হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফলনের মাঝামাঝি সময়ে এসে জামালপুরে কেজিপ্রতি এক টাকায় বিক্রি হচ্ছে টমেটো। হঠাৎ করে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে টমেটো পাকতে শুরু হওয়ায় দাম পড়ে গেছে।
এভাবে দাম পড়ে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছে স্থানীয় চাষিরা। এছাড়া সময়মতো বিক্রি না হওয়া এবং জেলায় কোনো সবজি সংরক্ষণাগার না থাকায় মাঠেই নষ্ট হচ্ছে শত শত মেট্রিক টন টমেটো।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি রবি মওসুমে জেলার সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের বিস্ত্রীর্ণ চরাঞ্চলের সাড়ে ১২শ’ হেক্টরসহ জামালপুরে মোট ১৭ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। চাষ হওয়া টমেটোর ফলনও হয়েছে ভালো।
তবে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে এসে হঠাৎ করে তাপমাত্রা বাড়ায় মাঠে দ্রুত টমেটো পাকতে শুরু করে। কিন্তু সে তুলনায় রাজধানীসহ দেশের অন্য জেলাগলোতে সরবরাহ না থাকায় না থাকায় আর্থিক লোকসানের মুখে পড়েছে চাষিরা।
সদর উপজেলার লক্ষীরচর, তুলশীরচর ও ইটাইল ইউনিয়নের চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবছর পোকার আক্রমন ও রোগবালাই না হওয়ায় টমেটোর ভালো ভালো ফলন হয়। আগাম চাষ করায় প্রথম দিকে দামও ছিল ভালো। প্রতি কেজি টমেটো পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। কিন্তু মাত্র দুই সপ্তাহ পর দাম পড়ে যায়। টমেটোর দাম কমতে কমতে এখন বাজারে এক থেকে দেড় টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। এত কম দামে টমেটো বিক্রি করে শ্রমিক ও পরিবহন খরচ না ওঠায় লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের।
সরেজামিনে কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কৃষক পাকা টমেটো বাজারে এনে বিক্রি করতে না পেয়ে বাজারের নর্দমা বা পরিত্যক্ত পুকুরে ফেলে দিচ্ছে। উৎপাদিত টমেটো বাজারে বিক্রি করে পরিবহন ভাড়াও জুটছে না। ফলে অনেক কৃষক মাঠ থেকে টমেটো উঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। এতে আারও শত শত মেট্রিক টন টমেটো মাঠে নষ্ট হচ্ছে।
আজিম উদ্দিন নামের এক টমেটো ব্যবসায়ী জানান, জামালপুরের বিষ ও ফরমালিন মুক্ত সুস্বাদু টমেটোর চাহিদা রয়েছে সারা দেশে। মওসুমের শুরু থেকে দেশব্যাপী সরবারহও ছিল ভালো। তবে এবার টমেটা তাড়াতাড়ি পাকার কারণে রাজধানীসহ অন্য জেলাগুলোতে সরবরাহ করা যাচ্ছে না। পাকা টমেটো একদিনের বেশি রাখতে না পারার কারণে দাম একেবারেই পড়ে গেছে বলে এ ব্যবসায়ী জানান।
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, হঠাৎ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় এক সঙ্গে মাঠের সব টমেটো পেকে যাচ্ছে। চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত টমেটো বাজারে আসায় দাম পড়ে গেছে। পচনশীল এসব কাচামালে স্থায়িত্ব খুবই কম। এজন্য টমেটো চাষিরা বড় ধরনের লোকসানের শিকার হচ্ছে। তিনি বলেন, আবহাওয়ার কারণেই টমেটোর চাষিরা আজ এই বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয়ভাবে সবজি সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থা থাকলে চাষিরা এমন আর্থিক লোকসান থেকে রক্ষা পেতেন বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।