ঢাকা ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

উন্নত জাতের সবজি স্কোয়াস চাষ হচ্ছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:২৩:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
  • ৫৪৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অতি পুষ্টিকর, সু-স্বাদু, সল্পমেয়াদি, লাভ জনক শীতকালীন, উন্নত জাতের সবজি স্কোয়াস চাষ হচ্ছে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায়। ইতোমধ্যে এ স্কোয়াস চাষ করে এলাকায় বেশ সুনাম অর্জন করেছেন চাষি আনোয়ার হোসেন।

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার আহম্মোদাবাদ ইউনিয়নে উত্তর-ভাবকি গ্রামের এক বেকার যুবক আনোয়ার হোসেন। জহুরুল ইসলামের ছেলে আনোয়ার হোসেন গত ৩ বছর ধরে ৭ শতক জমি বর্গা নিয়ে স্কোয়াস চাষ করে লাভবান হয়েছেন। ভালো ফলন এবং বাজারে স্কোয়াস বিক্রির লাভ দিয়ে আরো চার বিঘা জমি বর্গা নিয়েছেন তিনি। তার এ সাফল্য দেখে গ্রামের অন্যান্য কৃষক ও কৃষাণীরা স্কোয়াস চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

স্কোয়াস সবজি চাাষি আনোয়ার হোসেন জানায়, অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে সামান্য আয় হলেও সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত। পৈতৃক ভাবে প্রাপ্ত ১২ শতাংশ জমির উপর আছে একটা কুড়েঁ ঘর। বাবা-মা ও তিন ভাই-বোন মিলে সংসার। আনোয়ার বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান। টাকার অভাবে লেখা পড়া বেশি দিন চালানো সম্ভব হয়নি। সব সময় অসহায়ের মতো দিন যাপন করার একপর্যায়ে প্রতিবেশী আব্দুস সামাদ মন্ডলের জমিতে স্কোয়াস সবজি চাষ ও লাভবান হওয়া দেখে উদ্বুদ্ধ হয় আনোয়ার।

জয়পুরহাট রানা বীজ ভান্ডার থেকে কয়েক পিস বিদেশী জাতের ( ভারত থেকে আমদানি করা) স্কোয়াসের বীজ অনেক চড়া দামে কিনে নেয়। সেই বীজ দিয়ে ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে ধার দেনা করে, বর্গা নেওয়া ৭ শতাংশ জমিতে বিদেশী নতুন জাতের এ স্কোয়াস সবজি চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরে স্কোয়াস বিক্রি করে লাভ হয় প্রায় ২৫ হাজার টাকা ।

সেই থেকে প্রতি বছরে ওই ৭ শতাংশ জমিতে স্কোয়াস চাষ করে আসছে আনোয়ার। ৭ শতাংশ জমিতে স্কোয়াস চাষের জন্য খরচ পড়ে মাত্র ২০০০ হাজার টাকার মতো। এবারও স্কোয়াসের ফলনও অনেক ভাল হয়েছে। সপ্তাহে এক বার করে ক্ষেত থেকে স্কোয়াস তুলে বিক্রি করা সম্ভব হয়। গত ২ সপ্তাহে স্কোয়াস বিক্রি করা হয় প্রায় ৩০০ পিস, যা বাজার মূল্যে প্রায় ১০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। বর্তমান উপজেলার বিভিন্ন পাইকারি হাট-বাজারে এক থেকে দুই কেজি ওজনের প্রতি পিস স্কোয়াস ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আগামী ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত ওই স্কোয়াস বাজারে বিক্রি করা সম্ভব হবে। এরপর গাছ মরে যাবে।

এবারও গত বছরের মতো ভালো লাভ হবে এমন আশা প্রকাশ করেন। স্কোয়াস চাষ করার আয় থেকে সংসারে আগের চেয়ে অনেক অর্থনৈতিক ভাবে সচ্ছতা এসেছে বলে জানান আনোয়ার। এ আয় থেকে বর্তমান চার বিঘা জমি বর্গা নিয়ে অন্য ফসল চাষ করছেন তিনি। কালাই উপজেলার উত্তর-ভাবকি গ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, আলু চাষ করে প্রতি বছর আমার অনেক লোকসান হচ্ছে। আনোয়ারের মতো আমিও ২০ শতক জমিতে বিদেশী (ভারত) স্কোয়াস চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

কালাই উপজেলার কৃষি অফিসার রেজাউল করিম বলেন, স্কোয়াস সবজিটি মুলত ভারতের। অতি পুষ্টিকর, সু-স্বাদু, স্বল্পমেয়াদি, উচ্চ ফলনশীল, লাভ জনক ও শীতকালীন বিদেশী নতুন জাতের সবজি। এটি লাউ গোত্রের সবজি। অন্য ফসলের চেয়ে স্কোয়াস চাষের খরচ অনেক কম লাগে। এটি ফুলের টবেও চাষ করা যায়। স্কোয়াসের বীজ লাগানোর মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে ফুল ধরে, ফল আসে এবং ৭ থেকে ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা যায়। এটি মাছ, মাংসের সঙ্গে রান্না করে এবং সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়। একটু পরিচর্যা করলে অনেক ভালো ফলন পাওয়া যায় বলে জানান কৃষি অফিসার রেজাউল করিম।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ক্যাটরিনার হাতে ২০ বার থাপ্পড় খেয়েছিলেন ইমরান খান

