ঢাকা ১২:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে অত্যন্ত সীমিত সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা উপকৃত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:২৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ মে ২০১৮
  • ৩২০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ত্রিশ শতাংশ কোটা সুবিধা দিয়েছিল সরকার। স্বাধীনতার এতবছরে এই কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে কতজন মুক্তিযোদ্ধা উপকৃত হয়েছেন এমন প্রশ্ন রেখেছেন বীরপ্রতীক খেতাপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. জে. (অব.) এম. হারুন-অর-রশিদ।

টিভিএন-এর নিজস্ব স্টুডিওতে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কোটা ব্যবস্থার সুবিধা নিতে পেরেছেন অত্যন্ত সীমিত সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, যেহেতু প্রত্যন্ত অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেশি, যাদের অধিকাংশই নিম্নমধ্যবিত্ত। কৃষক, শ্রমিকেরাই তো বেশিরভাগ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেই সময়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন অত্যন্ত জরুরি ছিল। রাষ্ট্রের জন্যও একটি দায়িত্বপূর্ণ কাজ ছিল যে, তাদেরকে যেন পুনর্বাসন করা যায়। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কারণ যাতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধারা এই সুযোগের মাধ্যমে তাদের আয়, রুটি-রুজির ব্যবস্থা করতে পারেন। যখন এই কোটাপ্রথা প্রচলন হলো তখন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত যদি আপনি একটা পরিসংখ্যান নেন, আমার কাছে পরিসংখ্যান নেই, আমি অনেক জায়গায় জিজ্ঞেস করেছি, আমার প্রশ্ন হচ্ছে কতজন মুক্তিযোদ্ধা এই কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন? অত্যন্ত সীমিত সংখ্যক।

তিনি আরও বলেন, আমার প্রশ্ন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যদি আমি বেনিফিট পাই, তাহলে আমি তো একটা সুবিধা পেয়েছি। এর মাধ্যমে আমার একটা উত্তরণ ঘটেছে। আমার এই উত্তরণের পরবর্তীতে তো একই সুবিধা আমার সন্তানের পাওয়ার কথা নয়। কারণ আমি তো একটা বেনিফিট নিয়ে একটা অবস্থানে এসেছি। আমার তো দরকার নেই, যার দরকার তাকেই এই সুবিধা দিতে হবে।

লে. জে. (অব.) হারুন-অর-রশিদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিভিন্ন বেনিফিট পেয়ে আমি আমার ছেলেকে ঢাকা শহরে ভালো জায়গায় পড়ালেখা করালাম, সে ভালো করল। এখন তার ছেলেকেও কোটার সুবিধা দিতে হবে তাহলে তো হলো না। কোটা তো সেই মুক্তিযোদ্ধার দরকার, যিনি ঢাকা শহরে আসতে পারেননি, কোটার বাইরে এখনো রয়ে গেছেন তাকে প্রয়োজনীয় সুবিধা নিতে হবে। সিস্টেমটা ওইভাবেই করতে হবে, যিনি একবার মুক্তিযোদ্ধার সুবিধা পেয়েছেন তার আর দরকার নেই।

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ব্যবসা করতে যাবেন তাকে আপনি কি সুবিধা দেবেন? যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি করতে যাবেন তাকে কী বেনিফিট আপনি দেবেন। যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এনজিওতে চাকরি করতে যাবে তাকে কী সুবিধা দেবেন? তার মানে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা শুধুমাত্র সরকারি চাকরি ছাড়া আর কোথাও থেকে কোনো বেনিফিট পাচ্ছে না। শুধুমাত্র সরকারি চাকরিতে এলেই আপনি সুবিধা পাবেন, এটা আরেকটি ডিসক্রেমিনেশন।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য যে কোটা তা নিয়ে বিরাট রাজনীতি আছে। যার কারণে আজও মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য দরখাস্ত পড়ছে। কারণ, আপনি সরকারি কোটা ব্যবস্থা দিয়েছেন। প্রতিদিন তো মুক্তিযোদ্ধা জন্ম লাভ করতে পারে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে অত্যন্ত সীমিত সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা উপকৃত

