ঢাকা ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জমিতে ধান রোপনে এখন ব্যাস্ত কৃষকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:২৬:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জানুয়ারী ২০১৮
  • ৩৬৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে ধান রোপন শুরু হয়েছে। সরকার সার, ডিজেল ও কীটনাশকে দাম কমালে ধানে লাভের মুখ দেখত এমনটাই দাবী কৃষকের।

মুন্সীগঞ্জ জেলার মোট ৬টি উপজেলায় কৃষকরা এখন ব্যাস্ত ধান রোপনে। তবে গতবারের তুলনায় এবার ধান চাষাবাদ হচ্ছে এ জেলায় কিছুটা কম।

কারণ হিসেবে জানা যায় ধান চাষে প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম কিছুটা বেশি, কৃষকরা লাভের চেয়ে প্রতি বছর লোকশানই গুনছেন বেশি। মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানাযায়, চলতি বছর (২০১৭-১৮ সালে) আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৪৪৬ হেক্টর জমি।

এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯২ হাজার ৯২৭ মেট্রিকটন-যা গতবার ছিল (২০১৫-১৬ সাল) আবাদ ধরা হয়েছিল ২৫ হাজার ২৭৪ হেক্টর জমি। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লক্ষ ১১ হাজার ৬৩৪ মেট্রিকটন।

এবার উফশী ধান ২৪ হাজার ৮৭ হেক্টর, স্থানীয় জাত ৩১২ হেক্টর ও হাইব্রীড ৪৭ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে উফশী ১৬ হাজার ২৫৫ হেক্টর, স্থানীয় ৩২৮ হে. ও হাইব্রীড ৫০ হে.। তুলনামূলক স্থানীয় ও হাউব্রীড কিছুটা বেশী।

তবে উফশী জাতের ধান লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে। আলু চাষে অন্যতম জেলা মুন্সীগঞ্জ। এখনো আলু উঠানো শেষ হয়নি। আলু উঠানো হলে জমিতে ধান চাষাবাদ আরো ব্যপক ভাবে শুরু হবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মনে করছেন।

কৃষকরা জানান, প্রতি বছর আমরা ধান আবাদ করি, খাই ও বিক্রি করি। সার, ডিজেলের দাম বর্তমান সরকার যদি কমায় দেন তাইলে আমাগ ভালো হইতো। আমাগ কোন বছর লাভ হয় কোন বছর লোকশান হয়।

বর্তমানে তেলের ও সারের দাম বেশি থাকার কারণে আমাদের পত্তা হচ্ছে না। সরকার যদি এর দাম একটু কমাইতো আমাগ সুবিধা হইতো। পেটের জন্য চাষাবাদ করছি। গৃহস্থালী হরতে হয় তাই করতাছি।

৭০ টাকা লিটার তেল (ডিজেল) ১ হাজার টাকা বস্তা সার, অন্যান্য খরচাপাতি মিলাইয়া আমাগো পরতা কম পরে।
শুবিধা না হইলেও নিজেরটা নিজের খাইতে হয় তাই ধানের চাষ করি।

শুনছি তেলের (ডিজেল) দাম কম কিন্তু কম তো পাইলাম না। পেটের দায়ে নিজের জমি তো ফালাইয়া থোয়া যায় না, চাষাবাদ করাই লাগে।

মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, চলতি বোরো মৌসুমে আমাদের মুন্সীগঞ্জ জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৪৪৬ হেক্টর জমি। উফশী ধান ২৪হাজার ৮৭ হেক্টর, হাইব্রিড ধান ৪৭ হেক্টর ও স্থানীয় ৩ শ’১২ হেক্টর ধরা হয়েছে।

লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আমাদের এবার আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ৬ শত ৩৩ হেক্টর জমি। উফশী জাত ১৬ হাজার ২ শত ৫৫ হেক্টর, স্থানীয় ভাবে ৩ শত ২৮ হেক্টর ও হাইব্রীড ৫০ হেক্টর।

গতবার উৎপাদন হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৪.৫টন এবার আমাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩.৮২ হেক্টর জমি উফশী জাত। আমরা আশা করছি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন এর চেয়ে বেশী হবে। বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার সারের দাম কমিয়ে এখন কৃষকদের ক্রয় ক্ষমতার নাগালে নিয়ে এসেছে।

বর্তমানে টিএসপি প্রতিকেজি ২২ টাকা, এমওপি ১৫ টাকা ও ড্যাপ ২৫ টাকা কেজি হিসেবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। বিগত ত্বত্তাবধায়ক সরকারের সময় টিএসপি ৮৫ টাকা, ড্যাপ ছিল ৯৫ টাকা ও এমওপি ৭০ টাকা কেজি। সে তলনায় সারের মূল্য এখন কৃষকের নাগালের মধ্যে আছে।

তবে কীটনাশকের দাম মার্কেটে কিছুটা বেশী। কীটনাশক বেসরকারি ভাবে বাজার জাত করছে। এটার মনিটরিং আমাদের শুধু হলো ভেজাল, নকল বা মেয়াদ উত্তীর্ণ বিক্রয় হচ্ছে কিনা সেটা আমরা দেখছি।

আমদানী কারকরা বা বিভিন্ন কোম্পানী এর মূল্য নির্ধারন করে থাকে। আমি বলব ডিজেলের দাম নাগালের মধ্যেই আছে।

সেঁচের বিদ্যুৎ বিলে বর্তমান সরকার ২০% রিবেট দিয়ে থাকে। কৃষকরা বিদ্যুতের মোট বিলের ২০ শতাংশ মাফ পাচ্ছেন। কৃষিবান্ধব সরকার আমাদের উৎপাদনের যাবতিয় উপকরণ যতটা সম্ভব সহজলভ্য করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জমিতে ধান রোপনে এখন ব্যাস্ত কৃষকরা

