জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে অন্তত ৫টি ইভেন্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পাশে থাকবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুটি বৈঠকে কো-চেয়ার করবেন তারা। ওবামার সঞ্চালনে অনুষ্ঠিত আরেকটি শীর্ষ সম্মেলনে বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি থাকবেন শেখ হাসিনা। এসব তথ্য জানান জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ কে এ মোমেন।
গতকাল শুক্রবার বিকালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতর সংলগ্ন বাংলাদেশ মিশনের ‘বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত মোমেন জানান, ‘শেখ হাসিনা বিশ্বের সৌভাগ্যবান রাষ্ট্রনায়কদের অন্যতম। ২০০০ সালে এমডিজি নির্ধারণের শীর্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু কন্যা অংশ নিয়ে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করেছিলেন। ১৫ বছর পর এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য) নির্ধারণের শীর্ষ সম্মেলনেরও মধ্যমনি হিসেবে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। ১৫ বছরের ব্যবধানে বিশ্বের মানুষের সামগ্রিক উন্নয়ন ও কল্যাণের এজেন্ডা নির্ধারণী দুটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে আর কোন রাষ্ট্রনায়কের উপস্থিতি ঘটছে বলে মনে হয় না। একারণে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্যই সৌভাগ্যবান।’
ড. মোমেন আরও জানান, ‘এবারের জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের গুরুত্ব আন্তর্জাতিকভাবে যেমন অপরিসীম, ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের জন্যেও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করছে। এবারের ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে সবচেয়ে বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান অংশ নিচ্ছেন। এ সংখ্যা ১৬০। এবার একইসাথে দুটি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথমটিতে ২০১৫ পরবর্তী বিশ্বকে আমরা কেমন দেখতে চাই সেই আলোকে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য’ নির্দ্ধারিত হবে এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে দেশে-দেশে চলমান দাঙ্গা-হাঙ্গামার অবসানে স্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট আদায়। বাংলাদেশের জন্যে এবারের শীর্ষ সম্মেলনের গুরুত্ব অধিক বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য’ তথা এসডিজির ১৭টি লক্ষ্য এবং ১৬৯টি টার্গেটের প্রায় সবগুলোই বাংলাদেশের প্রস্তাব ছিল। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এমডিজির প্রায় সবকটি লক্ষ্যই বাংলাদেশ অর্জনে সক্ষম হয়েছে’।
রাষ্ট্রদূত মোমেন উল্লেখ করেন, ‘এবারের শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিন তথা ২৫ সেপ্টেম্বর সকালেই বক্তব্য রাখছেন পোপ ফ্রান্সিস। এজন্যে জাতিসংঘ এবং তার আশপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হবে। জাতিসংঘের ইতিহাসে যা ঘটেনি, তেমন নিরাপত্তা বেষ্টনী পাড়ি দিয়ে সকলকে ভেতরে ঢুকতে হবে।’ ‘২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬দিনে জাতিসংঘ সদর দফতরে ১০৫টি ইভেন্ট থাকবে। সবগুলোতেই বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের পাশাপাশি বিশ্বখ্যাত কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়ার্ল্ড লিডার্স ফোরামে ‘গার্লস লীড দ্য ওয়ে’ শীর্ষক বক্তব্য উপস্থাপন করবেন ২৫ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টায়। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় বেশ ক’জন কংগ্রেসম্যান হোটেল কক্ষে শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করে দ্বি-পাক্ষিক বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলবেন। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস এ বৈঠকের ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া মার্কিন ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরাও সাক্ষাৎ করবেন শেখ হাসিনার সঙ্গে। ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরের আগেই সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় বাংলাদেশের বক্তব্য উপস্থাপনের পর শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করবেন।