আপডেট টাইম : ০৯:২৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ত্রিশ শতাংশ কোটা সুবিধা দিয়েছিল সরকার। স্বাধীনতার এতবছরে এই কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে কতজন মুক্তিযোদ্ধা উপকৃত হয়েছেন এমন প্রশ্ন রেখেছেন বীরপ্রতীক খেতাপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. জে. (অব.) এম. হারুন-অর-রশিদ।

টিভিএন-এর নিজস্ব স্টুডিওতে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কোটা ব্যবস্থার সুবিধা নিতে পেরেছেন অত্যন্ত সীমিত সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, যেহেতু প্রত্যন্ত অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেশি, যাদের অধিকাংশই নিম্নমধ্যবিত্ত। কৃষক, শ্রমিকেরাই তো বেশিরভাগ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেই সময়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন অত্যন্ত জরুরি ছিল। রাষ্ট্রের জন্যও একটি দায়িত্বপূর্ণ কাজ ছিল যে, তাদেরকে যেন পুনর্বাসন করা যায়। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কারণ যাতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধারা এই সুযোগের মাধ্যমে তাদের আয়, রুটি-রুজির ব্যবস্থা করতে পারেন। যখন এই কোটাপ্রথা প্রচলন হলো তখন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত যদি আপনি একটা পরিসংখ্যান নেন, আমার কাছে পরিসংখ্যান নেই, আমি অনেক জায়গায় জিজ্ঞেস করেছি, আমার প্রশ্ন হচ্ছে কতজন মুক্তিযোদ্ধা এই কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন? অত্যন্ত সীমিত সংখ্যক।

তিনি আরও বলেন, আমার প্রশ্ন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যদি আমি বেনিফিট পাই, তাহলে আমি তো একটা সুবিধা পেয়েছি। এর মাধ্যমে আমার একটা উত্তরণ ঘটেছে। আমার এই উত্তরণের পরবর্তীতে তো একই সুবিধা আমার সন্তানের পাওয়ার কথা নয়। কারণ আমি তো একটা বেনিফিট নিয়ে একটা অবস্থানে এসেছি। আমার তো দরকার নেই, যার দরকার তাকেই এই সুবিধা দিতে হবে।

লে. জে. (অব.) হারুন-অর-রশিদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিভিন্ন বেনিফিট পেয়ে আমি আমার ছেলেকে ঢাকা শহরে ভালো জায়গায় পড়ালেখা করালাম, সে ভালো করল। এখন তার ছেলেকেও কোটার সুবিধা দিতে হবে তাহলে তো হলো না। কোটা তো সেই মুক্তিযোদ্ধার দরকার, যিনি ঢাকা শহরে আসতে পারেননি, কোটার বাইরে এখনো রয়ে গেছেন তাকে প্রয়োজনীয় সুবিধা নিতে হবে। সিস্টেমটা ওইভাবেই করতে হবে, যিনি একবার মুক্তিযোদ্ধার সুবিধা পেয়েছেন তার আর দরকার নেই।

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ব্যবসা করতে যাবেন তাকে আপনি কি সুবিধা দেবেন? যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি করতে যাবেন তাকে কী বেনিফিট আপনি দেবেন। যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এনজিওতে চাকরি করতে যাবে তাকে কী সুবিধা দেবেন? তার মানে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা শুধুমাত্র সরকারি চাকরি ছাড়া আর কোথাও থেকে কোনো বেনিফিট পাচ্ছে না। শুধুমাত্র সরকারি চাকরিতে এলেই আপনি সুবিধা পাবেন, এটা আরেকটি ডিসক্রেমিনেশন।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য যে কোটা তা নিয়ে বিরাট রাজনীতি আছে। যার কারণে আজও মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য দরখাস্ত পড়ছে। কারণ, আপনি সরকারি কোটা ব্যবস্থা দিয়েছেন। প্রতিদিন তো মুক্তিযোদ্ধা জন্ম লাভ করতে পারে না।