ঢাকা ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শীতে ও কুয়াশায় শুকিয়ে বিবর্ণ হচ্ছে বোরো বীজতলা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫০:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০১৮
  • ৩১৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শস্য ভান্ডার খ্যাত বগুড়ায় জেলায় এবার ইরি বোরো চাষ প্রচন্ড শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে থমকে দাঁড়িয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে বীজতলা লাল হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। তীব্র শীতের কারণে দিনমজুররা মাঠে নামতে পারছে না। তাই নির্দিষ্ট সময়ে ইরি বোরো রোপণে ভাটা পড়েছে।

প্রতিবছর এই সময়ে ইরি বোরো চাষে কৃষকরা বীজতলা থেকে বীজ উত্তোলন, দিনরাত সেচ পাম্প খোলা এবং চারা রোপণে ব্যস্ত দেখা গেলেও এবার মাঠে সে দৃশ্য চোখে পড়ছে অল্পই। সরেজমিনে বগুড়ার গাবতলী, সারিয়াকান্দি, ধুনট, কাহালু উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে প্রায় ৮০ শতাংশ ইরি বোরো বীজতলা শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে বাড়েনি। লালচে হয়ে অনেক ক্ষেত্রেই শুকিয়ে যাচ্ছে।

মাঠে কৃষকদের ইরি বোরো রোপণ করতে দেখা যাচ্ছে খুব কমই। সেচ পাম্পগুলো অল্পই চালু রয়েছে। অথচ এসময়ে মাঠে মাঠে ইরি বোরো রোপণে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকদের ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। দিন রাত সেচ পাম্পগুলো খোলা থাকত। ট্রাক্টরে জমি চাষের দৃশ্য ছিল অহরহ। সকালে বীজতলা থেকে চারা উঠাতে ব্যাস্ত থাকত কৃষকেরা।

বগুড়ার বোরো চাষীরা জানিয়েছে, “তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশোর কারণে ইরি বোরোর চারা বড় হচ্ছে না। লালচে রং ধরে শুকিয়ে যাচ্ছে। চারাগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। দুর্বল চারায় ফলন ভালো হবে না। ধুনটের চিথুলিয়া গ্রামের বোরো চাষী রাব্বানী জানান, “এসময় প্রতিদিন দিনমজুর হিসাবে অধিক টাকায় মাঠে ব্যস্ত থাকলেও শীতের কারণে বর্তমানে ইরি বোরো রোপণ করা যাচ্ছে না।

প্রচন্ড ঠান্ডার কারনে কিছুক্ষন রোপণ করার পর হাতে আর অনুভূতি পাওয়া যায় না। তাই বসে আছি। ওই গ্রামের সেচ পাম্পের মালিক রাবিন সরকার জানান, “কৃষকরা মাঠে নামছে না। তাই জমির মালিকরাও ইরি বোরো চাষের জন্য জমি তৈরি করছে খুব কম। একারণেই প্রায় সময়েই সেচ পাম্প বন্ধ থাকছে। আগে এই সময়ে দিন রাত সেচ পাম্প খোলা থাকত।

বগুড়ার চারমাথা বাসষ্ট্যান্ডে কথা হলো নীলফামারীর ডোমার উপজেলার আব্দুল বাছেদ ও রংপুরের গঙ্গাচরার কুদ্দুস মিয়ার সাথে। তারাও জানালেন, বীজতলা লাল এবং শুকিয়ে যাওয়ার কথা। পাশাপাশি জানালেন, তীব্র শীতে মাঠে নামতে পারছে না দিনমজুররা। তাই ইরি বেরো চাষের গতি থেমে গেছে। শীত না কমলে মাঠে নামতে পারবে না কৃষকরা। বগুড়া কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রতুল কুমার চন্দ্র জানান, বগুড়ায় ইরি বোরো চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ৯২ হাজার হেক্টর জমি।

বীজতলা ধরা হয়েছে ১৩ হাজার হেক্টর। ঘনকুয়াশা আর শীতের কারনে সুর্যের আলো না থাকায় বীজতলাগুলো লালচে হচ্ছে। তবে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে রাতের বেলা বীজতলা পানি সেচ দিয়ে ডুবিয়ে রেখে সকাল বেলা সেই পানি আবার নিস্কাশন করার জন্য। এছাড়াও পলি পেপার দিয়ে বীজতলা ঢেকে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শীতে ও কুয়াশায় শুকিয়ে বিবর্ণ হচ্ছে বোরো বীজতলা

