সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, দেশে আজ প্রাণহীন গণতন্ত্র। গণতন্ত্র সংবিধানে আছে, অন্য কোথাও নেই। সর্বত্র দলীয়করণ আর দখলদারিত্বে চলছে দেশ।
তিনি বলেন, সাংবাদিকরা লিখতে পারে না, টকশোতে সরকারের সমালোচনা করতে পারে না। ইনু সাহেব যা নির্দেশ দিয়ে যায় তাই টিভিতে প্রচার করতে হয়।
সোমবার দুপুরে খুলনা জেলা জাতীয় পার্টির দ্বী-বার্ষিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
এরশাদ বলেন, দেশে কথা বলার অধিকার নেই, ভোট দেবার অধিকার নেই, নেই দেশে সুশাসন। সুশাসন আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, দেশে আজ কত গুম-খুন হচ্ছে এর কোনো হিসাব নেই। জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালীন ডা. মিলন আর নূর হোসেন ছাড়া কেউ খুন হয়নি। একজন খুন হলো, অমনি নূর হোসেন চত্বর ঘোষণা করা হলো। আজ যদি ওই রকম চত্বরের নামকরণ করা হয় তাহলে দেশের কোথাও জায়গা থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বলেন, আট বছর সেনাবাহিনীর প্রধান এবং নয় বছর রাষ্ট্রপতি ছিলাম। কোনোদিন বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করিনি। কিন্তু আজ বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। জাতীয় পার্টির আমলে বিদেশে কোনো অর্থপাচার হয়নি, আজ বেসিক ব্যাংক ৩৬ হাজার কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংক ২৬ হাজার কোটি টাকা এবং শেয়ারবাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে।
তিহনি বলেন, দেশে অর্থ কেলেঙ্কারি একের পর এক ঘটে চলেছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, চার হাজার কোটি টাকা কোনো টাকা নয়। এ কারণে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার কোনো উদ্যোগ নেই।
এরশাদ বলেন, আমার আমলেই প্রথমে সাতটি বেসরকারি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। কিন্তু নিজে কোনো ব্যাংক নেইনি। কিন্তু আজ ব্যাংক অনুমোদন দেয়া হচ্ছে ভাগাভাগি করার জন্য।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ বলেন, বিএনপি এখন শিয়ালের গর্তে। মাঝেমধ্যে কথা বলে আবার গর্তে ঢুকে। ২০০৭ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, এরশাদ সাহেব জেলে যাবেন আর লাশ হয়ে বের হবেন। কিন্তু আজ কি নিয়তি, খালেদা জিয়াকে জেলে যেতে হবে। আমি অপেক্ষায় থাকবো, জেল থেকে তিনি কি হয়ে বের হন।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সুনিল শুভ রায় এতে সভাপতিত্ব করেন।
বক্তব্য রাখেন পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু এমপি, পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, আলহাজ সাহিদুর রহমান, আলহাজ আবুল হোসেন, রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, শফিকুল ইসলাম মধু, খুলনার নয় উপজেলার জাতীয় পার্টির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত জাতীয় পার্টির জেলা সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. শফিকুল ইসলাম মধুকে নতুন সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন দলের চেয়ারম্যান এরশাদ। সাধারণ সম্পাদক পদে দু’জন প্রার্থী থাকায় আগামীতে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি নাম ঘোষণা করবে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ১৭ জুলাই খুলনা জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।