ঢাকা ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

কুড়িগ্রামে গমের বিকল্প ভূট্টা চাষ করে কৃষকের মুখে হাসি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:২১:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মার্চ ২০১৮
  • ৩৫০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুড়িগ্রামে গম চাষের বিকল্প হিসাবে কৃষকরা ভূট্টা চাষে বেশি ঝুকে পরছেন। কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুর রশীদ এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, চলতি মওসুমে গম চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল ১২১৫৩ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৮৯৯৭ হেক্টর । পক্ষান্তরে ভুট্রা চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয় ৬৪৪৫ হেক্টর,আবাদ হয়েছে ৮৯৯৭ হেক্টর। গম চাষে কৃষকের আগ্রহ কমে যাওয়ার বিষয়ে খোজ নিয়ে জানা গেছে, গম চাষে বীজ,সার,সেচ কিটনাশকসহ যে পরিমান খরচ হয় সেই পরিমান উৎপাদন ও বাজার দর পাওয়া যায় না।

অপরদিকে ভুট্রা চাষে বীজ সার ও সেচ তেমন একটা দিতে হয় না। এছাড়া ভুট্রার ফলন ও বাজার দর ভাল । উল্লেখ্য,কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ধরলা,তিস্তা দুধকুমর, ফুলকুমর, গঙ্গাধর, ব্রহ্মপুত্রসহ ১৬টি নদ নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলগুলে ভূট্টার বাম্পার ফলন হয়। সরেজমিন নাগেশ^রী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের পাটতলার চরের কৃষক তাজুল ইসলাম,কাশেম আলী ও মাহতাব উদ্দিন জানান,চরের বালু মিশ্রিত জমিতে ধান,গম ও অন্যান্য ফসল চাষ করতে যে পরিমান খরচ হয় সেই পরিমান ফলন পাওয়া যায় না।

তাই কম খরচে কৃষকরা এবার ব্যপকহারে ভূট্টা চাষে ঝুকে পরেছেন। সরেজমিন নাগেশরী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে এবার ভুট্রা চাষ হয়েছে ৪০১৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে চরাঞ্চলের এক ফসলি জমিতে এবার ভূট্রা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করছে কৃষি বিভাগ। উপজেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়নের শালমারা চর এলাকার কৃষক জমশেদ আলী, কেলকেলু সেখ, মজির উদ্দিন ও তুফান আলী বলেন, এবার পরীক্ষামূলক ভাবে আমরা প্রতিজন ৫ বিঘা হারে জমিতে ভূট্রা চাষ করেছি ভূট্রার ফলন ভালো দেখা যাচ্ছে। আশানুরুপ ফলন পেলে আগামীতে ব্যাপকহারে চাষ করা হবে।

কালারচরের কৃষক শাহআলম এবার ৫০ বিঘা জমিতে ভুট্রা চাষ করেছেন। তিনি বলেন, এক ফসলী জমিতে এবার পরিক্ষা মুলকভাবে ভুট্রা চাষ করেছি আবাদ ভাল হলে আগামীতে আরো বেশি জমিতে চাষ করবো। ইন্দ্রগর চরের কৃষক আমিনুর রহমান এবার কৃষি পুনর্বাসনের আওতায় ২০ বিঘা জমিতে হাইব্রিড-২৭৫০ জাতের ভূট্টা চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান সরকার জানান, চরাঞ্চলের কৃষকরা এবার ব্যাপকহারে মিরাকেল, ডন, টাইগার, সুপার শাইন জাতের ভূট্রা চাষ করেছে। এবারের আবহাওয়া ভুট্রা চাষের জন্য খুবই অনুকূল।

আমরা আশা করছি প্রতি হেক্টর জমিতে ২শ ১০মণ করে ভুট্রা উৎপাদন হবে। এবার ভূট্রা মাড়াইয়ে সরকারীভাবে মাড়াই যন্ত্র কৃষকদের মাঝে সরবরাহের চিন্তা করা হচ্ছে। কৃষিবিভাগের ধারনা বীজ, হালচাষ, সার, কীট-নাশক এবং সেচসহ উৎপাদনে একর প্রতি খরচ হচ্ছে ৯ থেকে ১০হাজার।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে একর প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় পাবে কৃষক। পলিট্রি, গো খাদ্য এবং মাছের খাবার হিসাবে ভূট্রার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এছাড়া ভূট্রা গাছ জ্বালানী হিসাবেও ব্যাহত হচ্ছ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ক্যাটরিনার হাতে ২০ বার থাপ্পড় খেয়েছিলেন ইমরান খান

