হাওর বার্তা ডেস্কঃ জগন্নাথপুরের দ্বিতীয় বৃহৎ মইয়ার হাওরে ধান কাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে। এরই মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। এই মুহূর্তে ধান মাড়াই-ঝাড়া-ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত কৃষক কৃষাণী ও তাদের পরিবারের লোকজন।
গতকাল বুধবার হাওর ঘুরে দেখা যায়, হাওরের প্রায় ৮০ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। কর্ষ্টাজিত ফসল গোলায় তোলতে মাড়াই-ঝাড়া ও ধান শুকানোর কাজে ভোর থেকে সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত ব্যস্ত কৃষক পরিবারের লোকজন। কৃষকরা জানান, টানা দুই বছর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে গোলায় বোরো ধান তোলতে পারেননি।
এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধান গোলায় তোলতে দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়নি। প্রথম দিকে হাওরে শ্রমিক সংকট দেখা দিলেও কৃষকরা একে অপরের শ্রমিক দ্বারা ধান কাটার কাজে সহায়তা করায় শ্রমিক সংকট কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়েছে।
প্রায় ১৫/২০ দিন পূর্বে ধান কাটা শুরু হয়। এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন মইয়ার হাওরে জগন্নাথপুর পৌরসভা, চিলাউড়া-হলদিপুর ও রানীগঞ্জ ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার কৃষক বোরো ধানের চাষাবাদ করেছেন। এ হাওরে ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধানসহ উচ্চ ফসলশীল ফসল আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৯ জাতের ধান বাস্পার ফসল হয়েছে।
পৌর এলাকার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক আসলাম উল্লাহ বলেন, দুই বছর পর ফসলের দেখা পেয়ে খুব খুশি হয়েছি। ফলন ও ভালো হয়েছে। গত দুইবারের ফসল হারানোর কষ্ট এবার মুছবে। ২৮ কেদার জমিতে ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের বোরো ফসল চাষাবাদ করেছি। সব ফসল কাটা শেষ। এখন মাড়াই ও ধান শুকানোর কাজ চলছে। আশা করছি আর এক সপ্তাহের মধ্যে সব ধান গোলায় তোলা যাবে।
আরেক কৃষক আফসর উদ্দিন জানান, অকাল বন্যায় গত দুই বছর ফসল গোলায় উঠেনি। এ বছর মইয়ার হাওরে ৫০ কেদার জমিতে আবাদ করেছি। বাস্পার ফলন হয়েছে। এখন ধান গোলায় তোলার কাজ চলছে।
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির আহবায়ক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন,পর পর দুই বছর ফসল হারানো কৃষকরা এখন ব্যস্ত তাদেও কষ্টের ফসল ঘরে তোলতে। মইয়ার হাওরের ধান কাটা প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। তবে জেলার অন্যতম নলুয়া হাওরের ফসল এখনও ৫০ শতাংশ কাটার বাকি রয়েছে।