ঢাকা ০৯:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কটিয়াদীতে পাট ফলনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৪:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ মে ২০১৮
  • ২৮৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ষড়ঋতু পরিক্রমার এই দেশ কিন্তু ঋতু বৈচিত্র্য যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। গ্রীষ্ম বর্ষা শীত বসন্ত এর বর্ণ বৈশিষ্ট্য আলাদা করে খুব একটা চোখে পড়ে না। বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ দু’মাস গ্রীষ্মকাল হলেও এবার বৈশাখের শুরুতেই যেন বর্ষা নেমে এসেছে। যে সময়ে যে আবহাওয়ায় কৃষকের জমির পাট বড় হওয়ার কথা সেই সময়ে অকাল বর্ষণে পাটখেত বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় পাটের চারা পানিতে তলিয়ে গেছে।

বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে পাট ফলনে। দিশাহারা কৃষক বৈরী প্রকৃতির সঙ্গে পাট ফলনে যুদ্ধ করে চলছে। অতিরিক্ত যত্ন নিচ্ছে অতিরিক্ত  শ্রম দিচ্ছে ব্যয় করছে মাত্রাতিরিক্ত অর্থ আশায় বুকবাঁধে, স্বপ্নবান কৃষক। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কটিয়াদী উপজেলার পৌর এলাকা ও ৯টি ইউনিয়নে চলতি বছর ১৭৩০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার বেইল। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।

গত বছর ৩ হাজার হেক্টরের উপরে জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছিল। উৎপাদন খরচ বেশি, বাজার মূল্য কম তার উপর বৈরী আবহাওয়ার কারণে কৃষক পাট চাষে দিন দিন নিরুৎসাহী হয়ে পড়ছে। এ বছরও বৈরী আবহাওয়া দীর্ঘস্থায়ী হলে লক্ষমাত্রা অর্ধেকে নেমে আসবে। মৌসুমের শুরু থেকেই শিলা ও অতিবৃষ্টির কারণে পাট খেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জলাবদ্ধতায় তলিয়ে গেছে। ফলে পাটগাছ শক্ত হতে পারেছে না। দুর্বল হয়ে হেলে পড়ছে। এতে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে পাটের বাজারে।

গত এক সপ্তাহ যাবত কটিয়াদী বাজারে প্রতি মণ পাট গড়ে ২০০ টাকা বেড়েছে। পাট ব্যবসায়ী শিবু প্রসাদ বণিক ও অনাথ বন্ধু সাহা জানান, আগামী মৌসুমে পাট উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কায় মিলগুলো পাট কিনে মজুদ করছে। ফলে কিছুটা দাম বেড়েছে। উপজেলার চান্দপুর গ্রামের মোস্তফা কামাল নান্দু বলেন, এলাকার সকল জমি বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বট জাতের পাট এখন পর্যন্ত টিকে থাকলেও সুতি ও তোষা পাটে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, বৃষ্টিতে কিছু ক্ষতি হলেও আর বৃষ্টি না হলে বা আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে পাটের ফলনে তেমন ক্ষতির কোন সম্ভাবনা থাকবে না। তবে নানা কারণে কৃষক পাট চাষে নিরুৎসাহীত হয়ে তার পরিবর্তে আউশ ধান আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

কটিয়াদীতে পাট ফলনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে

আপডেট টাইম : ১০:২৪:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ষড়ঋতু পরিক্রমার এই দেশ কিন্তু ঋতু বৈচিত্র্য যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। গ্রীষ্ম বর্ষা শীত বসন্ত এর বর্ণ বৈশিষ্ট্য আলাদা করে খুব একটা চোখে পড়ে না। বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ দু’মাস গ্রীষ্মকাল হলেও এবার বৈশাখের শুরুতেই যেন বর্ষা নেমে এসেছে। যে সময়ে যে আবহাওয়ায় কৃষকের জমির পাট বড় হওয়ার কথা সেই সময়ে অকাল বর্ষণে পাটখেত বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় পাটের চারা পানিতে তলিয়ে গেছে।

বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে পাট ফলনে। দিশাহারা কৃষক বৈরী প্রকৃতির সঙ্গে পাট ফলনে যুদ্ধ করে চলছে। অতিরিক্ত যত্ন নিচ্ছে অতিরিক্ত  শ্রম দিচ্ছে ব্যয় করছে মাত্রাতিরিক্ত অর্থ আশায় বুকবাঁধে, স্বপ্নবান কৃষক। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কটিয়াদী উপজেলার পৌর এলাকা ও ৯টি ইউনিয়নে চলতি বছর ১৭৩০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার বেইল। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।

গত বছর ৩ হাজার হেক্টরের উপরে জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছিল। উৎপাদন খরচ বেশি, বাজার মূল্য কম তার উপর বৈরী আবহাওয়ার কারণে কৃষক পাট চাষে দিন দিন নিরুৎসাহী হয়ে পড়ছে। এ বছরও বৈরী আবহাওয়া দীর্ঘস্থায়ী হলে লক্ষমাত্রা অর্ধেকে নেমে আসবে। মৌসুমের শুরু থেকেই শিলা ও অতিবৃষ্টির কারণে পাট খেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জলাবদ্ধতায় তলিয়ে গেছে। ফলে পাটগাছ শক্ত হতে পারেছে না। দুর্বল হয়ে হেলে পড়ছে। এতে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে পাটের বাজারে।

গত এক সপ্তাহ যাবত কটিয়াদী বাজারে প্রতি মণ পাট গড়ে ২০০ টাকা বেড়েছে। পাট ব্যবসায়ী শিবু প্রসাদ বণিক ও অনাথ বন্ধু সাহা জানান, আগামী মৌসুমে পাট উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কায় মিলগুলো পাট কিনে মজুদ করছে। ফলে কিছুটা দাম বেড়েছে। উপজেলার চান্দপুর গ্রামের মোস্তফা কামাল নান্দু বলেন, এলাকার সকল জমি বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বট জাতের পাট এখন পর্যন্ত টিকে থাকলেও সুতি ও তোষা পাটে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, বৃষ্টিতে কিছু ক্ষতি হলেও আর বৃষ্টি না হলে বা আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে পাটের ফলনে তেমন ক্ষতির কোন সম্ভাবনা থাকবে না। তবে নানা কারণে কৃষক পাট চাষে নিরুৎসাহীত হয়ে তার পরিবর্তে আউশ ধান আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।