কুড়িগ্রামে গমের বিকল্প ভূট্টা চাষ করে কৃষকের মুখে হাসি

আপডেট টাইম : ১২:২১:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মার্চ ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুড়িগ্রামে গম চাষের বিকল্প হিসাবে কৃষকরা ভূট্টা চাষে বেশি ঝুকে পরছেন। কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুর রশীদ এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, চলতি মওসুমে গম চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল ১২১৫৩ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৮৯৯৭ হেক্টর । পক্ষান্তরে ভুট্রা চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয় ৬৪৪৫ হেক্টর,আবাদ হয়েছে ৮৯৯৭ হেক্টর। গম চাষে কৃষকের আগ্রহ কমে যাওয়ার বিষয়ে খোজ নিয়ে জানা গেছে, গম চাষে বীজ,সার,সেচ কিটনাশকসহ যে পরিমান খরচ হয় সেই পরিমান উৎপাদন ও বাজার দর পাওয়া যায় না।

অপরদিকে ভুট্রা চাষে বীজ সার ও সেচ তেমন একটা দিতে হয় না। এছাড়া ভুট্রার ফলন ও বাজার দর ভাল । উল্লেখ্য,কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ধরলা,তিস্তা দুধকুমর, ফুলকুমর, গঙ্গাধর, ব্রহ্মপুত্রসহ ১৬টি নদ নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলগুলে ভূট্টার বাম্পার ফলন হয়। সরেজমিন নাগেশ^রী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের পাটতলার চরের কৃষক তাজুল ইসলাম,কাশেম আলী ও মাহতাব উদ্দিন জানান,চরের বালু মিশ্রিত জমিতে ধান,গম ও অন্যান্য ফসল চাষ করতে যে পরিমান খরচ হয় সেই পরিমান ফলন পাওয়া যায় না।

তাই কম খরচে কৃষকরা এবার ব্যপকহারে ভূট্টা চাষে ঝুকে পরেছেন। সরেজমিন নাগেশরী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে এবার ভুট্রা চাষ হয়েছে ৪০১৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে চরাঞ্চলের এক ফসলি জমিতে এবার ভূট্রা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করছে কৃষি বিভাগ। উপজেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়নের শালমারা চর এলাকার কৃষক জমশেদ আলী, কেলকেলু সেখ, মজির উদ্দিন ও তুফান আলী বলেন, এবার পরীক্ষামূলক ভাবে আমরা প্রতিজন ৫ বিঘা হারে জমিতে ভূট্রা চাষ করেছি ভূট্রার ফলন ভালো দেখা যাচ্ছে। আশানুরুপ ফলন পেলে আগামীতে ব্যাপকহারে চাষ করা হবে।

কালারচরের কৃষক শাহআলম এবার ৫০ বিঘা জমিতে ভুট্রা চাষ করেছেন। তিনি বলেন, এক ফসলী জমিতে এবার পরিক্ষা মুলকভাবে ভুট্রা চাষ করেছি আবাদ ভাল হলে আগামীতে আরো বেশি জমিতে চাষ করবো। ইন্দ্রগর চরের কৃষক আমিনুর রহমান এবার কৃষি পুনর্বাসনের আওতায় ২০ বিঘা জমিতে হাইব্রিড-২৭৫০ জাতের ভূট্টা চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান সরকার জানান, চরাঞ্চলের কৃষকরা এবার ব্যাপকহারে মিরাকেল, ডন, টাইগার, সুপার শাইন জাতের ভূট্রা চাষ করেছে। এবারের আবহাওয়া ভুট্রা চাষের জন্য খুবই অনুকূল।

আমরা আশা করছি প্রতি হেক্টর জমিতে ২শ ১০মণ করে ভুট্রা উৎপাদন হবে। এবার ভূট্রা মাড়াইয়ে সরকারীভাবে মাড়াই যন্ত্র কৃষকদের মাঝে সরবরাহের চিন্তা করা হচ্ছে। কৃষিবিভাগের ধারনা বীজ, হালচাষ, সার, কীট-নাশক এবং সেচসহ উৎপাদনে একর প্রতি খরচ হচ্ছে ৯ থেকে ১০হাজার।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে একর প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় পাবে কৃষক। পলিট্রি, গো খাদ্য এবং মাছের খাবার হিসাবে ভূট্রার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এছাড়া ভূট্রা গাছ জ্বালানী হিসাবেও ব্যাহত হচ্ছ।