ঢাকা ০৯:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাত্র এক টাকায় আহার আপনিও অংশ নিন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৫৮:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৮
  • ৪২৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মাত্র এক টাকায় আহার! বাংলার পথে পথে এই আহার চলে খোলা আকাশের নীচে কিংবা স্টেশনের প্লাটফর্মে। এঁদের কেউ অভুক্ত থাকে সারারাত, কেউবা আরো বেশি। এক টাকায় এক প্যাকেট খাবার পেয়ে কেউ খুশিতে আত্মহারা হয়, কেউবা দৌড়িয়ে লাইনে দাঁড়ায়।

সবার জন্য শিক্ষার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে স্বেচ্ছ্বাসেবীদের উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। পরবর্তীতে তারাই শুরু করেছে ‘এক টাকার আহার’ প্রকল্প। প্রকল্পটির আওতায় দরিদ্র শিশু ও বৃদ্ধরা এক টাকায় পেট ভরে খেতে পারছে।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাশ জানান, ক্ষুধার্তকে এক বেলা খাওয়ানোর আনন্দ থেকে বিদ্যানন্দের যাত্রা শুরু। আর্থিক অসংগতি থাকা মানুষের জন্য এক বেলা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে। মাত্র এক টাকার বিনিময়ে এক বেলার সুস্বাদু খাবার তাদের পরিতৃপ্তি জোগাতে অনেকটাই সক্ষম।

তিনি আরও জানান, এক বেলার এই খাবার যেন অসহায় মানুষগুলোকে ভিক্ষাবৃত্তি বলে মনে না করায় সেজন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ন্যূনতম একটি মূল্য রাখা হয়। আর সেই ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এক টাকা। অপরের দেওয়া খাবার খেতে যেন অসহায় মানুষগুলোকে ভাবতে না হয় তারা সত্যিকার অর্থেই খাবারের মূল্য পরিশোধে অপারগ।

‘এক টাকার আহার’ এর ফেসবুক পাতায় লেখা হয়েছে, ‘ক্ষুধার মাঝে বেড়ে উঠা এক মানুষের হাত ধরে বিদ্যানন্দের এই প্রকল্পটি শুরু। প্রতিদিন ৫০০ জনের রান্না হয়। এরপর ভ্যানে কিংবা রিক্সায় চলে যায় নির্দিষ্ট জায়গায়। এক টাকার বিনিময়ে যে কোনো পথশিশু কিংবা বৃদ্ধ কিনে নিতে পারে এই খাবার।’

তারা জানাচ্ছেন, বর্তমানে প্রজেক্টি অর্থ সঙ্কটের মুখে পড়েছে। তারা প্রজেক্টটি বন্ধ হওয়া আটকাতে দাতা খুঁজছে।

তাদের ফেসবুক পেজে তারা লিখেছেন, ‘দুই মাস আগেও এই প্রজেক্টে দৈনিক দশ হাজার মানুষের আহার হতো, এখন সেখানে হয় মাত্র দুই হাজার জনের আহার। প্রজেক্ট টিকিয়ে রাখতে ইতিমধ্যে আগামী মাসের জন্য ঋণের যোগান নিশ্চিত করছি। হাল ছেড়ে ঘরে ফেরা যায়, সেক্ষেত্রে নিজেকেই মাপ করতে পারবো না, এই ছিন্নমূল শিশুগুলোর নৈতিক ক্ষতি মেনে নিতে পারবো না।’

তারা আরও লেখেন, ‘উদ্যোগটি বন্ধ হলে আমরা হয়তো হতাশ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবো, মনে পড়বে এই শিশুদের কথা, আপনারাও কি ভূলতে পারবেন এই প্রজেক্টটিকে? দুপুরে খাবার খেতে বসে কি একবারও মনে প্রশ্ন আসবে না – আজ কি আহার জুটেছিলো এই শিশুদের, নাকি খাবারের জন্য দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা?’

সাংবাদিক সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু তার ফেসবুকে লেখেন, ‘অর্থ সঙ্কটে এক টাকায় আহার প্রকল্প। ভাবতেও কষ্ট হয় এমন মহতী প্রকল্প কেবল টাকার অভাবে গুটিয়ে যাবে।’

তিনি আরও লেখেন, ‘আমরা প্রতি দিন কতভাবেই না কত টাকা অপচয় করি, একটি সিগারেট কিনি ১১টাকায়। একটি লিপস্টিক কিনি হাজার টাকায়, শটাকায় শখে খাই সামান্য বার্গার। আসুন যে যতটুকু পারি এদের পাশে দাঁড়াই, সাহায্য করি।’

‘এক টাকায় আহার’ প্রজেক্টকে বাঁচিয়ে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন কর্তৃপক্ষ। অনুদানে উৎসাহী দাতাদের পেজের ইনবক্সে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মাত্র এক টাকায় আহার আপনিও অংশ নিন

