ঢাকা ১২:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগামী ২৫ মে দেশের প্রথমবারের মতো এলএনজি সরবরাহ শুরু হচ্ছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৯:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৮
  • ২৭১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বঙ্গোপসাগরে তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) নিয়ে প্রস্তুত ভাসমান টার্মিনাল। সরবরাহ লাইনও প্রস্তুত প্রায় শতভাগ। এখন শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে সরবরাহ শুরু হওয়ার অপেক্ষা। আগামী ২৫ মে থেকে দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হচ্ছে এলএনজি সরবরাহ।

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলা অংশে গভীর সমুদ্রে কাতার থেকে পেট্রোবাংলার আমদানিকৃত এলএনজি নিয়ে অবস্থান নিয়েছে ভাসমান টার্মিনাল জাহাজ এক্সিলেন্স। সর্বশেষ রোববার মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল পরিদর্শন করেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিনিধিদল।

সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম এমপি জানান, আগামী ২৫ মে থেকে দেশে প্রথমবারের মতো এলএনজি সরবরাহ শুরু হতে পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এই সরবরাহ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। বর্তমানে কক্সবাজারের মহেশখালীতে নির্মাণাধীন ৫০০ এমএমসিএফডি ক্ষমতা সম্পন্ন ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল শতভাগ সক্রিয় করার কার্যক্রম চলছে।

সংসদ সদস্য তাজুল ইসলাম জানান, দেশে গ্যাস সঙ্কট নিরসনে এলএনজি অনেক বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। এক্সিলেন্স জাহাজটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল হিসেবে কাজ করবে এবং এখান থেকে ৯১ কিলোমিটার পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করবে। এই ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের ফলে বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ সমগ্র দেশে গ্যাস তথা অপরিহার্য জ্বালানিভিত্তিক বিনিয়োগ ও শিল্প-কারখানা স্থাপন, উৎপাদন ও কর্মসংস্থানের পথ সুগম হবে এবং বহুমুখী অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে।


উল্লেখ্য, কাতার থেকে পেট্রোবাংলা কর্তৃক আমদানি করা এলএনজির প্রথম চালান নিয়ে বেলজিয়ামের পতাকাবাহী সর্ববৃহৎ জাহাজ ‘এক্সিলেন্স’ গত ২৪ এপ্রিল কক্সবাজার জেলার মহেশখালী মাতারবাড়ী এলএনজি টার্মিনাল থেকে ৩ কি.মি. দূরে গভীর সমুদ্রে নোঙ্গর করে। এই জাহাজটি এলএনজির ভাসমান টার্মিনাল হিসেবে কাজ করবে। চুক্তি অনুযায়ী জাহাজটি আগামী ১৫ বছর পর্যন্ত ভাসমান টার্মিনাল হিসেবে অবস্থান করবে। পরবর্তীকালে অন্যান্য বেসরকারি কোম্পানি কর্তৃক এলএনজি আমদানি হলে এই জাহাজেই সেই এলএনজি খালাস করা হবে। জাহাজ থেকেই গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ করা হবে।

এদিকে এলএনজি সরবরাহের লক্ষ্যে মহেশখালী থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা পর্যন্ত গ্যাসের পাইপলাইন নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তবে তীরের কাছাকাছি এলাকায় কিছু অবকাঠামোগত কাজ বাকি আছে। সেটা সমাপ্ত হওয়ার পর চলতি মে মাসের শেষ সপ্তাহে গ্রাহক পর্যায়ে এলএনজি সরবরাহ আরম্ভ হবে।

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, দেশে ৩৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে পেট্রোবাংলার সরবরাহ ২ হাজার ৫৭৭ মিলিয়ন ঘনফুট। উৎপাদন সীমিত হওয়ায় চাহিদা থাকার পরও সার, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন উৎপাদনশীল খাত এবং বাসাবাড়ি ও বাণিজ্যিক খাতে সংযোগ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সরকারিভাবে পেট্রোবাংলা এক্সিলেন্স জাহাজের মাধ্যমে এলএনজি আনা হলেও পর্যায়ক্রমে এলএনজি আনবে আরো তিনটি বেসরকারি কোম্পানি। এই কোম্পানিগুলো হলো সামিট পাওয়ার, রিলায়েন্স, হংকং, সাংহাই ও মানজালা। প্রতিটি কোম্পানি ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস আনবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বেসরকারি খাতে সামিটের আমদানি করা এলএনজি আগামী অক্টোবর দেশে আসার কথা রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

