হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি মাসের ২৩ তারিখ থেকেই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করবে মিয়ানমার। ওই দিন প্রথম ব্যাচে ১২৫৮ জনকে ফিরিয়ে নেবে দেশটির সরকার। আজ মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গতকাল রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের রাখাইনে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে যে মাঠপর্যায়ের ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’নামের চুক্তিটি হয় তার আলোকেই এই প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে।
ওই চুক্তি অনুসারে প্রত্যাবাসন শুরুর দুই বছরের মধ্যে তা সম্পন্ন করা হবে। নতুন এই চুক্তি অনুসারে দিনে ৩০০ থেকে ৫০০ করে রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো ধারনা পাওয়া গেছে। সপ্তাহের ৫ দিন চলবে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম।
মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রথম ব্যাচের জন্য ৫০৮ জন হিন্দু ও ৭৫০ জন মুসলমানকে নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করা গেছে। তাদের বিস্তারিত তথ্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং প্রত্যাবাসনের প্রথম ব্যাচ হিসেবে তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে বলে বাংলাদেশ সরকারকে চিঠিতে জানানো হয়েছে।
গতকাল মিয়ানমারের রাজধানী নাইপিডোতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) বৈঠকে চুক্তিটি চূড়ান্ত রূপ পায়।
পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক বাংলাদেশের এবং মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব মিন্ট থোয়ে নিজ নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন।
গতকাল পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা সফলভাবে ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট চূড়ান্ত করে ফেলেছি। সেই সঙ্গে যেসব রোহিঙ্গা ফেরত যাবেন, তাদের জন্য একটি ফরমের রূপও চূড়ান্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ওই চুক্তিতে প্রত্যাবাসনের সংখ্যাসহ অন্য যেসব বিষয় আছে, সেগুলোর উল্লেখ আছে। বিশেষ করে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার ভূমিকার বিষয়টি এখানে যুক্ত করা হয়েছে। এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রত্যাবাসনের পর রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জীবন-জীবিকার বিষয় নিশ্চিত করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত আছে।
দুই পক্ষ যদি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে, তবে টেকসই উপায়ে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্র সচিব।
চুক্তি অনুযায়ী প্রত্যাবাসন দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার মধ্যবর্তী সময়ে এ প্রক্রিয়ার অগ্রগতির বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে বিভিন্ন সময়।
প্রত্যাবাসন যাতে দ্রুত শেষ করা যায় সে জন্য বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্টে থাকা রোহিঙ্গাদের দিয়েই এ কাজ শুরু করতে দুই দেশ রাজি হয়।
গত নভেম্বরে প্রতি সপ্তাহে ১৫ হাজার করে রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। অপরদিকে মিয়ানমারের প্রস্তাব ছিল শনি ও রোববার বাদ দিয়ে সপ্তাহে ১৫০০ করে রোহিঙ্গাকে ফেরত নেওয়া। বৈঠকে দুইটি প্রস্তাবের মধ্যবর্তী একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সেই প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ করে রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো হতে পারে।