উন্নত জাতের সবজি স্কোয়াস চাষ হচ্ছে

আপডেট টাইম : ০২:২৩:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অতি পুষ্টিকর, সু-স্বাদু, সল্পমেয়াদি, লাভ জনক শীতকালীন, উন্নত জাতের সবজি স্কোয়াস চাষ হচ্ছে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায়। ইতোমধ্যে এ স্কোয়াস চাষ করে এলাকায় বেশ সুনাম অর্জন করেছেন চাষি আনোয়ার হোসেন।

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার আহম্মোদাবাদ ইউনিয়নে উত্তর-ভাবকি গ্রামের এক বেকার যুবক আনোয়ার হোসেন। জহুরুল ইসলামের ছেলে আনোয়ার হোসেন গত ৩ বছর ধরে ৭ শতক জমি বর্গা নিয়ে স্কোয়াস চাষ করে লাভবান হয়েছেন। ভালো ফলন এবং বাজারে স্কোয়াস বিক্রির লাভ দিয়ে আরো চার বিঘা জমি বর্গা নিয়েছেন তিনি। তার এ সাফল্য দেখে গ্রামের অন্যান্য কৃষক ও কৃষাণীরা স্কোয়াস চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

স্কোয়াস সবজি চাাষি আনোয়ার হোসেন জানায়, অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে সামান্য আয় হলেও সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত। পৈতৃক ভাবে প্রাপ্ত ১২ শতাংশ জমির উপর আছে একটা কুড়েঁ ঘর। বাবা-মা ও তিন ভাই-বোন মিলে সংসার। আনোয়ার বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান। টাকার অভাবে লেখা পড়া বেশি দিন চালানো সম্ভব হয়নি। সব সময় অসহায়ের মতো দিন যাপন করার একপর্যায়ে প্রতিবেশী আব্দুস সামাদ মন্ডলের জমিতে স্কোয়াস সবজি চাষ ও লাভবান হওয়া দেখে উদ্বুদ্ধ হয় আনোয়ার।

জয়পুরহাট রানা বীজ ভান্ডার থেকে কয়েক পিস বিদেশী জাতের ( ভারত থেকে আমদানি করা) স্কোয়াসের বীজ অনেক চড়া দামে কিনে নেয়। সেই বীজ দিয়ে ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে ধার দেনা করে, বর্গা নেওয়া ৭ শতাংশ জমিতে বিদেশী নতুন জাতের এ স্কোয়াস সবজি চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরে স্কোয়াস বিক্রি করে লাভ হয় প্রায় ২৫ হাজার টাকা ।

সেই থেকে প্রতি বছরে ওই ৭ শতাংশ জমিতে স্কোয়াস চাষ করে আসছে আনোয়ার। ৭ শতাংশ জমিতে স্কোয়াস চাষের জন্য খরচ পড়ে মাত্র ২০০০ হাজার টাকার মতো। এবারও স্কোয়াসের ফলনও অনেক ভাল হয়েছে। সপ্তাহে এক বার করে ক্ষেত থেকে স্কোয়াস তুলে বিক্রি করা সম্ভব হয়। গত ২ সপ্তাহে স্কোয়াস বিক্রি করা হয় প্রায় ৩০০ পিস, যা বাজার মূল্যে প্রায় ১০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। বর্তমান উপজেলার বিভিন্ন পাইকারি হাট-বাজারে এক থেকে দুই কেজি ওজনের প্রতি পিস স্কোয়াস ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আগামী ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত ওই স্কোয়াস বাজারে বিক্রি করা সম্ভব হবে। এরপর গাছ মরে যাবে।

এবারও গত বছরের মতো ভালো লাভ হবে এমন আশা প্রকাশ করেন। স্কোয়াস চাষ করার আয় থেকে সংসারে আগের চেয়ে অনেক অর্থনৈতিক ভাবে সচ্ছতা এসেছে বলে জানান আনোয়ার। এ আয় থেকে বর্তমান চার বিঘা জমি বর্গা নিয়ে অন্য ফসল চাষ করছেন তিনি। কালাই উপজেলার উত্তর-ভাবকি গ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, আলু চাষ করে প্রতি বছর আমার অনেক লোকসান হচ্ছে। আনোয়ারের মতো আমিও ২০ শতক জমিতে বিদেশী (ভারত) স্কোয়াস চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

কালাই উপজেলার কৃষি অফিসার রেজাউল করিম বলেন, স্কোয়াস সবজিটি মুলত ভারতের। অতি পুষ্টিকর, সু-স্বাদু, স্বল্পমেয়াদি, উচ্চ ফলনশীল, লাভ জনক ও শীতকালীন বিদেশী নতুন জাতের সবজি। এটি লাউ গোত্রের সবজি। অন্য ফসলের চেয়ে স্কোয়াস চাষের খরচ অনেক কম লাগে। এটি ফুলের টবেও চাষ করা যায়। স্কোয়াসের বীজ লাগানোর মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে ফুল ধরে, ফল আসে এবং ৭ থেকে ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা যায়। এটি মাছ, মাংসের সঙ্গে রান্না করে এবং সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়। একটু পরিচর্যা করলে অনেক ভালো ফলন পাওয়া যায় বলে জানান কৃষি অফিসার রেজাউল করিম।