আগামী ২৫ মে দেশের প্রথমবারের মতো এলএনজি সরবরাহ শুরু হচ্ছে

আপডেট টাইম : ১০:১৯:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বঙ্গোপসাগরে তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) নিয়ে প্রস্তুত ভাসমান টার্মিনাল। সরবরাহ লাইনও প্রস্তুত প্রায় শতভাগ। এখন শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে সরবরাহ শুরু হওয়ার অপেক্ষা। আগামী ২৫ মে থেকে দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হচ্ছে এলএনজি সরবরাহ।

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলা অংশে গভীর সমুদ্রে কাতার থেকে পেট্রোবাংলার আমদানিকৃত এলএনজি নিয়ে অবস্থান নিয়েছে ভাসমান টার্মিনাল জাহাজ এক্সিলেন্স। সর্বশেষ রোববার মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল পরিদর্শন করেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিনিধিদল।

সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম এমপি জানান, আগামী ২৫ মে থেকে দেশে প্রথমবারের মতো এলএনজি সরবরাহ শুরু হতে পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এই সরবরাহ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। বর্তমানে কক্সবাজারের মহেশখালীতে নির্মাণাধীন ৫০০ এমএমসিএফডি ক্ষমতা সম্পন্ন ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল শতভাগ সক্রিয় করার কার্যক্রম চলছে।

সংসদ সদস্য তাজুল ইসলাম জানান, দেশে গ্যাস সঙ্কট নিরসনে এলএনজি অনেক বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। এক্সিলেন্স জাহাজটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল হিসেবে কাজ করবে এবং এখান থেকে ৯১ কিলোমিটার পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করবে। এই ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের ফলে বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ সমগ্র দেশে গ্যাস তথা অপরিহার্য জ্বালানিভিত্তিক বিনিয়োগ ও শিল্প-কারখানা স্থাপন, উৎপাদন ও কর্মসংস্থানের পথ সুগম হবে এবং বহুমুখী অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে।


উল্লেখ্য, কাতার থেকে পেট্রোবাংলা কর্তৃক আমদানি করা এলএনজির প্রথম চালান নিয়ে বেলজিয়ামের পতাকাবাহী সর্ববৃহৎ জাহাজ ‘এক্সিলেন্স’ গত ২৪ এপ্রিল কক্সবাজার জেলার মহেশখালী মাতারবাড়ী এলএনজি টার্মিনাল থেকে ৩ কি.মি. দূরে গভীর সমুদ্রে নোঙ্গর করে। এই জাহাজটি এলএনজির ভাসমান টার্মিনাল হিসেবে কাজ করবে। চুক্তি অনুযায়ী জাহাজটি আগামী ১৫ বছর পর্যন্ত ভাসমান টার্মিনাল হিসেবে অবস্থান করবে। পরবর্তীকালে অন্যান্য বেসরকারি কোম্পানি কর্তৃক এলএনজি আমদানি হলে এই জাহাজেই সেই এলএনজি খালাস করা হবে। জাহাজ থেকেই গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ করা হবে।

এদিকে এলএনজি সরবরাহের লক্ষ্যে মহেশখালী থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা পর্যন্ত গ্যাসের পাইপলাইন নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তবে তীরের কাছাকাছি এলাকায় কিছু অবকাঠামোগত কাজ বাকি আছে। সেটা সমাপ্ত হওয়ার পর চলতি মে মাসের শেষ সপ্তাহে গ্রাহক পর্যায়ে এলএনজি সরবরাহ আরম্ভ হবে।

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, দেশে ৩৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে পেট্রোবাংলার সরবরাহ ২ হাজার ৫৭৭ মিলিয়ন ঘনফুট। উৎপাদন সীমিত হওয়ায় চাহিদা থাকার পরও সার, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন উৎপাদনশীল খাত এবং বাসাবাড়ি ও বাণিজ্যিক খাতে সংযোগ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সরকারিভাবে পেট্রোবাংলা এক্সিলেন্স জাহাজের মাধ্যমে এলএনজি আনা হলেও পর্যায়ক্রমে এলএনজি আনবে আরো তিনটি বেসরকারি কোম্পানি। এই কোম্পানিগুলো হলো সামিট পাওয়ার, রিলায়েন্স, হংকং, সাংহাই ও মানজালা। প্রতিটি কোম্পানি ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস আনবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বেসরকারি খাতে সামিটের আমদানি করা এলএনজি আগামী অক্টোবর দেশে আসার কথা রয়েছে।