হাওর বার্তা ডেস্কঃ জমিতে বাতাসে দুলছে সোনালি ফসল। কৃষকের বুক ভরা স্বপ্ন। হঠাৎ করেই মেঘে ঢেকে গেল আকাশ, অবিরত শোনা যাচ্ছে বজ্রপাতের দুনিয়া কাঁপানো গর্জন, এই বোধয় ঝড় হবে সাথে প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি। ধান গোলায় ভরার স্বপ্নটুকু শিলাবৃষ্টির আঘাতে চুরমার হওয়ার ভয় এখন সব কৃষকের।
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে মাঠজুড়ে হাইব্রিড, ঊফশী ও স্থানীয় জাতের বোরো আবাদের পাঁকা-আধাপাকা সোনালি ধান। উপজেলায় এবার ধানের বাম্পার ফলন হলেও প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবে কৃষকরা মাঠের ফসল ঘরে তুলতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন। ফলে ধানের বাম্পার ফলনেও ঝড় ও টানা বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি কৃষকের স্বপ্ন কেড়ে নিচ্ছে। আকাশে মেঘ দেখলেই কৃষকের মনে যত ভয় জমা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলায় দিগন্তজোড়া সোনালী ধানের সমারোহ। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফলানো কৃষকের স্বপ্নমাখা সোনার ফসল আর কয়েকদিন পরই কৃষকের ঘরে উঠবে। কিন্তু গ্রীষ্মের এ সময় এমন ভারী বর্ষণ কৃষক আগে কখনো দেখেনি। এমন অবস্থায় কৃষকের ঘরে ঘরে চলছে হতাশা। এ বছর ধানের চারা রোপণের পর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষমাত্রার চেয়েও গত বছরের তুলনায় অনেক ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু কালবৈশাখী ঝড় আর টানা বৃষ্টিতে লাভের বদলে লোকসানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে কৃষকের মনে। কালবৈশাখী ঝড়, ভারী বর্ষণ বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টিতে নিচু জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এর মাঝে অনেক কৃষক ঝড় শিলাবৃষ্টির ক্ষতি এড়াতে অধিক শ্রমিক মূল্য দিয়ে ধান কেটে নিচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, হাইব্রিড জাতের ৫ হেক্টর জমিতে ২৪ মে.টন, ঊফশী জাতের ৯ হাজার ৩০০ হেক্টরে ৩৬ হাজার ৫৫০ মে.টন ও স্থানীয় জাতের ৫ হেক্টর জমিতে ১০ টন; মোট ৯ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে ৩৬ হাজার ৫৮৪ টন বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে দেলদুয়ার উপজেলা কৃষি অফিসার কানিজ সুরাইয়া সুলতানা জানান, দেলদুয়ারে কোনো ব্লাস্ট রোগ দেখা দেয়নি। ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আমাদের এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৩০০ হেক্টর জমি কিন্তু বেড়ে গিয়ে ৯ হাজার হাজার ৫২১ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে। উপজেলার প্রায় ২৮ হাজার কৃষক এবার ধানের আবাদ করছেন। আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়াতে ধান ৮০ ভাগ পেকে গেলেই কৃষককে ঘরে তোলার পরামর্শ দিয়েছি।