নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান মেয়র আইভীর উদ্দেশ্যে বলেছেন, এখনো সময় আছে আপনার সুফিয়ানকে সিটি করপোরেশনের দুর্নীতির টাকাগুলো ফেরত দিতে বলেন। তাহলেই হয়তো জনগণ আপনাকে ক্ষমা করে দেবেন।
রোববার বিকেলে শহরের ডিআইটি এলাকায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।
শামীম ওসমান বলেন, দোকান বরাদ্দের নামে সিটি করপোরেশন কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে। সিটি করপোরেশনের জমিতে পঞ্চবটিতে পার্ক নির্মাণের নামে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। পার্ক নির্মাণের চুক্তিতে ম্যাপে দোকান ছিল না। এ পার্কে দোকান বরাদ্দের নামে প্রচুর টাকা লুটপাট করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন উন্নয়নের বদলে শুধু দোকানপাট মার্কেট নির্মাণ করেছে। সেসব মার্কেটে সংরক্ষিত কোঠায় পছন্দের ব্যক্তিদের দোকান বরাদ্দ দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এসব টাকা জনগণের টাকা। আজ নারায়ণগঞ্জবাসী জেগে উঠেছে এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে।
শামীম ওসমান বলেন, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররাও কথা বলতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে আমি সংসদে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন করেছিলাম। পরে তদন্ত হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। যদি দুদক এর বিচার না করে তাহলে জনতার আদালতে আইভীর বিচার হবে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের ৩৬ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২৬ জনই আজ মঞ্চে। তারা অভিযোগ করেছেন, গত ৪ বছরে তাদের এলাকায় কোনো কাজ হয়নি। অনেকে কাজ করতে পারেনি।
আওয়ামী লীগের এই আলোচিত নেতা বলেন, সিটি করপোরেশনের মেয়র শেষদিকে লোক দেখানো কাজ করছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর এলাকায় লোক দেখানো কাজেও দুর্নীতি হচ্ছে। টেন্ডারের আগের দিন রাতেই কাজ ভাগ হয়ে যায়।
শামীম ওসমান বলেন, ঘুরেফিরে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানই এসব কাজ পাচ্ছে। মুনিয়া, রত্মা, জাকির আর সুফিয়ানরা এসব কাজ ভাগ করে নেয়। একসময় আমার ছেলে সারোয়ার ও মাকসুদের চা আনা-নেয়া করতো সুফিয়ান। সে এখন নারায়ণগঞ্জের সর্বোচ্চ ট্যাক্স পেয়ার।
প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সেক্রেটারি খোকন সাহা, গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ-এর সহ-সভাপতি (অর্থ) জিএম ফারুক, নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার নুরুল হুদা, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সেক্রেটারি হাসান ফেরদৌস জুয়েল, বাংলাদেশ হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশন ও নগর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নাজমুল আলম সজল, নারায়ণগঞ্জ জেলা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. শাহনেওয়াজ, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি হাজী ইয়াছিন মিয়া, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ সভাপতি মঞ্জুরুল হক, নারায়ণগঞ্জ জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মাসুদুর রহমান খসরু, নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক ফোরামের সভাপতি ডা. দেবাশীষ রায়, নারায়ণগঞ্জ কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ শিরিন বেগম প্রমুখ।