হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের জনগণের বাড়তি বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে বর্তমান সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। এ লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নিত্য নতুন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে তা ব্যবহার করা হচ্ছে জনগণের কল্যাণে। প্রযুক্তির আধুনিকায়নের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে নতুন বড় বড় পাওয়ার প্ল্যান্ট; যেখান থেকে উৎপাদিত হচ্ছে বিদ্যুৎ আর সেই বিদ্যুৎই পৌঁছে যাচ্ছে জনগণের দ্বারগোড়ায়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের এমনই এক প্রযুক্তি হচ্ছে সোলার পার্ক।
অনবায়নযোগ্য জীবাশ্ম জ্বালানী ভিত্তিক বিদ্যুৎ-এর উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য সূর্যালোক ব্যবহার করে সরকারি মালিকানাধীন অ-কৃষি জমিতে উৎপাদন করা হচ্ছে গ্রিডযুক্ত সোলার ভিত্তিক। সোলার পার্ক থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গ্রিডে সরাসরি সরবরাহ করা হবে। এ কাজে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
আগামী তিন বছরের মধ্যে অতিরিক্ত দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সরকার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তা পূরণে সোলার ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বিশেষ অবদান রাখবে। এ লক্ষ্যেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপিত হচ্ছে সোলার পার্ক। বর্তমান সরকার মোট ৩২টি সোলার পার্ক স্থাপন করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো) কর্তৃক নতুন ৫টি সোলার পার্ক স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগস্থ টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়ার কর্নফুলী নদীসংলগ্ন এলাকায় ৬০ মে: ও: সোলার পার্ক প্রকল্প, গঙ্গাচড়ায় ৫৫ মেগা ওয়াটের সোলার পার্ক, কুড়িগ্রাম জেলার ধরলা নদীসংলগ্ন এলাকায় বিওও ভিত্তিক “ধরলা ৩০ মে: ও: সোলারপার্ক” প্রকল্প, সরিষাবাড়ি, জামালপুরে ৩ মেগাওয়াট গ্রিড কানেক্টেড সোলার পিভি পাওয়ারপ্ল্যান্ট বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়নবোর্ড (বাবিউবো)। যা থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলে তা দিয়ে জনগণের বাড়তি বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো সম্ভব। সরকারি মালিকানাধীন কিন্তু কৃষি উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছেনা এবং ব্যক্তি পর্যায়ে বিনিয়োগকারীদের মালিকানাধীন ব্যক্তিগত জমি এ’দু ধরনের জমি চিহ্নিত করে প্রাথমিকভাবে দুটি ক্যাটাগরীতে ৮টি সম্ভাবনাময় সাইটে সোলার পার্ক স্থাপনের জন্য কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশে প্রতি বছরে গড়ে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ দিন সূর্যালোক থাকে। এ থেকে প্রতিদিন প্রায় পাঁচকিলোওয়াট/ঘণ্টা শক্তি এদেশের প্রতি বর্গমিটার জমিতে পতিত হচ্ছে। সম্ভাবনাময় এ উৎসকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের সব পতিত জমি গুলোতে সোলার পার্ক স্থাপন করে সৌর শক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রুপান্তর করা গেলে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র যা দেশের সার্বিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।