হাওর বার্তা ডেস্কঃ যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারের সঙ্গে দ্বীপখ্যাত ঝাঁপা গ্রাম। এ গ্রামের লোকদের নৌকায় করে আসতে হয় রায়গঞ্জ বাজারে। গ্রামবাসীর মত শতশত শিক্ষার্থীদেরও স্কুলে যাওয়ার মাধ্যম নৌকা। নিজেদের দুর্দশা লাঘবে এবার এগিয়ে এলেন গ্রামবাসী সকলে। বাঁওড়ের ওপর নিজ অর্থায়নে উদ্যোগ নেন একটি ভাসমান সেতু নির্মাণের। সেতুটি নির্মাণ করে তার নাম দিলেন ‘বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু’।
সরেজমিনে জানা যায়, বাঁওড়ের উপর নির্মিত দৃশ্যমান দীর্ঘতম জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতুর আঁধা কিলোমিটার দক্ষিণে গুরুচরণ খেয়াঘাটে ভাসমান সেতু-২ নির্মাণের কাজ চলছে৷ স্থানীয়রাই এ সেতুর নাম ঠিক করেছেন বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু।
স্থানীয় ১৫০জন লোক ঝাঁপা উন্নয়ন সম্মিলিত ফাউন্ডেশন করে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ করছেন। এই সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করতে প্রায় কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে জানান, সেতু নির্মাণ কর্তৃপক্ষ। আগামী এক মাসের মধ্যেই সেতু নির্মাণ করে চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ঝাঁপা গ্রাম উন্নয়ন ফাউন্ডেশন সভাপতি আব্দুল জলিল জানান, ভাসমান সেতু নির্মাণে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে গণ-বৈঠকের আয়োজন করা হয়৷ বৈঠকে ভাসমান সেতু নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পরের মাস থেকেই শুরু হয় সেতু তৈরির কাজ৷ ১২ ফুট চওড়া এবং প্রায় হাজার ফুট লম্বা ভাসমান সেতুটির কাজ প্রায় শেষ হয়েছে৷ আগামী এক মাসের মধ্যে সেতু চলাচলের উপযোগী হবে বলে আশা করছেন তারা।
তিনি আরও জানান, সেতুর উপর দিয়ে এলাকার লোকজন খুব সহজেই চলাচল করতে পারবেন৷ মোটরসাইকেল, ভ্যান, নসিমন প্রাইভেট কারসহ মাইক্রোবাস পারাপার হতে পারবে বলে মত দেন তিনি।
কথা হয় সেতু তৈরির প্রধান কারিগর জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে। তিনি জানান, এ সেতু তৈরির নকশা অনুযায়ী গত দুই-আড়াই মাস ধরে পাঁচ জন সহকারী কারিগর নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি৷
খণ্ড খণ্ড করে সেতু তৈরি করা হচ্ছে৷ পরে তৈরিকৃত খণ্ডগুলো জয়েন্ট করা হবে৷ ৬৫০ ফুট লম্বা ভাসমান সেতুর জন্য, ২০ ফুট লম্বা করে মোট ৩৫টি খণ্ড তৈরি করা হবে৷ ইতোমধ্যে সবকয়টি খণ্ড তৈরির কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে৷
এ সেতু তৈরিতে ব্যারেল ৯৪৫ পিস, লোহার শিট ১৯ টন, লোহার অ্যাঙ্গেল ৯০ টন ব্যবহার করা হয়েছে৷
এছাড়া, গুরুচরণ ঘাটে সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ২শ’ ফুটের ঢালাই বি্জের কাজ৷ আর সেতুর রাজগঞ্জ মুখে কাঠের গুড়ি পুতে ১৫ ফুট চওড়া করে প্রায় দেড় শত ফুট লম্বা কাঠের রাস্তা তৈরির কাজ চলছে৷
ভাসমান সেতু তৈরি ফাউন্ডেশনের সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ জানান, বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতুর কাজ প্রায় শেষের দিকে। ঈদের পরপরই চলাচলের উপযোগী করা হবে৷
জানতে চাইলে ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সামছুল হক মন্টু বলেন, চলতি বছরের শুরুতেই বাঁওড়ে উপর জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু নামে একটি ভাসমান সেতু চালু করা হয়েছে৷ আরও একটি ভাসমান সেতু তৈরি হলে এলাকায় আরও এলাকাবাসীর কষ্ট লাঘব হবে।