হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারত সফরের সময় আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিছু বলেননি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর যৌথ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। ডিনার পার্টিতে ভারতের অনেকেই বলেছেন, আমরা (আওয়ামী লীগ) ভবিষ্যতেও ক্ষমতায় আসব। তবে একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মোদি একটি শব্দও বলেননি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মহিবুল হাসান চৌধুরী, এ কে এম এনামুল হক শামীম, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কথা হয়েছে আমাদের উভয়ের মধ্যে যে সম্পর্ক, এই সম্পর্ককে পার্টি টু পার্টি, সরকার টু সরকার এর মধ্যে কীভাবে আরও শক্তিশালী করা যায়- এই বিষয় নিয়ে। বাংলাদেশে নির্বাচন হবে এতে ভোট দেবে বাংলাদেশের জনগণ। এখানে ভারত কী করবে? ভারত কি আমাদের ক্ষমতায় বসাবে? জনগণ না চাইলে কি আমরা জোর করে ক্ষমতায় থাকব? তিনি বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে গিয়েছিল। তখন কি ভারত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল? ভারত এটা করে না। আওয়ামী লীগের ভাগ্য নির্ধারণ করবে দেশের জনগণ। কোনো বিদেশি শক্তি নয়।
সতুমন্ত্রী বলেন, বিজেপির নেতারা বাংলাদেশ সফরে আসবেন। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে বাংলাদেশ সফর আসবেন। তিনি বলেন, সফরে ভারত সরকার আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলকে অনেক গুরুত্ব দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিনিধি দলের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেশের জন্য জনগণের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়েছি।
দেশের স্বার্থের বিষয়ে আলোচনার ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই সফরে তিস্তা চুক্তি থেকে শুরু রোহিঙ্গা ইস্যু, কোনো কিছুই বাদ পড়েনি। দেশের জনগণের স্বার্থ তুলে ধরেছি। আমরা জানিয়েছি, তিস্তা চুক্তি হলে জনগণের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। তিনি বলেন, দুই দেশের সরকারের আন্তরিকতার কারণে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়িত হয়েছে। এ ছাড়া সন্ত্রাসবাদের জন্য যেন সীমান্ত ব্যবহার করা না হয়, এসব বিষয়েও কথা হয়েছে।
প্রতিনিধি দলের গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে মন্ত্রী কাদের বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমাদের সঙ্গে গ্রুপ ফটো তুলেছেন। তিনি শুধু গ্রুপ ফটো তোলেননি, আমাদের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের কথা শুনেছেন। তারেক রহমানের পাসপোর্টের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি বলছে মিথ্যাচার। তারেক জিয়া রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন, এটা এত দিন স্বীকার করেনি বিএনপি। এখন ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে। এরা আমাদের মিথ্যাচারের কথা বলছে, আসলে বিএনপি নামক দলটিতে কিছু কনসামেট লায়ার (পরিপূর্ণ মিথ্যাবাদী) আছে। এঁরা আসলে হতাশার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এক মন্তব্যের জবাবে কাদের বলেন, ফখরুল ইসলাম আলমগীর কি চিকিৎসা বিদ্যার বিশেষজ্ঞ? বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকও আছেন। চিকিৎসকেরা বলুক তাঁর অবনতি কতটা হয়েছে, কি হয়েছে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে খালেদা জিয়াকে বাইরে দেখা গেছে। দৃশ্যত কোনো অবনতি হয়েছে বলে মনে হয়নি। হলেও হতে পারে। ভেতরে যদি কোনো অবনতি হয়, মেডিকেল বোর্ড বললে এখানে সরকার অবশ্যই মানবিক আচরণ করবে। রাজনীতি করি বলে একজন মানুষ বিনা চিকিৎসায় মরবে এটা কি কখনো চাই না। শেখ হাসিনা এটা চান না। কখনো আমরা এ ধরনের আচরণ করব না।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রচারণায় অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যে এলাকার নির্বাচন, সে এলাকার যারা ঢাকায় রয়েছেন, কেবল তারাই নির্বাচনী এলাকায় যাবেন। অযথা ভিড় বাড়িয়ে লাভ নেই। সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে বিরক্ত করবেন না।