হাওর বার্তা ডেস্কঃ দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে শপথ নিয়েছেন মোঃ আবদুল হামিদ। প্রথমবারের মতো কোনো রাষ্ট্রপতি টানা দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন শুরু করলেন। বাংলাদেশের ২১তম রাষ্ট্রপ্রধান তিনি। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। পাঁচ বছর মেয়াদপূর্তির পর গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি ২১তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। মাঠের রাজনীতিবিদ হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ১৯৫৯ সালে ছাত্রলীগে যোগ দেওয়ার পর থেকেই আন্দোলন-সংগ্রামে সব সময় রাজপথে থেকেছেন। ১৯৬১ সালে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারাবরণ করেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচন, ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচন, ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচন এবং ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৩ সালে তাঁকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়।
দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্রপতি হিসেবে মোঃ আবদুল হামিদ শপথ নিলেন এমন এক সময়ে যখন দেশে আরেকটি সাধারণ নির্বাচনের সময় এগিয়ে আসছে। চলতি বছরই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ সময় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা দেন-দরবার হয়। বাংলাদেশের বাস্তবতা হচ্ছে, নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসে ততই পারস্পরিক সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে থাকে। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজনীতির ময়দান। উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন মানুষ রাষ্ট্রপতি থাকলে তিনি অন্তত সব পক্ষের মতামত গ্রহণ করতে পারেন। তিনি সবার কথা শুনতে পারেন। তাঁর মতো একজন মানুষ অভিভাবক হিসেবে থাকলে তা দেশের জন্যই কল্যাণকর। যদিও তিনি সব সময় বলে এসেছেন, বঙ্গভবনের জীবন তাঁর কাছে অনেকটাই জেলখানার মতো।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে এখন অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের সব সূচক অর্জন করলেও এই অর্জন ধরে রাখতে হলে যে স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক গতিশীলতা প্রয়োজন, তা নিশ্চিত করতে পারে দেশের রাজনীতি। রাজনীতিবিদদের যেকোনো ভুল সিদ্ধান্ত দেশকে গভীর সংকটে ফেলে দিতে পারে। দেশের এমন অবস্থায় মোঃ আবদুল হামিদের মতো একজন রাষ্ট্রপতি বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। সাধারণের সঙ্গে মিশে রাজনীতি করেছেন। ফলে সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়ার সঙ্গে তাঁর পরিচয় দীর্ঘদিনের। আমরা আশা করি, তাঁর অভিভাবকত্ব আমাদের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে।