হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রচলিত বিভিন্ন জাতের নারিকেল গাছ থেকে ফলন পেতে ৬ থেকে ৭ বছর লেগে যায়। এরপর গাছপ্রতি ৪০-৫০টি নারিকেল পাওয়া যায়। তবে ভিয়েতনামের ‘ওপি’ নারিকেল গাছের ফলন পেতে সময় লাগে আড়াই থেকে তিন বছর। সর্বোচ্চ পাঁচ ফুট উচ্চতার এই জাতের গাছে প্রথম কিস্তিতে নারিকেল ধরে ২০০-২৫০টি। ফলন পাওয়া যাবে ৪০-৫০বছর। শুধু নারিকেল নয়, ওপি ডাবের পানি অত্যন্ত সুস্বাদু। প্রতিটি ডাবে পানির পরিমাণ প্রায় ২০০-২৫০এমএল।
অপার সম্ভাবনাময় ‘ওপি নারিকেল’ চাষ করে গাজীপুরের চাষীদের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই জাতের নারিকেল গাছের উচ্চতা কম হওয়ায় সহজেই পরিচর্যা ও বালাই ব্যবস্থা নেয়া যায়।
গাজীপুরের ভবানীপুর হর্টিকালচার নার্সারির উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া পরিবর্তন ডটকমকে জানান, গাজীপুর ছাড়াও জেলার পার্শ্ববর্তী ভালুকা, ত্রিশালসহ বিভিন্ন এলাকার চাষীদের প্রশিক্ষণের পর ওপি নারিকেলের বাগান তৈরি করে দেয়া হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে গত দুই বছরে গাজীপুরে প্রায় আড়াই হাজার চাষীকে ওপি নারিকেল চাষের ওপর প্রশিক্ষণ, ভাতা ও বিনামূল্য চারা দেয়া হয়েছে।
এই নার্সারি ছাড়াও কালিয়াকৈরের মৌচাক হর্টিকালচার নার্সারি, গাজীপুর সিটির নাওজোর ও পোড়াবাড়ী এলাকার হর্টিকালচার নার্সারিতে ওপি নারিকেল চারা বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ মো. মেহেদী মাসুদ পরিবর্তন ডটকমকে জানান, বরিশাল হর্টিকালচার নার্সারিতে ৫০০ নারিকেল চারা রোপণ করা হয়েছিল। সেখানে মাত্র ২২ মাসেই গাছে ফুল ধরেছে।
তিনি জানান, এই প্রকল্পের মেয়াদে ভিয়েতনাম থেকে ১০ লাখ ওপি নারিকেল চারা আনার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৬ লাখ চারা আনা হয়েছে। দেশে ১০ লাখ মাতৃচারা হয়ে যাবে, তখন এই গাছের ফল থেকে চারা উৎপাদন করে আমরা নিজেরাই চাষীদের মাঝে সরবরাহ করতে পারব।
বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের অনেক চাষী ওপি নারিকেল চাষ শুরু করেছেন। অপেক্ষাকৃত উঁচু ধানী জমির চারিপাশে ওপি নারিকেল চাষ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষের পাশাপাশি ওপি নারিকেল চাষ হচ্ছে। এ জাতের নারিকেল সারাবছর ফল দেয়।ভিয়েতনাম থেকে আনা প্রতিটি ওপি নারিকেল চারার সরকারি বিক্রি মূল্য ৫০০ টাকা বলেও জানান কৃষিবিদ মো. মেহেদী মাসুদ।