ঢাকা ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শীতে বোরো ধানের বীজতলা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে কৃষকদের সঙ্কটের আশঙ্কা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৩২:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০১৮
  • ৪২২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাবনা জেলায় এ বছর টানা শৈতপ্রবাহ ও কনকনে হাঁড় কাঁপানো শীতে বোরো ধানের বীজতলা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। বীজতলা হলুদ হয়ে আগুনে পোড়ার মতো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থাকে বলা হচ্ছে কোল্ড ডিজিসে আক্রান্ত বীজতলা।

বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আবাদ পূর্ণতা লাভ করতে পারবে না বলে কৃষি বিভাগ ও কৃষকেরা হতাশা প্রকাশ করছেন। চারা সঙ্কটে বোরো আবাদ বিপর্যয় ঘটতে পারে। ঈশ্বরদী আবহাওয়া দফতরের সিনিয়র অবজারভার নাহার বানু এ প্রতিনিধিকে কয়েক দিন ধরে বিরাজ করছে। যার ফলে শীতের তীব্রতা বেশি।

এ দিকে ধানের দাম এবার ভালো পাওয়ায় কৃষক ধান আবাদে ঝুঁকে পড়েন বেশি। কিন্তু যেভাবে বৈরী আবহাওয়া শুরু হয়েছে- তাতে বোরো আবাদের জন্য প্রস্তুতকৃত বীজতলার দৈন্যদশার কারণে আশানুরূপ ফল পাওয়া নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।

কৃষিবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর আবহাওয়া অনেকটাই প্রথম পর্যায়ে ভালো ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে প্রচণ্ড শীতের কারণে বোরো আবাদে মার খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিভূতি ভূষণ সরকার জানান, এবার জেলার ৯টি উপজেলায় এক লাখ ৯৮ হাজার ১২৯ মে. টন বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যে ৫০ হজার ৩৭২ হেক্টরে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আবাদের মধ্যে ধরা হয়েছে হাইব্রিড জাতের এক হাজার ৬৭৮ হেক্টর, উফশি জাতের ৪৮ হাজার ৭৫ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ৬১৯ হেক্টর জমি। এসব ধান রোপণের জন্য বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৩১৩ হেক্টরে। সেখানে কৃষক বীজতলা তৈরি করেছেন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।

তিন হাজার ৩১৩ হেক্টরের স্থলে কৃষকেরা বীজতলা তৈরি করেছেন তিন হাজার ৩৩৮ হেক্টরে। কিন্তু আবহাওয়া অনেকটা প্রতিকূলে থাকায় আবাদের কিছুটা সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।

কৃষিবিভাগের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো: লোকমান হোসেন জানান, অগ্রহায়ণের ১৫ তারিখের মধ্যে যদি বীজতলা তৈরি করা হয়, তাহলে শৈতপ্রবাহে বীজতলায় কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। এ ছাড়া চারা লাগালে ধানের ফুল আসার সময় অধিকাংশে রোগবালাই কম হয় এবং বি-আর ২৯ ও বি-আর ২৮সহ হাইব্রিড জাতীয় ধান এক সাথে ঘরে তুলতে পারে।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিভূতি ভূষণ সরকার জানান, ঘন কুয়াশার মধ্যে সূর্যের তাপ পেলে বীজতলার তেমন ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। ঘন কুয়াশা থেকে বীজতলা রক্ষার জন্য তিনি কৃষককে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।

বিভিন্ন উপজেলার মাঠে তিনি বোরো ধানের বীজতলা দেখে খুবই অভিভূত ছিলেন। কিন্তু প্রচণ্ড শৈতপ্রবাহ ও কনকনে শীতের মধ্যে বীজতলা পড়ায় কৃষক বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শীতে বোরো ধানের বীজতলা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে কৃষকদের সঙ্কটের আশঙ্কা

আপডেট টাইম : ০৮:৩২:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাবনা জেলায় এ বছর টানা শৈতপ্রবাহ ও কনকনে হাঁড় কাঁপানো শীতে বোরো ধানের বীজতলা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। বীজতলা হলুদ হয়ে আগুনে পোড়ার মতো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থাকে বলা হচ্ছে কোল্ড ডিজিসে আক্রান্ত বীজতলা।

বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আবাদ পূর্ণতা লাভ করতে পারবে না বলে কৃষি বিভাগ ও কৃষকেরা হতাশা প্রকাশ করছেন। চারা সঙ্কটে বোরো আবাদ বিপর্যয় ঘটতে পারে। ঈশ্বরদী আবহাওয়া দফতরের সিনিয়র অবজারভার নাহার বানু এ প্রতিনিধিকে কয়েক দিন ধরে বিরাজ করছে। যার ফলে শীতের তীব্রতা বেশি।

এ দিকে ধানের দাম এবার ভালো পাওয়ায় কৃষক ধান আবাদে ঝুঁকে পড়েন বেশি। কিন্তু যেভাবে বৈরী আবহাওয়া শুরু হয়েছে- তাতে বোরো আবাদের জন্য প্রস্তুতকৃত বীজতলার দৈন্যদশার কারণে আশানুরূপ ফল পাওয়া নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।

কৃষিবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর আবহাওয়া অনেকটাই প্রথম পর্যায়ে ভালো ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে প্রচণ্ড শীতের কারণে বোরো আবাদে মার খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিভূতি ভূষণ সরকার জানান, এবার জেলার ৯টি উপজেলায় এক লাখ ৯৮ হাজার ১২৯ মে. টন বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যে ৫০ হজার ৩৭২ হেক্টরে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আবাদের মধ্যে ধরা হয়েছে হাইব্রিড জাতের এক হাজার ৬৭৮ হেক্টর, উফশি জাতের ৪৮ হাজার ৭৫ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ৬১৯ হেক্টর জমি। এসব ধান রোপণের জন্য বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৩১৩ হেক্টরে। সেখানে কৃষক বীজতলা তৈরি করেছেন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।

তিন হাজার ৩১৩ হেক্টরের স্থলে কৃষকেরা বীজতলা তৈরি করেছেন তিন হাজার ৩৩৮ হেক্টরে। কিন্তু আবহাওয়া অনেকটা প্রতিকূলে থাকায় আবাদের কিছুটা সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।

কৃষিবিভাগের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো: লোকমান হোসেন জানান, অগ্রহায়ণের ১৫ তারিখের মধ্যে যদি বীজতলা তৈরি করা হয়, তাহলে শৈতপ্রবাহে বীজতলায় কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। এ ছাড়া চারা লাগালে ধানের ফুল আসার সময় অধিকাংশে রোগবালাই কম হয় এবং বি-আর ২৯ ও বি-আর ২৮সহ হাইব্রিড জাতীয় ধান এক সাথে ঘরে তুলতে পারে।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিভূতি ভূষণ সরকার জানান, ঘন কুয়াশার মধ্যে সূর্যের তাপ পেলে বীজতলার তেমন ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। ঘন কুয়াশা থেকে বীজতলা রক্ষার জন্য তিনি কৃষককে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।

বিভিন্ন উপজেলার মাঠে তিনি বোরো ধানের বীজতলা দেখে খুবই অভিভূত ছিলেন। কিন্তু প্রচণ্ড শৈতপ্রবাহ ও কনকনে শীতের মধ্যে বীজতলা পড়ায় কৃষক বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।