ঢাকা ১১:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৌলভীবাজারে সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু হয়নি আশঙ্কায় কৃষকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ মে ২০১৮
  • ৩১২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ বছর বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে মৌলভীবাজারে। তবে এখনও সরকারি ক্রয় শুরু না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাওরের কৃষকরা। বাধ্য হচ্ছেন কম দামে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে ধান বিক্রি করতে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মৌলভীবাজারে ৫৪ হাজার ১২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যা সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার থেকে ২ হাজার হেক্টর বেশি। সে হিসেবে চাল উৎপাদিত হবে দুই লাখ ছয় হাজার ৩২৫ মেট্রিক টন। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সারা দেশের চালের বাজারে যুক্ত হবে।

তবে বাম্পার উৎপাদনের পরেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। এ বছর প্রতিটি কৃষকদের সঙ্গে তেমন বিরূপ আচরণ করে নি। ফসল কাটার আগ মুহূর্তে ব্লাস্ট রোগ এবং বৃষ্টিতে কিছুটা ক্ষতি হলেও তা কৃষকদের তেমন ভোগান্তিতে ফেলতে পারে নি। কিন্তু ভালভাবে ধান উৎপাদন করতে পারলেও তা বিক্রি করে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না কৃষকরা।

Moulovibazarমৌলভীবাজার জেলায় দেশের বৃহৎ হাওর হাকালুকির অবস্থান। হাওর অঞ্চলে আগে আগে সরকারের ধান কেনার সিদ্ধান্ত থাকলেও মৌলভীবাজারে এখনও তা শুরু হয়নি। কৃষকরা স্থানীয়ভাবে ধান বিক্রি করতে সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে যোগাযোগ করছে। সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু না হওয়ায় ফসলের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকরা।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাওর এলাকায় ধান শুকানো ও রক্ষণাবেক্ষণ সমস্যার কথা বিবেচনা করে সিলেট বিভাগের অন্যান্য জেলায় সরকারিভাবে বোরো ধান ক্রয় শুরু হয়েছে। তবে মৌলভীবাজার জেলায় সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের নির্দেশনা এখনও আসেনি। তাই সরকারি হিসেবে ২৬ টাকা কেজি ধরে এক মন ধানের দাম ১০৪০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও জেলার কৃষকরা স্থানীয় বাজারে প্রতিমন ধান ৫০০/৬০০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

কৃষকরা জানান তাদের এক বিঘা জমিতে ধান আবাদ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ছয় হাজার টাকা। বর্তমান বাজারের দামে তাদের খরচই তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অধিকাংশ কৃষকে উৎপাদন খরচ পরিশোধের জন্য করতে ধান কাটার পরপরই তা বিক্রি করতে হয়। কিন্তু সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু না হওয়ায় মৌলভীবাজারে কৃষকরা দিনমজুরের টাকাসহ দেনা পরিশোধের জন্য বাধ্য হয়েই কম দামে ধান বিক্রি করছে।

জেলার কাওয়াদিঘী হাওর পাড়ের রমিজ উদ্দিন, কামাল উদ্দিনসহ কয়েকজন কৃষক জানিয়েছেন, সরকারিভাবে ক্রয় শুরু না হওয়ায় সার-বীজসহ বোরো আবাদের যাবতীয় দেনা পরিশোধ করতে তারা ৫০০/৬০০ টাকা মন দরে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ধান ব্যবসায়ী জানান, যতদিন সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু না হবে ততদিন তারা কম দানে ধান কিনতে পারবেন। অনেকেই আবার সেই ধান বেশি দামে বিক্রির জন্য কম দামে কিনে মজুদ করছেন।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোজ কান্তি দাস চৌধুরী জানান, মৌলভীবাজারে ধান ক্রয়ের নির্দেশনা আসেনি। এজন্য আমরা ধান ক্রয় শুরু করতে পারিনি। লক্ষ্যমাত্রাও জানানো হয়নি। ক্রয়ের নির্দেশনা পেলেই ধান ক্রয় শুরু হবে। এ বছর সরকার প্রতি কেজি ধানের মূল্য নির্ধারণ করেছে ২৬ টাকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মৌলভীবাজারে সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু হয়নি আশঙ্কায় কৃষকরা