আপডেট টাইম : ১০:৫০:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শস্য ভান্ডার খ্যাত বগুড়ায় জেলায় এবার ইরি বোরো চাষ প্রচন্ড শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে থমকে দাঁড়িয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে বীজতলা লাল হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। তীব্র শীতের কারণে দিনমজুররা মাঠে নামতে পারছে না। তাই নির্দিষ্ট সময়ে ইরি বোরো রোপণে ভাটা পড়েছে।

প্রতিবছর এই সময়ে ইরি বোরো চাষে কৃষকরা বীজতলা থেকে বীজ উত্তোলন, দিনরাত সেচ পাম্প খোলা এবং চারা রোপণে ব্যস্ত দেখা গেলেও এবার মাঠে সে দৃশ্য চোখে পড়ছে অল্পই। সরেজমিনে বগুড়ার গাবতলী, সারিয়াকান্দি, ধুনট, কাহালু উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে প্রায় ৮০ শতাংশ ইরি বোরো বীজতলা শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে বাড়েনি। লালচে হয়ে অনেক ক্ষেত্রেই শুকিয়ে যাচ্ছে।

মাঠে কৃষকদের ইরি বোরো রোপণ করতে দেখা যাচ্ছে খুব কমই। সেচ পাম্পগুলো অল্পই চালু রয়েছে। অথচ এসময়ে মাঠে মাঠে ইরি বোরো রোপণে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকদের ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। দিন রাত সেচ পাম্পগুলো খোলা থাকত। ট্রাক্টরে জমি চাষের দৃশ্য ছিল অহরহ। সকালে বীজতলা থেকে চারা উঠাতে ব্যাস্ত থাকত কৃষকেরা।

বগুড়ার বোরো চাষীরা জানিয়েছে, “তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশোর কারণে ইরি বোরোর চারা বড় হচ্ছে না। লালচে রং ধরে শুকিয়ে যাচ্ছে। চারাগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। দুর্বল চারায় ফলন ভালো হবে না। ধুনটের চিথুলিয়া গ্রামের বোরো চাষী রাব্বানী জানান, “এসময় প্রতিদিন দিনমজুর হিসাবে অধিক টাকায় মাঠে ব্যস্ত থাকলেও শীতের কারণে বর্তমানে ইরি বোরো রোপণ করা যাচ্ছে না।

প্রচন্ড ঠান্ডার কারনে কিছুক্ষন রোপণ করার পর হাতে আর অনুভূতি পাওয়া যায় না। তাই বসে আছি। ওই গ্রামের সেচ পাম্পের মালিক রাবিন সরকার জানান, “কৃষকরা মাঠে নামছে না। তাই জমির মালিকরাও ইরি বোরো চাষের জন্য জমি তৈরি করছে খুব কম। একারণেই প্রায় সময়েই সেচ পাম্প বন্ধ থাকছে। আগে এই সময়ে দিন রাত সেচ পাম্প খোলা থাকত।

বগুড়ার চারমাথা বাসষ্ট্যান্ডে কথা হলো নীলফামারীর ডোমার উপজেলার আব্দুল বাছেদ ও রংপুরের গঙ্গাচরার কুদ্দুস মিয়ার সাথে। তারাও জানালেন, বীজতলা লাল এবং শুকিয়ে যাওয়ার কথা। পাশাপাশি জানালেন, তীব্র শীতে মাঠে নামতে পারছে না দিনমজুররা। তাই ইরি বেরো চাষের গতি থেমে গেছে। শীত না কমলে মাঠে নামতে পারবে না কৃষকরা। বগুড়া কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রতুল কুমার চন্দ্র জানান, বগুড়ায় ইরি বোরো চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ৯২ হাজার হেক্টর জমি।

বীজতলা ধরা হয়েছে ১৩ হাজার হেক্টর। ঘনকুয়াশা আর শীতের কারনে সুর্যের আলো না থাকায় বীজতলাগুলো লালচে হচ্ছে। তবে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে রাতের বেলা বীজতলা পানি সেচ দিয়ে ডুবিয়ে রেখে সকাল বেলা সেই পানি আবার নিস্কাশন করার জন্য। এছাড়াও পলি পেপার দিয়ে বীজতলা ঢেকে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।