেস্ট ম্যাচ জয়ের সর্বাত্মক চেষ্টা করবো। এজন্য টেস্ট সিরিজে আমাদের শুরুটা ভাল করতে হবে। শুরুটা ভালো হলে পরের দিকে কাজগুলো সহজ হয়ে যাবে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে, ক্রিকেট কোনো মহাকাশ বিজ্ঞান নয়। এখানে আপনাকে মাঠের খেলাটা ভালভাবে খেলতে হবে এবং প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। আমরা চেষ্টা করবো ওয়েস্ট ইন্ডিজের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে।’
টেস্ট সিরিজ কঠিন হবে না বলে মনে করলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাউন্সি উইকেট বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মনে করেন রোডস। তবে মাত্রই নিজ মাটিতে শ্রীলংকাকে টেস্ট সিরিজে হারিয়েছে ক্যারিবিয়রা।
রোডস বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট সিরিজটি দেখলে বুঝা যাবে, সেখানকার উইকেট বাউন্সি। যা পেস বোলারদের জন্য সহায়ক হবে। আমার মনে হয়, আমাদের বিপক্ষে সিরিজেও একই উইকেট থাকবে। তাই আমরা আমাদের সেরা প্রস্তুতি নেয়ার চেষ্টার করবো।’
দলনায়ক সাকিব আল হাসানকে ছাড়া গেল ২৪ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজ গিয়ে পৌঁছায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে ঈদ পালন করেন সাকিব। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজে দলের সাথে যোগ দেন তিনি।
টেস্ট সিরিজের আগে একটি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রেসিডেন্ট একাদশের বিপক্ষে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচটি ড্র হয়। তবে ব্যাটসম্যান ও বোলাররা নিজেদের ভালোভাবেই ঝালিয়ে নিতে পারেন।
ব্যাটিং-এ তামিম ইকবাল ১২৫, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১০২ ও অধিনায়ক সাকিব ৬৭ রান করেন। বল হাতে বাংলাদেশের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন আবু জায়েদ-শফিউল ইসলাম। একটি করে উইকেট শিকার করেন রুবেল হোসেন-কামরুল ইসলাম রাব্বি-মাহমুদুল্লাহ-মোমিনুল হক। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ৪০৩ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৮ উইকেটে ৩১০ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রেসিডেন্ট একাদশ। তাই একটি প্রস্তুতি ম্যাচের অভিজ্ঞতা নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৬টি টেস্ট সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। সবগুলোই দুই ম্যাচের। এরমধ্যে ২০০৯ সালের সফরে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছিলো বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে হারে টাইগাররা।
বাংলাদেশ দল : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, মমিনুল হক, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম রাব্বি, রুবেল হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, আবু জায়েদ, নাজমুল হোসেন শান্ত ও শফিউল ইসলাম।