হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের সব নাগরিকের জন্য পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে গত ২১ মে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থ সচিব মুসলিম চৌধুরীকে একটি চিঠি লেখেন। ওই চিঠিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সর্বজনীন পেনশনের রূপরেখা এবার ঘোষণা করব। তার বাস্তবায়ন হয়তো সামান্য শুরু হবে। সর্বজনীন পেনশনে পেনশন সবার জন্য সমান হবে। সর্বজনীন পেনশনে সব পেনশনার পেনশনের জন্য কন্ট্রিবিউট করবেন; শুধু যারা গরিব তারা ছাড়া সবাই। এক্ষেত্রে গরিবের সীমারেখা নির্ধারণ করতে হবে খাদ্যে নিম্নতম কেলোরিসীমা ঠিক করে।’
এরপর অর্থমন্ত্রী প্রশ্ন রেখেছেন, ‘এ বিষয়ে কাজ কতদূর এগিয়েছে এবং আমরা কি ঘোষণা দিতে পারব?’
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল ক্ষমতায় গেলে চালু করা হবে বেসরকারি কর্মজীবীদের জন্য পেনশন। বিষয়টি নিয়ে কয়েক বছর ধরে কাজও করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন দেশে গিয়ে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সহায়তার জন্য এগিয়ে এসেছিল দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংকও। কথা ছিল গত অর্থবছর (২০১৭-১৮) থেকেই পরীক্ষামূলকভাবে পাইলট প্রকল্প ভিত্তিতে সর্বজনীন পেনশন চালুর। প্রস্তুতির অভাবে সেটি হয়নি। বলা হয়েছিল পরের বাজেটের কথা। সেই বাজেটও আসন্ন। আর এ অবস্থায় সর্বজনীন পেনশন নিয়ে খোদ অর্থমন্ত্রী প্রশ্ন করছেন অর্থ সচিবকে। বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করা হয় অর্থ সচিব মুসলিম চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, আসছে বাজেট থেকে সর্বজনীন পেনশন চালুর যে কথা ছিল, যথাযথ প্রস্তুতির অভাবে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। তবে নতুন বাজেটে সর্বজনীন পেনশনের ধরনটি কী হবে, কারা পাবেন, কারা বাস্তবায়ন করবে, সে বিষয়ে একটি রূপরেখা থাকতে পারে বলে জানান সচিব।
মুসলিম চৌধুরী জানান, সর্বজনীন পেনশন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হচ্ছে একটি শক্তিশালী বন্ড মার্কেট তৈরি না হওয়া। তিনি বলেন, বেসরকারি কর্মজীবীদের পেনশনের টাকা তো সরকার দেবে না। পেনশনার দেবেন, মালিকপক্ষ দেবেন। সেই অর্থ বন্ড মার্কেটে বিনিয়োগ হবে। তার মুনাফা যোগ করে একটি অঙ্ক পেনশন হিসেবে দেওয়া হবে। কিন্তু আমাদের সেই বন্ড মার্কেটই তো তৈরি হয়নি, যেখানে আমরা পেনশনের অর্থ বিনিয়োগ করতে পারি। এ ছাড়া সর্বজনীন পেনশন চালুর আগে সেই পেনশন দেওয়ার জন্য একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করতে হবে। তহবিল গঠন করতে হবে। এসব প্রস্তুতির অভাবেই এবার বাজেটে সর্বজনীন পেনশন চালুর ঘোষণাটি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান অর্থসচিব।