হাওর বার্তা ডেস্কঃ ছুটির সকাল। ব্যস্ত সড়কের পাশে কোদাল-ডালা-শাবল সারি করে রাখা। পাশেই বসে আছেন শতাধিক শ্রমজীবী নারী-পুরুষ। এরইমধ্যে এক-দু’জন আসছেন, দর কষাকষি করে নিয়ে যাচ্ছেন কর্মস্থলে। যারা ডাক পাচ্ছেন না তারা পার করছেন অলস সময়। নিজেরা গালগল্প করে কেউ হতাশ হয়ে ফিরছেন ঘরে। শ্রমের হাটে শ্রমিক কেনাবেচার নিত্যদিনের এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। মিরপুর-১ নম্বরে শ্রমের হাট বসে প্রতিদিন। শ্রমিকদের কাছে এটি ‘লেবার মার্কেট’।
মিরপুর-১ নম্বর থেকে মাজার রোড হয়ে যেতেই রাস্তার পাশে প্রতিদিন শত শত শ্রমিক জড়ো হন। রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, জোয়ালি, মাটি কাটার শ্রমিক, বালু ও ইট তোলার শ্রমিক- এমন সব ধরনের শ্রমিকের কেনাবেচা হয় এই হাটে।
নিত্যদিনের মতো সরকারি ছুটির দিন রোববার (২৯ এপ্রিল) সকাল ৭টা থেকেই আসতে শুরু করেন শ্রমিকরা। রাস্তার পাশে সারি হয়ে বসে থাকেন তারা। শ্রমিকের সন্ধানে কেউ এলেই বুঝতে পারেন তারা। ‘কতজন লাগবে’, ‘কী কাজ’- এমন প্রশ্ন শেষে দর কষাকষি করেন শ্রমিকরা।
এই হাটে কথা হয় হাবিব নামের এক শ্রমিকের সঙ্গে। তিনি এগিয়ে এসে প্রশ্ন করেন, কী কাজ, কতজন লাগবে? সাংবাদিক পরিচয়ে কথা বলে জানা গেলো দিনাজপুরের বীরগঞ্জের গোপালগঞ্জের হাবিব দীর্ঘ ৭/৮ বছর ধরে এই হাটে শ্রম বিক্রি করেন।
মাটি কাটা, বালি-ইট তোলা ও রাজমিস্ত্রির জোয়ালির কাজ করেন হাবিব। দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে ঢাকায় কাজ করেন হাবিব। দিনে ৬০০-৭০০ টাকার কমে কাজে যান না তিনি। প্রতিদিন কাজ না পেলেও একটু দাম বেশি হওয়ায় দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে নিয়ে দেড় হাজার টাকায় মিরপুরের সিটি কলোনিতে থাকতে অসুবিধা হয় না হাবিবের। পুরনো হওয়ায় এক নামে তাকে সবাই চেনে, দাবি হাবিবের।
হাবিব জানান, ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা পর্যন্ত শ্রমিকের দাম উঠে। তবে যারা নতুন এসেছে ঢাকায় তারা একটু কম দামেই চলে যায়।
দেশের এমন কোনো স্থান নেই যেখান থেকে এখানে লোক আসে না, দাবি করেন হাবিব।