হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক সময়ের তামাকের রাজধানী খ্যাত লালমনিরহাটে বৃদ্ধি পাচ্ছে ভুট্টার চাষাবাদ। বিশেষ করে পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা দুই উপজেলায় ভুট্টা চাষা বেড়েছে বহুগুণে। ব্যাপক ফলনের কারণে এ জেলার ব্র্যান্ডিং পণ্য হিসেবে স্থান পেয়েছে ভুট্টা। কৃষকরা জানান, রংপুর অঞ্চলের মধ্যে পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলায় চাষ হতো জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তামাক।
তামাকের ব্যাপকতার কারণে এসব এলাকায় গড়ে উঠেছিল বড় বড় তামাক ক্রয় কেন্দ্র। এ দুই উপজেলার তামাক দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হতো। এমনকি বিদেশেও পাঠাতো কিছু তামক কোম্পানি। সাত/আট বছর আগেও তামাকের রাজধানী হিসেবে পরিচিত ছিল পাটগ্রাম উপজেলা। একটানা তামাক চাষের কারণে উৎপাদন কমে আসায় আস্তে আস্তে কৃষকরা নিরুৎসাহিত হয়ে তামাক ছেড়ে ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছে।
মানুষ, গবাদিপশু, পাখির খাদ্য এবং জ্বালানি হিসেবে প্রতিনিয়ত ভুট্টার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় কম খরচে অধিক মুনাফার আশায় এ অঞ্চলে বাড়ছে ভুট্টার চাষাবাদ। চাষাবাদ বেড়ে যাওয়ায় ভুট্টার বড় বাজার তৈরি হয়েছে এখন পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলায়। গড়ে উঠেছে বড় বড় গোডাউন ও ভুট্টা ক্রয় কেন্দ্র। মাটির গুণগত মান ভালো হওয়ায় এখানে উৎপাদিত ভুট্টাও বেশ ভালো মানের। তাই ব্যবসায়ীরা ছুটছেন এ অঞ্চলে। তারা এখান থেকে ভুট্টা কিনে দেশের যেসব কারখানায় ভুট্টাজাত পণ্য তৈরি হয় সেসব কারখানায় সরবরাহ করছেন।
পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের বুড়িরবাড়ি গ্রামের তামাক চাষি গফুর আলী ও রহিদুল ইসলাম বলেন, বিগত ১০ বছর আগে পুরো এলাকায় ছিল শুধু তামাক আর তামাক। তামাকের রাজধানী ছিল এটা। উৎপাদন কমে যাওয়ায় আগের মতো আর তামাক চাষ হয় না। কৃষক হিসেবে সবই কিছু কিছু করে চাষ করতে হয়, তাই কিছু তামাক চাষ করেছি। তবে ভুট্টা চাষ করেছি অনেক বেশি।
হাতীবান্ধার উপজেলার পারুলীয়া গ্রামের চাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, আগে সব জমিতে তামাক করতাম। এখন কোনো তামাক নেই। ছয় বিঘা জমির সবটাই ভুট্টা। ভুট্টার কাণ্ড, পাতা, ছাল-বাকল সব কিছুই বিক্রি করা যায়। চাহিদা বেশি থাকায় কম খরচে অধিক মুনাফার জন্য ভুট্টার বিকল্প নেই। ভুট্টাজাত পণ্য তৈরির কারখানা এ অঞ্চলে গড়ে উঠলে চাষিরা আরো বেশি লাভবান