আপডেট টাইম : ০৭:৫৮:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মাত্র এক টাকায় আহার! বাংলার পথে পথে এই আহার চলে খোলা আকাশের নীচে কিংবা স্টেশনের প্লাটফর্মে। এঁদের কেউ অভুক্ত থাকে সারারাত, কেউবা আরো বেশি। এক টাকায় এক প্যাকেট খাবার পেয়ে কেউ খুশিতে আত্মহারা হয়, কেউবা দৌড়িয়ে লাইনে দাঁড়ায়।

সবার জন্য শিক্ষার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে স্বেচ্ছ্বাসেবীদের উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। পরবর্তীতে তারাই শুরু করেছে ‘এক টাকার আহার’ প্রকল্প। প্রকল্পটির আওতায় দরিদ্র শিশু ও বৃদ্ধরা এক টাকায় পেট ভরে খেতে পারছে।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাশ জানান, ক্ষুধার্তকে এক বেলা খাওয়ানোর আনন্দ থেকে বিদ্যানন্দের যাত্রা শুরু। আর্থিক অসংগতি থাকা মানুষের জন্য এক বেলা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে। মাত্র এক টাকার বিনিময়ে এক বেলার সুস্বাদু খাবার তাদের পরিতৃপ্তি জোগাতে অনেকটাই সক্ষম।

তিনি আরও জানান, এক বেলার এই খাবার যেন অসহায় মানুষগুলোকে ভিক্ষাবৃত্তি বলে মনে না করায় সেজন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ন্যূনতম একটি মূল্য রাখা হয়। আর সেই ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এক টাকা। অপরের দেওয়া খাবার খেতে যেন অসহায় মানুষগুলোকে ভাবতে না হয় তারা সত্যিকার অর্থেই খাবারের মূল্য পরিশোধে অপারগ।

‘এক টাকার আহার’ এর ফেসবুক পাতায় লেখা হয়েছে, ‘ক্ষুধার মাঝে বেড়ে উঠা এক মানুষের হাত ধরে বিদ্যানন্দের এই প্রকল্পটি শুরু। প্রতিদিন ৫০০ জনের রান্না হয়। এরপর ভ্যানে কিংবা রিক্সায় চলে যায় নির্দিষ্ট জায়গায়। এক টাকার বিনিময়ে যে কোনো পথশিশু কিংবা বৃদ্ধ কিনে নিতে পারে এই খাবার।’

তারা জানাচ্ছেন, বর্তমানে প্রজেক্টি অর্থ সঙ্কটের মুখে পড়েছে। তারা প্রজেক্টটি বন্ধ হওয়া আটকাতে দাতা খুঁজছে।

তাদের ফেসবুক পেজে তারা লিখেছেন, ‘দুই মাস আগেও এই প্রজেক্টে দৈনিক দশ হাজার মানুষের আহার হতো, এখন সেখানে হয় মাত্র দুই হাজার জনের আহার। প্রজেক্ট টিকিয়ে রাখতে ইতিমধ্যে আগামী মাসের জন্য ঋণের যোগান নিশ্চিত করছি। হাল ছেড়ে ঘরে ফেরা যায়, সেক্ষেত্রে নিজেকেই মাপ করতে পারবো না, এই ছিন্নমূল শিশুগুলোর নৈতিক ক্ষতি মেনে নিতে পারবো না।’

তারা আরও লেখেন, ‘উদ্যোগটি বন্ধ হলে আমরা হয়তো হতাশ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবো, মনে পড়বে এই শিশুদের কথা, আপনারাও কি ভূলতে পারবেন এই প্রজেক্টটিকে? দুপুরে খাবার খেতে বসে কি একবারও মনে প্রশ্ন আসবে না – আজ কি আহার জুটেছিলো এই শিশুদের, নাকি খাবারের জন্য দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা?’

সাংবাদিক সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু তার ফেসবুকে লেখেন, ‘অর্থ সঙ্কটে এক টাকায় আহার প্রকল্প। ভাবতেও কষ্ট হয় এমন মহতী প্রকল্প কেবল টাকার অভাবে গুটিয়ে যাবে।’

তিনি আরও লেখেন, ‘আমরা প্রতি দিন কতভাবেই না কত টাকা অপচয় করি, একটি সিগারেট কিনি ১১টাকায়। একটি লিপস্টিক কিনি হাজার টাকায়, শটাকায় শখে খাই সামান্য বার্গার। আসুন যে যতটুকু পারি এদের পাশে দাঁড়াই, সাহায্য করি।’

‘এক টাকায় আহার’ প্রজেক্টকে বাঁচিয়ে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন কর্তৃপক্ষ। অনুদানে উৎসাহী দাতাদের পেজের ইনবক্সে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