সৈয়দ মহসীন আলী পাঁচটি ভাষায় কথা বলতে পারেন। গান গাইতে পারেন। তুখোড় আড্ডাবাজ উদারপন্থি মানুষটি একবার এক আড্ডায় মুক্তিযুদ্ধের গান গাইতে গাইতে তার সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়া শহীদদের স্মরণ করে অঝোরে কেঁদেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য সৈয়দ মহসীন আলীকে যারা চেনেন তারা জানেন একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে তিনি গণমানুষের ভালোবাসায় অভিষিক্ত হয়েই রাজনীতির দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েছেন। সুমহান মুক্তিযুদ্ধে এই বীর যোদ্ধার বীরত্বের গৌরব রয়েছে।
গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও তিনি ছিলেন সাহসী ও নির্ভীক। মৌলভীবাজারের অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক চেতনার এক বটছায়াই নন, সাংস্কৃতিক আন্দোলনেরও উদার পৃষ্ঠপোষক। রাজনীতিতে এসে কেউ কেউ বিত্তবৈভবের মালিক হন। সৈয়দ মহসীন আলী রাজনীতিতে এসে দিন দিন পারিবারিক বিত্তবৈভব ও সম্পদ খুইয়েছেন। লোভ-লালসা, আদর্শহীনতা তাকে টানেনি। মানুষের ভালোবাসাই টেনেছে।
সৈয়দ মহসীন আলী শেখ হাসিনার প্রথম শাসনামলে মৌলভীবাজারে জেলার কৃষকদের নিয়ে বিশাল আয়োজনে তিন দিনের সেমিনার, কর্মশালা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। মানুষের সঙ্গে ছিল নিবিড় সম্পর্ক! তার বাড়িতে যখন যারা আতিথেয়তা নিয়েছেন তার আশরাফ, আখলাক, আন্তরিকতা এবং দিলখোলা চরিত্র খুঁজে পেয়েছেন।
তিনটি কন্যাসন্তান তাকে মায়ের মতো আগলে রাখে। কিন্তু তার প্রিয়তমা স্ত্রী বা সন্তানরা তাকে সিগারেট কখনো ছাড়াতে পারেননি। একসময় দিনে ১০ প্যাকেট বেনসন সিগারেট পান করতেন।
‘৯৭ সালে কাউন্সিলরদের ভোটে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আরেক গণমানুষের নেতা আজিজুর রহমানকে চার ভোটে হারিয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন সৈয়দ মহসীন আলী। দলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন বলেই সর্বশেষ জেলা সম্মেলনে মাত্র সাত ভোটে সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদের কাছে তিনি সভাপতির পদ হারান। আদর্শের প্রতি অবিচল সাধারণ মানুষের জন্য দয়ার শরীর সৈয়দ মহসীন আলীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপযুক্ত মন্ত্রণালয়ই দেন।