আপডেট টাইম : ০৭:২৬:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জানুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে ধান রোপন শুরু হয়েছে। সরকার সার, ডিজেল ও কীটনাশকে দাম কমালে ধানে লাভের মুখ দেখত এমনটাই দাবী কৃষকের।

মুন্সীগঞ্জ জেলার মোট ৬টি উপজেলায় কৃষকরা এখন ব্যাস্ত ধান রোপনে। তবে গতবারের তুলনায় এবার ধান চাষাবাদ হচ্ছে এ জেলায় কিছুটা কম।

কারণ হিসেবে জানা যায় ধান চাষে প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম কিছুটা বেশি, কৃষকরা লাভের চেয়ে প্রতি বছর লোকশানই গুনছেন বেশি। মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানাযায়, চলতি বছর (২০১৭-১৮ সালে) আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৪৪৬ হেক্টর জমি।

এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯২ হাজার ৯২৭ মেট্রিকটন-যা গতবার ছিল (২০১৫-১৬ সাল) আবাদ ধরা হয়েছিল ২৫ হাজার ২৭৪ হেক্টর জমি। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লক্ষ ১১ হাজার ৬৩৪ মেট্রিকটন।

এবার উফশী ধান ২৪ হাজার ৮৭ হেক্টর, স্থানীয় জাত ৩১২ হেক্টর ও হাইব্রীড ৪৭ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে উফশী ১৬ হাজার ২৫৫ হেক্টর, স্থানীয় ৩২৮ হে. ও হাইব্রীড ৫০ হে.। তুলনামূলক স্থানীয় ও হাউব্রীড কিছুটা বেশী।

তবে উফশী জাতের ধান লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে। আলু চাষে অন্যতম জেলা মুন্সীগঞ্জ। এখনো আলু উঠানো শেষ হয়নি। আলু উঠানো হলে জমিতে ধান চাষাবাদ আরো ব্যপক ভাবে শুরু হবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মনে করছেন।

কৃষকরা জানান, প্রতি বছর আমরা ধান আবাদ করি, খাই ও বিক্রি করি। সার, ডিজেলের দাম বর্তমান সরকার যদি কমায় দেন তাইলে আমাগ ভালো হইতো। আমাগ কোন বছর লাভ হয় কোন বছর লোকশান হয়।

বর্তমানে তেলের ও সারের দাম বেশি থাকার কারণে আমাদের পত্তা হচ্ছে না। সরকার যদি এর দাম একটু কমাইতো আমাগ সুবিধা হইতো। পেটের জন্য চাষাবাদ করছি। গৃহস্থালী হরতে হয় তাই করতাছি।

৭০ টাকা লিটার তেল (ডিজেল) ১ হাজার টাকা বস্তা সার, অন্যান্য খরচাপাতি মিলাইয়া আমাগো পরতা কম পরে।
শুবিধা না হইলেও নিজেরটা নিজের খাইতে হয় তাই ধানের চাষ করি।

শুনছি তেলের (ডিজেল) দাম কম কিন্তু কম তো পাইলাম না। পেটের দায়ে নিজের জমি তো ফালাইয়া থোয়া যায় না, চাষাবাদ করাই লাগে।

মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, চলতি বোরো মৌসুমে আমাদের মুন্সীগঞ্জ জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৪৪৬ হেক্টর জমি। উফশী ধান ২৪হাজার ৮৭ হেক্টর, হাইব্রিড ধান ৪৭ হেক্টর ও স্থানীয় ৩ শ’১২ হেক্টর ধরা হয়েছে।

লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আমাদের এবার আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ৬ শত ৩৩ হেক্টর জমি। উফশী জাত ১৬ হাজার ২ শত ৫৫ হেক্টর, স্থানীয় ভাবে ৩ শত ২৮ হেক্টর ও হাইব্রীড ৫০ হেক্টর।

গতবার উৎপাদন হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৪.৫টন এবার আমাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩.৮২ হেক্টর জমি উফশী জাত। আমরা আশা করছি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন এর চেয়ে বেশী হবে। বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার সারের দাম কমিয়ে এখন কৃষকদের ক্রয় ক্ষমতার নাগালে নিয়ে এসেছে।

বর্তমানে টিএসপি প্রতিকেজি ২২ টাকা, এমওপি ১৫ টাকা ও ড্যাপ ২৫ টাকা কেজি হিসেবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। বিগত ত্বত্তাবধায়ক সরকারের সময় টিএসপি ৮৫ টাকা, ড্যাপ ছিল ৯৫ টাকা ও এমওপি ৭০ টাকা কেজি। সে তলনায় সারের মূল্য এখন কৃষকের নাগালের মধ্যে আছে।

তবে কীটনাশকের দাম মার্কেটে কিছুটা বেশী। কীটনাশক বেসরকারি ভাবে বাজার জাত করছে। এটার মনিটরিং আমাদের শুধু হলো ভেজাল, নকল বা মেয়াদ উত্তীর্ণ বিক্রয় হচ্ছে কিনা সেটা আমরা দেখছি।

আমদানী কারকরা বা বিভিন্ন কোম্পানী এর মূল্য নির্ধারন করে থাকে। আমি বলব ডিজেলের দাম নাগালের মধ্যেই আছে।

সেঁচের বিদ্যুৎ বিলে বর্তমান সরকার ২০% রিবেট দিয়ে থাকে। কৃষকরা বিদ্যুতের মোট বিলের ২০ শতাংশ মাফ পাচ্ছেন। কৃষিবান্ধব সরকার আমাদের উৎপাদনের যাবতিয় উপকরণ যতটা সম্ভব সহজলভ্য করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।