ঢাকা ১০:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত বীজতলার কৃষকের দুশ্চিন্তার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪৭:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জানুয়ারী ২০১৮
  • ৩৭৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরসহ দেশের শষ্যভান্ডারখ্যাত উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার বিভিন্ন ইরি বোরো চাষের এলাকায় ঘন কুয়াশা ও শীতের তীব্রতা অতীতের রেকর্ড ভঙ্গ করায় বীজতলা নষ্ট হচ্ছে।

শাহজাদপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকায়ই তাপমাত্রা অস্বাভাবিক মাত্রায় নিচে টানা কয়েকদিন নেমে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঘনকুয়াশা আর রেকর্ড মাত্রায় তাপমাত্রা নিচে নেমে আসায় শাহজাদপুরসহ উত্তরাঞ্চলের মাঠে থাকা ইরি বোরো ধানের চারা ও বীজতলা কোল্ড ইজনুরিতে বিবর্ণ ও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এতে এ অঞ্চলের কৃষকদের বুকভরা আশা ক্রমশঃ হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছে। অনেক কৃষক ইরি বোরো ধানের চারা ও বীজতলা থেকে কুয়াশার পানি সরানোর কাজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আবার এ অঞ্চলের অনেক কৃষকেরা পলিথিন দিয়ে ধানের চারা ও বীজতলা রক্ষার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

শীতের তীব্রতা আর ঘনকুয়াশায় এ অঞ্চলের অনেক স্থানের বীজতলা নষ্ট হতে শুরু করায় ইরি বোরোর আবাদে ধানের চারা নিয়ে চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছেন। কৃষকেরা জানিয়েছে, এ অঞ্চলে সিংহভাগ সময় ঘন কুয়াশার আচ্ছাদনে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে প্রকৃতি।

বৈরী আবহাওয়ার কারণে বোরো বীজতলা স্যাঁতসেঁতে ও বিবর্ণ হয়ে মরে যাচ্ছে। শাহজাদপুর উপজেলার দরগাহ’র চর এলাকার ৮২ বছর বয়সী বয়োবৃদ্ধ আবু সাঈদ সরকার জানিয়েছেন,’তার জীবদ্দশায় ইরি বোরো ধানের চারা ও বীজতলার এমন করুণ দশা তিনি দেখেননি।

টানা কয়েকদিন যাবৎ ঘন কুয়াশা আর শীতের তীব্রতায় এ বছর ফল শুন্যের বছরে পরিণত হবার আলামত পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের দীর্ঘস্থায়িত্ব জনিত কারণে লাউ গাছে লাউ মরে যাচ্ছে, নারিকেল গাছে নারিকেল নেই, সরিষা গাছের উপরিভাগে চিটার সৃষ্টি হচ্ছে যা ফসলহানীর ইঙ্গিত বহন করছে।

একই মাঠে ইরি বোরো ধানের চারা ও বীজতলা তৈরিকারী মো. শরিফুল ইসলাম নামের অপর এক কৃষক জানান, ‘গত কয়েকদিন ধরে তীব্র শীত আর ঘনকুয়াশায় বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।এসব ধানের চারা ইতিপূর্বের একই সময়ে ৫ থেকে ৮ ইঞ্চি লম্বা ও তরতাজা সবুজাকার ধারণ করলেও টানা শীতের কবলে পড়ে চারাগাছ আশানুরূপভাবে বাড়েনি।

এসব কম বর্ধিত ধানের চারাগাছের উপরিভাগে লালচে আকার ধারণ করছে এবং পরবর্তীতে লালচে বর্ণ ধারণকারী চারাগুলো মরে যেতে শুরু করেছে। শরীকসহ চাষী শরিফুল চলতি বছর প্রায় এক বিঘা জমিতে বীজতলা করেছেন যার বেশির ভাগ চারাগাছের উপরিভাগেই লালচে বর্ণ ধারণ করেছে। শাহজাদপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে মারা যাওয়া ধানের চারা নিয়ে কৃষকেরা চরম দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত বীজতলার কৃষকের দুশ্চিন্তার