আপডেট টাইম : ১১:০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ বছর বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে মৌলভীবাজারে। তবে এখনও সরকারি ক্রয় শুরু না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাওরের কৃষকরা। বাধ্য হচ্ছেন কম দামে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে ধান বিক্রি করতে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মৌলভীবাজারে ৫৪ হাজার ১২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যা সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার থেকে ২ হাজার হেক্টর বেশি। সে হিসেবে চাল উৎপাদিত হবে দুই লাখ ছয় হাজার ৩২৫ মেট্রিক টন। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সারা দেশের চালের বাজারে যুক্ত হবে।

তবে বাম্পার উৎপাদনের পরেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। এ বছর প্রতিটি কৃষকদের সঙ্গে তেমন বিরূপ আচরণ করে নি। ফসল কাটার আগ মুহূর্তে ব্লাস্ট রোগ এবং বৃষ্টিতে কিছুটা ক্ষতি হলেও তা কৃষকদের তেমন ভোগান্তিতে ফেলতে পারে নি। কিন্তু ভালভাবে ধান উৎপাদন করতে পারলেও তা বিক্রি করে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না কৃষকরা।

Moulovibazarমৌলভীবাজার জেলায় দেশের বৃহৎ হাওর হাকালুকির অবস্থান। হাওর অঞ্চলে আগে আগে সরকারের ধান কেনার সিদ্ধান্ত থাকলেও মৌলভীবাজারে এখনও তা শুরু হয়নি। কৃষকরা স্থানীয়ভাবে ধান বিক্রি করতে সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে যোগাযোগ করছে। সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু না হওয়ায় ফসলের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকরা।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাওর এলাকায় ধান শুকানো ও রক্ষণাবেক্ষণ সমস্যার কথা বিবেচনা করে সিলেট বিভাগের অন্যান্য জেলায় সরকারিভাবে বোরো ধান ক্রয় শুরু হয়েছে। তবে মৌলভীবাজার জেলায় সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের নির্দেশনা এখনও আসেনি। তাই সরকারি হিসেবে ২৬ টাকা কেজি ধরে এক মন ধানের দাম ১০৪০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও জেলার কৃষকরা স্থানীয় বাজারে প্রতিমন ধান ৫০০/৬০০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

কৃষকরা জানান তাদের এক বিঘা জমিতে ধান আবাদ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ছয় হাজার টাকা। বর্তমান বাজারের দামে তাদের খরচই তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অধিকাংশ কৃষকে উৎপাদন খরচ পরিশোধের জন্য করতে ধান কাটার পরপরই তা বিক্রি করতে হয়। কিন্তু সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু না হওয়ায় মৌলভীবাজারে কৃষকরা দিনমজুরের টাকাসহ দেনা পরিশোধের জন্য বাধ্য হয়েই কম দামে ধান বিক্রি করছে।

জেলার কাওয়াদিঘী হাওর পাড়ের রমিজ উদ্দিন, কামাল উদ্দিনসহ কয়েকজন কৃষক জানিয়েছেন, সরকারিভাবে ক্রয় শুরু না হওয়ায় সার-বীজসহ বোরো আবাদের যাবতীয় দেনা পরিশোধ করতে তারা ৫০০/৬০০ টাকা মন দরে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ধান ব্যবসায়ী জানান, যতদিন সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু না হবে ততদিন তারা কম দানে ধান কিনতে পারবেন। অনেকেই আবার সেই ধান বেশি দামে বিক্রির জন্য কম দামে কিনে মজুদ করছেন।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোজ কান্তি দাস চৌধুরী জানান, মৌলভীবাজারে ধান ক্রয়ের নির্দেশনা আসেনি। এজন্য আমরা ধান ক্রয় শুরু করতে পারিনি। লক্ষ্যমাত্রাও জানানো হয়নি। ক্রয়ের নির্দেশনা পেলেই ধান ক্রয় শুরু হবে। এ বছর সরকার প্রতি কেজি ধানের মূল্য নির্ধারণ করেছে ২৬ টাকা।