রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ জাতীয় আয়কর দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ১৫ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী জাতীয় আয়কর দিবস পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।
দেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জনের বিকল্প নেই। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলার সূচনালগ্নে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে ১৯৭২ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেন। সেই থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দেশের আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় রাজস্বের যোগান দিয়ে আসছে। ‘রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়নে এবং দেশকে অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা ও বৈরী পরিস্থিতিতেও রাজস্ব আদায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড যথেষ্ট সাফল্য লাভ করেছে। আমার বিশ্বাস আয়কর বিভাগ তাদের কর্মতৎপরতা ও কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমে একটি জনবান্ধব ও সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে সক্ষম হবে।
দেশের প্রতিটি নাগরিক যাতে উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ ও উন্নয়ন অংশীদারিত্ব অর্জনে সুযোগ পায় সে লক্ষ্যে সকলকে কর প্রদানে আগ্রহী করে তোলাই হোক-এবারের জাতীয় আয়কর দিবসের মূল লক্ষ্য।
আমি ‘জাতীয় আয়কর দিবস ২০১৫’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
প্রধানমন্ত্রীর বাণী :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় আয়কর দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“প্রতি বছরের ন্যায় এবারও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস পালন করতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি দেশের সম্মানিত করদাতা, কর প্রশাসন, কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং আয়করের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
মহামান্য রাষ্ট্রপতির ৭৬নং আদেশবলে ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কর সংস্কৃতি বিকাশের মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অব্যাহত প্রচেষ্টা এবং সম্মানিত করদাতাগণের নিয়মিত কর প্রদানের ফলে আমরা বৈদেশিক সাহায্য ও ঋণনির্ভর অর্থ ব্যবস্থাপনা থেকে আজ আত্মনির্ভরশীল অর্থনৈতিক অবস্থানে পৌঁছার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছি। আমাদের রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। মাথাপিছু আয় এখন এক হাজার ৩১৪ ডলার। আমাদের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। ইতোমধ্যে আমরা নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা।
আমাদের সরকার ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। কর বিভাগের সাংগঠনিক কাঠামোর পুনর্বিন্যাসের পাশাপাশি অটোমেশন, তথ্যকেন্দ্র চালু, ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশনসহ আয়কর খাতে আমূল পরিবর্তন করা হয়েছে।
আমরা বিদ্যমান আয়কর আইনকে আরও সহজ ও যুগোপযোগী করেছি। ‘ই-পেমেন্ট’ চালুর ফলে করদাতাগণ এখন অনলাইনে কর দিতে পারছেন। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সকল জেলায় আয়কর মেলা আয়োজন করা হচ্ছে। এর ফলে কর প্রদানে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আয়কর খাতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব অর্জিত হচ্ছে। আয়কর খাতে সাফল্যের এ ধারা অব্যাহত রাখতে আমি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাই।
‘সমৃদ্ধির সোনালি দিন, আনতে হলে আয়কর দিন’- এ স্লোগানকে সামনে রেখে এ বছরের জাতীয় আয়কর দিবস ও আয়কর মেলার মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘সুখি স্বদেশ গড়তে ভাই, আয়করের বিকল্প নাই’,- যা অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
আমি আশা করি, এ দিবস পালনের মাধ্যমে জনমনে আয়কর সম্পর্কে অহেতুক ভীতি ও সংশয় দূর হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অভ্যন্তরীণ সম্পদ বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করতে সক্ষম হব।
আমি জাতীয় আয়কর দিবস-২০১৫ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”