আপডেট টাইম : ০৫:৪৭:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জানুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরসহ দেশের শষ্যভান্ডারখ্যাত উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার বিভিন্ন ইরি বোরো চাষের এলাকায় ঘন কুয়াশা ও শীতের তীব্রতা অতীতের রেকর্ড ভঙ্গ করায় বীজতলা নষ্ট হচ্ছে।

শাহজাদপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকায়ই তাপমাত্রা অস্বাভাবিক মাত্রায় নিচে টানা কয়েকদিন নেমে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঘনকুয়াশা আর রেকর্ড মাত্রায় তাপমাত্রা নিচে নেমে আসায় শাহজাদপুরসহ উত্তরাঞ্চলের মাঠে থাকা ইরি বোরো ধানের চারা ও বীজতলা কোল্ড ইজনুরিতে বিবর্ণ ও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এতে এ অঞ্চলের কৃষকদের বুকভরা আশা ক্রমশঃ হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছে। অনেক কৃষক ইরি বোরো ধানের চারা ও বীজতলা থেকে কুয়াশার পানি সরানোর কাজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আবার এ অঞ্চলের অনেক কৃষকেরা পলিথিন দিয়ে ধানের চারা ও বীজতলা রক্ষার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

শীতের তীব্রতা আর ঘনকুয়াশায় এ অঞ্চলের অনেক স্থানের বীজতলা নষ্ট হতে শুরু করায় ইরি বোরোর আবাদে ধানের চারা নিয়ে চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছেন। কৃষকেরা জানিয়েছে, এ অঞ্চলে সিংহভাগ সময় ঘন কুয়াশার আচ্ছাদনে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে প্রকৃতি।

বৈরী আবহাওয়ার কারণে বোরো বীজতলা স্যাঁতসেঁতে ও বিবর্ণ হয়ে মরে যাচ্ছে। শাহজাদপুর উপজেলার দরগাহ’র চর এলাকার ৮২ বছর বয়সী বয়োবৃদ্ধ আবু সাঈদ সরকার জানিয়েছেন,’তার জীবদ্দশায় ইরি বোরো ধানের চারা ও বীজতলার এমন করুণ দশা তিনি দেখেননি।

টানা কয়েকদিন যাবৎ ঘন কুয়াশা আর শীতের তীব্রতায় এ বছর ফল শুন্যের বছরে পরিণত হবার আলামত পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের দীর্ঘস্থায়িত্ব জনিত কারণে লাউ গাছে লাউ মরে যাচ্ছে, নারিকেল গাছে নারিকেল নেই, সরিষা গাছের উপরিভাগে চিটার সৃষ্টি হচ্ছে যা ফসলহানীর ইঙ্গিত বহন করছে।

একই মাঠে ইরি বোরো ধানের চারা ও বীজতলা তৈরিকারী মো. শরিফুল ইসলাম নামের অপর এক কৃষক জানান, ‘গত কয়েকদিন ধরে তীব্র শীত আর ঘনকুয়াশায় বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।এসব ধানের চারা ইতিপূর্বের একই সময়ে ৫ থেকে ৮ ইঞ্চি লম্বা ও তরতাজা সবুজাকার ধারণ করলেও টানা শীতের কবলে পড়ে চারাগাছ আশানুরূপভাবে বাড়েনি।

এসব কম বর্ধিত ধানের চারাগাছের উপরিভাগে লালচে আকার ধারণ করছে এবং পরবর্তীতে লালচে বর্ণ ধারণকারী চারাগুলো মরে যেতে শুরু করেছে। শরীকসহ চাষী শরিফুল চলতি বছর প্রায় এক বিঘা জমিতে বীজতলা করেছেন যার বেশির ভাগ চারাগাছের উপরিভাগেই লালচে বর্ণ ধারণ করেছে। শাহজাদপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে মারা যাওয়া ধানের চারা নিয়ে কৃষকেরা চরম দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।